ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধানদের নিয়োগ ও বেতন সম্পর্কিত বিল উত্থাপন

প্রকাশিত: ০২:৪৯, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধানদের নিয়োগ ও বেতন সম্পর্কিত বিল উত্থাপন

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধানদের (সেনা নৌ ও বিমান) নিয়োগ এবং বেতন ও ভাতাদি সম্পর্কিত একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন প্রণয়নে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে একটি বিল উত্থাপিত হয়েছে। উত্থাপিত বিলে অবসরে যাওয়া প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান সাংবিধানিক পদে নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। বিধানটিতে বলা হয়েছে, ’আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইন দ্বারা বাধা আরোপিত না হইয়া থাকিলে অবসরপ্রাপ্ত কোন বাহিনী প্রধান সাংবিধানিক কোন পদে নিয়োগ লাভের জন্য অযোগ্য বলে গণ্য হবেন না।’ মঙ্গলবার স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে ’প্রতিরক্ষা-বাহিনীসমূহের প্রধানদের (নিয়োগ, বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধাদি) আইন-২০১৮’ নামে বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন সংসদকার্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিলটি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে বলা হয়েছে, বাহিনী প্রধানের নিয়োগের মেয়াদ হবে একসঙ্গে বা বর্ধিতকরনসহ নিয়োগ প্রদানের তারিখ হতে অনুর্দ্ধ চার বছর। এছাড়া বিলে প্রতি মাসে বাহিনী প্রধানের বেতন ৮৬ হাজার টাকা হবে বলে উল্ল্যেখ করা হয়েছে। বাহিনী প্রধানদের পুন:নিয়োগ প্রসঙ্গে বিলে বলা হয়েছে- বাহিনী প্রধান অবসরপ্রাপ্ত হওয়া বা স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহন করার পর প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন সামরিক বা বেসামরিক পদে পুন:নিয়োগ লাভে অযোগ্য হবেন। এ বিষয়ে শর্ত উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি জনস্বার্থে আবশ্যক মনে করলে অবসরপ্রাপ্ত কোন বাহিনী প্রধানকে চুক্তি ভিত্তিতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন বেসামরিক পদে নিয়োগ দান করতে পারবেন। বিলের উদ্দেশ্য ও কারন সম্পর্কে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৬২ অনুচ্ছেদ এর বিধানমতে, সংসদ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধানদের নিয়োগদান ও তাঁদের বেতন ও ভাতাদি নির্ধারণ করার বিধান থাকলেও দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও প্রতিরক্ষা বাহিনী সমূহের প্রধানদের নিয়োগ ও বেতন-ভাতাদি সম্পর্কিত কোন আইন প্রণয়ন করা হয়নি। এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধানদের নিয়োগ ও বেতন-ভাতাদিও বিষয়টি সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে স্বতন্ত্রভাবে ব্যবস্থিত না হয়ে বর্তমানে যৌথ বাহিনী নির্দেশনাবলী নামীয় ইন্সট্রুমেন্ট দ্বারা অন্যান্য সকল সামরিক কর্মচারির সঙ্গে একীভূতভাবেই ব্যবস্থিত হচ্ছে। এ ধরনের যৌথ বাহিনী নির্দেশনাবলীর পাঠোদ্ধার অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ কর্তৃক আইন প্রণয়ন করে বাহিনী প্রধানদের নিয়োগ এবং বেতন ও ভাতাদি সম্পর্কিত একটি স্বয়ংসম্পুর্ন আইন করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বাহিনী প্রধানগন চাকুরিকালীন যে সকল আর্থিক সুবিধাদি প্রাপ্য হন, কোন রকম পরিবর্তন ছাড়া তাদের হুবহু অন্তর্ভুক্ত করে আইনের একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তুত করা হয়। এতে বলা হয়েছে, খসড়াটির বিষয়ে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, অর্থ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ এবং কন্ট্রোলার জেনারেল অব ডিফেন্স ফাইন্যান্স এর মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর আইন, বিধি, বিধান, নির্দেশনাবলি ও আদেশসমূহ সংশোধন/রহিতকরন নতুনভাবে প্রনয়নপুর্বক যুগোপযোগী ও হালনাগাদ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদানের জন্য গঠিত আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটির একাধিক সভায় খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়। প্রস্তাবিত খসড়াটি আইনে রুপান্তরিত হলে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধান পদে (নিয়োগদান ও মেয়াদ) আদেশ, ২০১৬ সম্পুর্ন রহিত হবে এবং যৌথ বাহিনী নির্দেশনাবলী ১/২০১৬ আংশিক অকার্যকর হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, বিলের খসড়া, ভেটিং সাপেক্ষে, মন্ত্রীসভা কর্তৃক চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের পর লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং গ্রহণ করা হয়েছে। বিলটিতে সরকারি অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত থাকায় সংবিধানের ৮২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ি রাষ্ট্রপতির সুপারিশ গ্রহণ করা হয়।
×