ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে থ্যালাসেমিয়ার জীন বহনকারী সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ

প্রকাশিত: ০২:০৩, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

দেশে থ্যালাসেমিয়ার জীন বহনকারী সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে আজ বুধবার দেশব্যাপী সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় জাতীয় জাদুঘরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহম্মদ নাসিম এই দিনব্যাপী কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। ঝুঁকিপূর্ণ দম্পতির বিনামূল্যে গর্ভস্থ ভ্রুণ পরীক্ষা করা এবং থ্যালাসেমিয়া রোগীর জাতীয় রেজিস্ট্রি কার্যক্রম গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ২০২৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া থাকবে না বলে কার্যক্রমের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যি অধিফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেইন উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, থ্যালাসেমিয়ার জীন বহন করছে, দেশে এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ । বংশগত এই রোগ নিয়ে প্রতি বছর দেশে সাত হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে। থ্যালাসেমিয়ার বাহকদের মধ্যে বিয়ে হলে এ রোগের বিস্তার ঘটে। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তশূন্যতা দেখা দেবে, পেটের প্লীহা বড় হয়ে যাবে, তাকে ফ্যাকাশে দেখাবে। দেশে রক্তশূন্যতাজনিত রোগ থ্যালাসিমিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। এ রোগের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। কোনো পরিবারে একজন থ্যালাসিমিয়ায় আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা করাতে সে পরিবারটি অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে যায়। তাই বিয়ের আগে ছেলেমেয়ের রক্ত পরীক্ষা, আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে বিয়ে না করা এবং ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমেই এর প্রতিরোধ করা সম্ভব। থ্যালাসেমিয়ার বাহকদের মধ্যে বিয়ে হলে এ রোগের বিস্তার ঘটে। তাছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধি, সচেনততার অভাব, অপ্রতুল চিকিৎসাব্যবস্থা এবং এ রোগ প্রতিরোধে বাস্তবমুখী কার্যক্রমের অভাবে থ্যালাসেমিয়া দেশের স্বাস্থ্যসেবার হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। থ্যালাসেমিয়া কোনো সংক্রামক রোগ নয়। আক্রান্ত শিশুদের প্রতি দু’ থেকে চার সপ্তাহ পর পর নতুন রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকতে হয়। সঠিক ও নিয়মিত চিকিৎসা পেলে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন। থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগী-দু’টি এক জিনিস নয়। থ্যালাসেমিয়ার বাহকেরা এ রোগে আক্রান্ত নন। থ্যালাসেমিয়ার দু’ জন বাহকের মধ্যে বিয়ে হলে কিংবা তাদের মধ্যে মিলনের ফলে জন্ম নেয়া সন্তানের থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাববা থাকে। থ্যালাসেমিয়া রোগীর বাহ্যিক কোনো লক্ষণ নেই। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তশূন্যতা দেখা দেবে, পেটের প্লীহা বড় হয়ে যাবে, তাকে ফ্যাকাশে দেখাবে। এই রোগের চিকিৎসা হচ্ছে যতদিন বাঁচবেন, ততদিন নিয়মিত নতুন রক্ত গ্রহণ করতে হবে কিংবা বোনম্যারো প্রতিস্থাপন করতে হবে। তাই সবারই উচিত, রক্তে থ্যালাসেমিয়া আছে কি না, তা পরীক্ষা করা। রোগ প্রতিরোধে থ্যালাসেমিয়ার বাহকদের মধ্যে বিয়ে বন্ধ করা দরকার। থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে তরুণ সমাজকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বিবাহপূর্ব স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দম্পতি নির্ণয় করে বিয়ে করা থেকে বিরত থাকা উচিত। যেহেতু এই রোগের স্থায়ী প্রতিষেধক নেই তাই একটি রূপরেখা প্রণয়ন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জরিপ করে জানা গেছে থ্যালাসেমিয়া বাংলাদেশে একটি বড় স্বাস্থ্য সমস্যা। দেশে এক কোটি ১০ লাখ মানুষ অজ্ঞাতসারে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। প্রতিবছর ৭ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নেয়।
×