ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চলতি দশম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশন রবিবার শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ অধিবেশনে উদ্বোধনী ভাষণ দেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পূর্ণ বিবরণ নিচে দেয়া হলো :

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের পূর্ণ বিবরণ

প্রকাশিত: ০৭:২১, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের পূর্ণ বিবরণ

বিস্মিল্লাহির-রহ্মানির রহিম। আসসালামু আলাইকুম। জনাব স্পিকার, দশম জাতীয় সংসদের ২০১৮ সালের প্রথম অধিবেশনে ভাষণদানের জন্য আপনাদের মধ্যে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে মাননীয় সংসদ-সদস্যবৃন্দ ও প্রিয় দেশবাসীকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি। ২। আমি ভাষণের সংক্ষিপ্ত ভাষ্য এ মহান সংসদে পাঠ করছি। জনাব স্পিকার, টেবিলে উপস্থাপিত আমার মূল ভাষণটি পঠিত বলে গণ্য করে কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি। ৩। শুরুতেই আমি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অমর শহিদকে, যাঁদের অসীম সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি একটি সার্বভৌম দেশ ও স্বাধীন জাতিসত্তা, পবিত্র সংবিধান ও লাল-সবুজ পতাকা। আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি চার জাতীয় নেতা - সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকেÑযাঁরা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ৪। আমি আরও স্মরণ করছি তাঁদেরকে, যাঁরা আমাদের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, ভাষা, সংস্কৃতি ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার লড়াইয়ে আত্মত্যাগ করেছেন। শ্রদ্ধাভরে আরও স্মরণ করছি বাঙালির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার তিন মহান পুরুষ - শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে। ৫। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সংঘটিত বর্বর হত্যাকাণ্ড ছিল বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সেদিন শাহাদাতবরণ করেছিলেন তাঁর মহীয়সী সহধর্মিণী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও পারভীন জামাল রোজী, ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি ও মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি এবং সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জামিল উদ্দিন আহমেদ। আমি তাঁদের সবাইকে অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মরণ করছি এবং পরম করুণাময় আল্লাহ্’র কাছে তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ৬। আমি গভীর দুঃখের সঙ্গে স্মরণ করছি ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের জনসভায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে পরিচালিত গ্রেনেড হামলায় শাহাদাতবরণকারী নারীনেত্রী আইভী রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ জন নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীকে, একই বছর আততায়ীর গুলিতে শহিদ জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি আহসানউল্লাহ মাস্টার; এবং ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি তারিখে গ্রেনেড হামলায় শহিদ প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে। আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহ্’র কাছে তাঁদের সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ৭। গত বছর জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সকল বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আমরা হারিয়েছি, তাঁদেরকেও আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। এঁদের মধ্যে রয়েছেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য প্রাণী সম্পদমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোহাম্মদ ছায়েদুল হক; দশম জাতীয় সংসদের সংসদ-সদস্য এবং বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জনাব সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত; ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র জনাব আনিসুল হক; চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী; দশম জাতীয় সংসদের সংসদ-সদস্য জনাব মোঃ মন্জুরুল ইসলাম লিটন; এবং জনাব গোলাম মোস্তফা আহমেদসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী, তৎকালীন গণপরিষদ সদস্য, সাবেক সংসদ-সদস্য, বিচারপতি, ভাষাসৈনিক, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, সচিব, রাষ্ট্রদূত, শিল্পী, অভিনেতা, ক্রীড়াবিদ, শিল্পপতি, সমাজসেবক প্রমুখ। আমি তাঁদের সকলের আত্মার শান্তি কামনা করছি। জনাব স্পিকার, ৮। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান সমুন্নত এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখে ২০১৪ সালে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দশম জাতীয় সংসদ গঠিত হয় এবং বর্তমান সরকারের ওপর দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়। গত মহাজোট সরকারের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দিনবদলের সনদ-‘রূপকল্প-২০২১’ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সরকারের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে নিম্নমধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এখন জাতির দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে ২০৪১ সালের দিকে-বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়ার মানসে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সরকার উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে জাতির আকাক্সক্ষা পূরণে সক্ষম হবে। ৯। দেশে আইনের শাসন সুসংহত ও সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী পলাতক খুনিদের আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চলমান আছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলাটি বিচারিক আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর্যায়ে আছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করছে এবং বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে। জঙ্গিবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে জুলাই ২০১৬ হতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভাগ ও জেলাপর্যায়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। ফলে, জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং জনগণ জঙ্গিবাদবিরোধী চেতনায় উজ্জীবিত হয়েছে। ১০। বর্তমান সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার দারিদ্র্যনিরসন এবং বৈষম্য দূর করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রথমবারের মত দীর্ঘমেয়াদি রূপকল্প হিসাবে ‘বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা’ এবং মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা হিসাবে দুটি ‘পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করে। প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় বিধৃত সামাজিক ও অর্থনৈতিক এজেন্ডা অর্জনের লক্ষ্যে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৫-২০ মেয়াদে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ, দারিদ্র্য হ্রাস ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়, যা বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ যা ২০২০ সাল নাগাদ ৮ শতাংশে পৌঁছুবে। এমডিজি’র অনর্জিত লক্ষ্যসমূহ চিহ্নিতকরণসহ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করে তা অর্জনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ সকল পরিকল্পনার মৌলিক উদ্দেশ্য হল - উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্য-আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে উন্নীতকরণ। জনাব স্পিকার, ১১। বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক দুই-আট শতাংশ। এ সময়ে মাথাপিছু জাতীয় আয় পূর্ববর্তী অর্থবছর হতে ১৪৫ মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়ে ১,৬১০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। একই সময় রপ্তানি আয় ৩৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি আমদানি প্রবৃদ্ধিও ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে এবং অর্থ-বছর শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক এক-এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার। রাজস্ব ও মুদ্রাখাতে অনুসৃত নীতির ফলে ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখা সম্ভব হয়েছে। সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০১৭-১৮ অর্থ-বছরে বাজেটের আকার ৪ লক্ষ ২৬৬ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ১২। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রশাসনিক ও ডিজিটাল সংস্কারসাধন এবং কর-নেট সম্প্রসারণ ও করদাতা নিবন্ধনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। করদাতাবান্ধব পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে পরপর তিনটি অর্থ-বছর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে, যার প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৯ শতাংশ। করদাতাকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ইনকাম ট্যাক্স আইডি কার্ড প্রবর্তন এবং পরিবারের সকল সদস্যকে কর প্রদানে উৎসাহিত করার জন্য ‘কর বাহাদুর’ খেতাব প্রদান করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯১৬টি, যা পূর্ববর্তী অর্থ-বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ শতাংশের বেশি। আশা করা যাচ্ছে, জুন ২০১৮ পর্যন্ত আয়কর রিটার্নের সংখ্যা ২০ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। ১৩। দেশের ব্যাংক খাত বিশেষত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিতে অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। পুঁজিবাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে ১০ বছর মেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। ১৪। ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে বৈদেশিক সহায়তার অর্জিত প্রতিশ্রুতি এবং অর্থ ছাড় যথাক্রমে ১৭ দশমিক নয়-ছয় এবং ৩ দশমিক ছয়-সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ইতিপূর্বের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে এবং স্বাধীনতার পরবর্তীকালে এটিই সর্বোচ্চ। গত ৫ অর্থ-বছর মেয়াদে মোট ৪১ দশমিক নয়-ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক সহায়তাচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সময়ে মোট ১৬ দশমিক এক-আট বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ছাড় হয়েছে। জনাব স্পিকার, ১৫। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের আওতাধীন ৮টি ইপিজেড-এ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত ৪৬৮টি শিল্প চালুর মাধ্যমে পুঞ্জীভূত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক আট-দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বিনিয়োগ হয়েছে ৪ হাজার ৫০১ দশমিক শূন্য-নয় মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ৪ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬৮১ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার হেক্টর জমির ওপর ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এতে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্যবিমোচন এবং আরও ৪০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য ও সেবা উৎপাদন এবং রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। জি-টু-জি পদ্ধতিতে বর্তমানে চীন, জাপান ও ভারতের বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত বিনিয়োগ সেবা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ১৬। দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ২০১৭-১৮ অর্থ-বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮৪ দশমিক আট-তিন কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন অগ্রগতির তথ্য অনলাইনে সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিতকল্পে ব-ঞবহফবৎরহম ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ১৭। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীকে আরও যুগোপযোগী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ‘জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল’ প্রণয়ন করা হয়েছে। হাউজহোল্ড ইনকাম এন্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে ২০১০-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং অতি দারিদ্র্যের হার ছিল ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০১৬-সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ হার যথাক্রমে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ ও ১২ দশমিক ৯ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। উল্লেখ্য ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অতি দারিদ্র্যের হার ছিল ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ। জনাব স্পিকার, ১৮। সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং দেশীয় শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ঢাকা মহানগরী ও বুড়িগঙ্গা নদীর পরিবেশ দূষণরোধে রাজধানীর হাজরীবাগস্থ ট্যানারিসমূহকে সাভারে স্থানান্তরের লক্ষ্যে ২০০ একর জমিতে ১৫৫টি শিল্প ইউনিটের অনুকূলে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১০০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করেছে। ১৯। রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা আনয়ন ও প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করার উদ্দেশ্যে যুগোপযোগী ‘রপ্তানি নীতি ২০১৫-১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। চলতি অর্থ-বছরে পণ্য ও সেবা খাতে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে পণ্য বহুমুখীকরণ কার্যক্রমের আওতায় সম্ভাবনাময় জাহাজ শিল্প, ফার্নিচার শিল্প, ঔষধ, আইসিটি ইত্যাদি পণ্য উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের সার্বিক প্রচেষ্টা ও বেসরকারি খাতের উদ্যোগে তৈরি পোশাক রপ্তানি আয় ২০১১-১২ অর্থ-বছরে ১৯ দশমিক শূন্য-আট বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে ২৮ দশমিক এক-পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আশা করা যায় ২০২১ সালে এ খাতে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। ২০। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বস্ত্র ও পাট খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ দশমিক তিন-আট শতাংশ বস্ত্র খাত থেকে অর্জিত হয়। ‘বস্ত্র নীতি-২০১৭’ প্রণয়ন করা হয়েছে। ‘বস্ত্র আইন, ২০১৭’ প্রণয়নের কাজ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বস্ত্র পরিদপ্তরকে বস্ত্র অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। সরকার ৬ মার্চ-কে ‘জাতীয় পাট দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছে। ‘পাট আইন, ২০১৭’ প্রণয়ন করা হয়েছে। পাট থেকে ভিসকস, জৈব পানীয়, সোনালি ব্যাগ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জনাব স্পিকার, ২১। বিশ্বের ১৬৫টি দেশে কর্মরত বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীগণের কষ্টার্জিত প্রেরিত অর্থ দারিদ্র্যবিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সরকারের দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও শ্রম-কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে বৈদেশিক কর্মসংস্থান হার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭ সালে বিদেশে প্রেরিত কর্মীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ৮ হাজার ১৫০ জন ছাড়িয়ে গেছে। জনাব স্পিকার, ২২। সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির ফলে খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে। দেশে ২০০৮-০৯ অর্থ-বছরে চাল, গম ও ভুট্টা ইত্যাদি দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল ৩ কোটি ২৮ লক্ষ ৯৫ হাজার মেট্রিকটন এবং ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩ কোটি ৮৬ লক্ষ ৯৩ হাজার মেট্রিকটনে উন্নীত হয়েছে। চলতি অর্থ-বছরে কৃষিখাতে ভর্তুকি বাবদ ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত অর্থ-বছরের আকস্মিক বন্যা, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওর এলাকার ৬টি জেলার ৬ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জন্য ১১৭ কোটি টাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৮টি জেলার কৃষকদের জন্য এ অর্থ-বছরে ১৯ কোটি ৯৯ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকার আরও একটি পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষির আধুনিকায়নের জন্য কৃষকপর্যায়ে ভর্তুকিমূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে রাসায়নিক সারের চাহিদার বিপরীতে মজুদ পর্যাপ্ত রয়েছে এবং এ সরকারের আমলে সারের কোন সংকট হয়নি। ২৩। সরকারের মৎস্যবান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা এবং চাহিদাভিত্তিক কারিগরি পরিষেবা প্রদানের ফলে ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে দেশে মৎস্য উৎপাদন ৪১ দশমিক তিন-চার লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। ফলে মাছের মাথাপিছু স্থিরকৃত দৈনিক চাহিদা ৬০ গ্রামের ভিত্তিতে মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। জাটকা এবং মা ইলিশ নিধন প্রতিরোধ কার্যক্রমের ফলে ইলিশের বার্ষিক উৎপাদন বর্তমানে প্রায় ৫ লক্ষ মেট্রিকটনে উন্নীত হয়েছে। জাতীয় মাছ ইলিশের ‘ভৌগোলিক নিবন্ধন সনদ’ পাওয়া গেছে। ট্রান্স-বাউন্ডারি প্রাণিরোগ নিয়ন্ত্রণে এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেশের স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরসমূহে ২৪টি কোয়ারেন্টাইন স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। ২৪। সরকার প্রতিবছরের ন্যায় ২০১৭ সালে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস হতে খাদ্যশস্য সংগ্রহের মাধ্যমে সরকারি গুদামসমূহে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ গড়ে তুলছে। গত বছর ফসলহানির কারণে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের পাশাপাশি বৈদেশিক উৎস হতে ১৫ লক্ষ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য সংগ্রহের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকার স্বল্প ও সীমিত আয়ের জনগোষ্ঠীকে খাদ্যনিরাপত্তা প্রদানের জন্য ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি’র আওতায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে মাসিক ৩০ কেজি করে বছরে ৫ মাস চাল বিতরণ করছে। চলতি অর্থ-বছরে খাদ্যভিত্তিক সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য প্রায় ৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে খোলাবাজারে চাল বিক্রির উদ্দেশ্যে ৬১২ কোটি টাকা এবং ১০ টাকা মূল্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির জন্য ৭২৩ কোটি টাকার খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়েছে। জনাব স্পিকার, ২৫। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসাবে ১৮ অনুচ্ছেদে ‘ক’ দফা সংযোজনপূর্বক প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত ২ হাজার ৮১৩ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সর্বমোট ৫২৯টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ২৬। বর্তমান সরকার বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। বন্যাপ্রবণ ও নদীভাঙ্গন এলাকায় ১৫৬টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। উপকূলীয় ও ঘূর্ণিঝড়প্রবণ ১৬টি জেলায় ২২০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ২৭। পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনাসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং হাওর-বাওরের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহে দেশের প্রধান প্রধান নদীসমূহে ড্রেজিং ও নদী-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুনঃখননসহ ৮৯৬ কিলোমিটার নদীর ড্রেজিং সমাপ্ত হয়েছে এবং প্রায় ১১২ লক্ষ ঘনমিটার ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ২৮। দক্ষ, আধুনিক ও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ভূমি-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং ভূমি-সংক্রান্ত জনবান্ধবসেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকার ভূমি রেকর্ড ও জরিপ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড্ করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন, ২০১৭’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে জনগণ ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ বাজার মূল্যের তিনগুণ ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে, যা পূর্বে ছিল মাত্র দেড়গুণ। জনাব স্পিকার, ২৯। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প প্রথম পর্যায়ের আওতায় ২৫৪টি গুচ্ছগ্রাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ১০ হাজার ৭০৩টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত ‘সবার জন্য বাসস্থান’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার পরিবার পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে ৪ হাজার ৫৫০টি পরিবারের পুনর্বাসন সম্পন্ন হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে জুন’ ২০১৯ সালের মধ্যে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার পরিবারকে গৃহ নির্মাণসহ পুনর্বাসন করার কার্যক্রম চলমান আছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার পরিবার পুনর্বাসন করা হয়েছে। এ ছাড়া, ২০ হাজার ৭৭৫টি গৃহহীন পরিবারকে গৃহনির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ৩০। আবাসন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সরকার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ঢাকায় সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৮ শতাংশ আবাসন সুবিধাকে ২০২০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেছেন। উক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিগণের জন্য ৭৬টি ফ্ল্যাট এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ৪৪৮টি ফ্ল্যাট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের পর হস্তান্তর করা হয়েছে। স্বল্প ও মধ্যম আয়ের লোকদের আবাসনের জন্য রাজউকের নিজস্ব অর্থায়নে উত্তরা ৩য় পর্বে ৬ হাজার ৬৩৬টি ফ্লাটের নির্মাণকাজ সমাপ্তির পথে। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইতোমধ্যে ১ হাজার ২৫১টি প্লট এবং ৫৫৯টি ফ্ল্যাট নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে জনাব স্পিকার, ৩১। দেশের বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধী, দুস্থ, অসহায় এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্যবিমোচন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে ২০১৭-১৮ অর্থ-বছরে বয়স্কভাতা, বিধবা ও স্বামী-নিগৃহীতা মহিলাভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীভাতা এবং প্রতিবন্ধী-শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তির জন্য মোট ৩ হাজার ৬০৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। সারাদেশে ১১টি স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজম চালু করা হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অটিজমসহ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে ৩২টি ভ্রাম্যমাণ থেরাপি ভ্যান-এর মাধ্যমে বিনামূল্যে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ৩২। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যা কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারী ও শিশু অধিকার সংরক্ষণ এবং তাদের উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে নানামুখী পদক্ষেপ ও কার্যক্রম গ্রহণ করেন। শিশুর নিরাপদ বিকাশের লক্ষ্যে শিশু দিবাযতœ কেন্দ্র আইন প্রণয়নসহ সকল জেলায় ডে-কেয়ার সেন্টার এবং কর্মজীবী নারীদের জন্য মহিলা হোস্টেল স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭’-এর আলোকে বাল্য বিবাহ বন্ধে সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। তৃণমূলের নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য বিপণনে সহায়তার লক্ষ্যে ঢাকায় জয়িতা টাওয়ার নির্মাণ করা হচ্ছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টিসহ নির্যাতিত নারীদের সহায়তার জন্য ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সিলিং সেন্টার, ৬৯টি ঙহব-ঝঃড়ঢ় ঈৎরংরং ঈবহঃবৎ, ডিএনএ ল্যাব স্থাপন এবং জরুরী সেবা গ্রহণের জন্য সার্বক্ষণিক টোল ফ্রি হেল্প লাইন নম্বর ১০৯ চালু করা হয়েছে। সম্প্রতি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের জন্য অস্থায়ীভাবে একটি ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টারসহ ১০টি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ৫৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্প ও ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ওএঅ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ৩৩। শতভাগ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস্ শিল্প সেক্টরে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করা হয়েছে। এ তহবিল থেকে মোট ৯৪৬ জনকে প্রায় ১৮ দশমিক পাঁচ-নয় কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত, নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি এবং শিশুর যতেœর জন্য বিভিন্ন কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ২২৪টি ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। জনাব স্পিকার, ৩৪। দেশের বিশাল যুবসমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় যুবনীতি ২০১৭, ‘যুবকল্যাণ তহবিল আইন, ২০১৬’ যুব সংগঠন (নিবন্ধন ও পরিচালনা) বিধিমালা, ২০১৭ প্রণয়ন করা হয়েছে। ‘শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৭’ মন্ত্রিসভা কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির মাধ্যমে ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত মোট ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৮৯৬ জনকে প্রশিক্ষণ এবং ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৫৬১ জনের অস্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ কর্মসূচি দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হবে। ৩৫। ২০১৭ সালে বিভিন্ন পর্যায়ে ক্রীড়াবিদগণ ৫৯টি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ৪২টি স্বর্ণ, ৩২টি রৌপ্য এবং ২৯টি ব্রোঞ্জপদক অর্জন করেছে। অস্ট্রিয়ায় অনুষ্ঠিত স্পেশাল অলিম্পিকস্ উইন্টার ওয়ার্ল্ড গেমসের ইউনিফায়েড ফ্লোর হকিতে বাংলাদেশ মহিলা হকি দল চ্যাম্পিয়ন ও পুরুষ হকি দল রানার্স আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় মহিলা ফুটবল দল ১৭-২৪ ডিসেম্বর মেয়াদে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। জনাব স্পিকার, ৩৬। দেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে স্ব-স্ব ধর্মচর্চা করতে পারে, সে ব্যাপারে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইস্তেহার অনুযায়ী ৯ হাজার ৬২ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা ব্যয় সংবলিত ‘প্রতি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় ২০১৬ সাল হতে ই-হজ ব্যবস্থাপনা চালু হয়েছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১ লক্ষ ২৭ হাজার ২২৯ জন হজযাত্রী হজ পালন করেছেন। জনাব স্পিকার, ৩৭। স্থানীয় সরকারের প্রতিটি স্তরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখা হয়েছে। কুমিল্লা জেলায় লালমাই নামে নতুন উপজেলা, হবিগঞ্জ জেলায় শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা এবং চট্টগ্রাম জেলায় দোহাজারী পৌরসভা গঠন করা হয়েছে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এলজিইডি’র মাধ্যমে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় ৪৮ হাজার ৭৪৭ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন; ২ লক্ষ ৯১ হাজার ৭৩৫ মিটার ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, ১ হাজার ৪২৪টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, ৬৮৫টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ১১২টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণ; নদীভাঙ্গন ও নবসৃষ্ট এলাকায় ১৫টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ এবং ১ হাজার ৮৫৬টি গ্রোথ সেন্টার ও হাট-বাজার উন্নয়ন করা হয়েছে। নগর উন্নয়নের জন্য বহুসংখ্যক প্রকল্পের পাশাপাশি ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নতুন অন্তর্ভুক্ত ১৬টি ইউনিয়নের উন্নয়নের জন্য আলাদা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক বিবেচনা প্রসূত নির্দেশনা বাস্তবায়নে মিয়ানমার থেকে আগত নির্যাতিত রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীদের ক্যাম্পসমূহে খাবার পানি সরবরাহ, স্যানিটারি ল্যাট্রিন স্থাপন, রাস্তা নির্মাণসহ নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ৩৮। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্যদূরীকরণ ও তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য ক্ষুদ্র ঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কে গুরুত্ব প্রদান করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নপ্রসূত ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সারাদেশে এ প্রকল্পের আওতায় ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৮৬টি বাড়িতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পারিবারিক খামার স্থাপন করা হয়েছে। দুধের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণসহ গ্রামীণ অর্থনীতি বিকাশের লক্ষ্যে মিল্ক ভিটার নিজস্ব অর্থায়নে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দুগ্ধ শীতলীকরণকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ৩৯। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থ-বছরে ৯১৫ দশমিক আট-তিন কোটি টাকায় ২ হাজার ২০১টি ছোট ছোট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকার বেইলি রোডে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এ ছাড়া ইনক্লুসিভ সমাজ নির্মাণ-এর লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি বিশেষ কর্মসূচির আওতায় সমতলে থাকা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ২৭০টি উপজেলায় ৪০০টি আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩০ কোটি টাকার শিক্ষা বৃত্তি বিতরণ করা হয়েছে। জনাব স্পিকার, ৪০। জনস্বার্থে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে পুনর্গঠন করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ গঠন করা হয়েছে। মেডিক্যাল শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে মোট ৩১টি সরকারি, ৬৯টি বেসরকারি, ১টি আর্ম ফোর্সেস এবং সেনাবহিনী কর্তৃক পরিচালিত ৫টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এ ছাড়া ১টি সরকারি ডেন্টাল কলেজ এবং ৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ও ৮টি ডেন্টাল ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। দক্ষ নার্স তৈরির লক্ষ্যে ১৯টি সরকারি নার্সিং কলেজ, ৪৬টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ, ৪৩টি সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট এবং ১৪০টি বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট চালু রয়েছে। ১৪টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং ১৮৯টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ‘স্বাস্থ্য কর্নার’ স্থাপন করা হয়েছে। মা ও শিশু মৃত্যুহ্রাসে যুগান্তকারী সফলতা অর্জনের জন্য ২০১১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে বাংলাদেশ অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ‘সাউথ-সাউথ পুরস্কারে’ ভূষিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্সে’-এ রূপান্তর এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সুপার হসপিটাল’ স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৪১। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ৯ হাজার ৫৯৮টি পদে সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা ও সেবার উন্নয়নে নার্সিং পরিদপ্তরকে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। নার্সিং শিক্ষায় মাস্টার্স কোর্স চালু এবং ঘধঃরড়হধষ ওহংঃরঃঁঃব ড়ভ অফাধহপব ঘঁৎংরহম ঊফঁপধঃরড়হ ্ জবংবধৎপয স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ অটিজম ও স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যা নিরসনে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা কার্যকর, বাস্তবায়ন ও সমন্বয়সাধনের জন্য ১১ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটিকে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদানের জন্য মিজ্ সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে সভাপতি করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় উপদেষ্টা কমিটিও পুনর্গঠন করা হয়েছে। ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’, ঢাকা-এর নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এ বছরেই হাসপাতালটির কার্যক্রম চালু হবে। এককভাবে বেড সংখ্যা বিবেচনায় এটি বিশ্বের বৃহত্তম বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল। জনাব স্পিকার, ৪২। দেশে প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নসহ শিক্ষার জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন মেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় ইতোমধ্যে ১ হাজার ৪৫৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মিত হয়েছে?
×