ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি সিপিবি-বাসদের

প্রকাশিত: ০১:০৩, ৪ জানুয়ারি ২০১৮

নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি সিপিবি-বাসদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য টাকার খেলা, পেশী শক্তি ও সাম্প্রদায়িকতা-আঞ্চলিকতা বন্ধ করে নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ জোট। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাম জোটের শীর্ষ নেতারা এ দাবি জানান। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালুর দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাম নেতারা বলেন, আমাদের সামনে আর কোন পথ খালি নেই। তাই পরিবর্তনের একমাত্র পথ হলো আন্দোলন। এজন্য সবাইকে একযোগে মাঠে নামারও পরামর্শ দেন তারা। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ ৫ জানুয়ারি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি প্রার্থী ও ভোটারবিহীন কলংকময় নির্বাচন সংঘটিত হয়েছিলো। স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে নয় বছরের জীবনক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আর্জিত ভোটের অধিকার ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্যদিয়ে চূড়ান্তভাবে হরণ করা হয়েছে। এরশাদ স্বৈরাচারের পতনের পর দুই বছর বাদে পালাক্রমে দেশ পরিচালনা করেছে বিএনপি, আওয়ামী লীগ। বাকী দুই বছর দেশ চালিয়েছে সামরিক বাহিনী পৃষ্ঠপোষিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে গ্রহনযোগ্য ও আরো স্বচ্ছ করার পরিবর্তে এরাই পালাক্রমে ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য নানা রকম কূটচালের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে জবরদস্তিমূলক, একতরফা পাতানো ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম এবং বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বিবৃতিতে আরো বলেন, সমাজের সর্ব পর্যায়ে গণতন্ত্রায়নের পরিবর্তে স্বৈরতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম হয়েছে। নি¤œ থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত বিচার বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সর্বনাশা খেলায় মেতে উঠেছে শাসক শ্রেণি। ন্যাক্কারজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে সরকারের মনোভাব পরিস্কারভাবে ফুটে উঠেছে। নি¤œ আদালতের বিচারকগণের নিয়ন্ত্রণভার নির্বাহী বিভাগের কাছে রাখার মধ্য দিয়ে শাসকশ্রেণি তার ক্ষমতালোভী স্বরূপ উন্মোচন করেছে। মানুষের রুটিরুজির অধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করা হচ্ছে কঠোর নিষ্ঠুরতায়। শ্রমিক আন্দোলন ও ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার দমিয়ে রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে র্যাব, শিল্প পুলিশ। অবাধে চলছে গুম, খুন ও নারী-শিশু ধর্ষণের ঘটনায় বিচারহীনতার রেওয়াজ। নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এরাই দেশ শাসন করছে এরা নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন সাধন করলেও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন আনতে পারেনি। এরশাদের পতনের মধ্য দিয়ে সমাজের গণতন্ত্রায়নের যে সুযোগ জাতির সামনে এসেছিল তা এ দুই দল তাদের নেতাদের পারিবারিক ও দলীয় স্বার্থে বিসর্জন দিয়েছে। নেতৃবৃন্দ জনগণের ভোটাধিকারসহ গণতন্ত্র-গণতান্ত্রিক শাসন-প্রশাসন গড়ে তোলাসহ অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য টাকার খেলা, পেশী শক্তি ও সাম্প্রদায়িকতা-আঞ্চলিকতা বন্ধ করে নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার এবং সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির চালুর দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
×