ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অর্জন ॥ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সাফল্য

প্রকাশিত: ০৭:২১, ১ জানুয়ারি ২০১৮

অর্জন ॥ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সাফল্য

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণকে ইউনেস্কোর বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতিই ছিল চলতি বছর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এ ছাড়া বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। চলতি বছর ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) সম্মেলন ঢাকায় আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। এ ছাড়া রাসায়নিক অস্ত্র নিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল উইপনসের (ওপিসিডব্লিউ) নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়াটা বাংলাদেশের জন্য ছিল বড় অর্জন। এবারই প্রথম বাংলাদেশের কোন নির্বাচিত সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাকে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ ছাড়া চলতি বছর এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিংয়ের (এপিজি) কো-চেয়ার এবং স্টিয়ারিং গ্রুপের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ যে ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেই ভাষণ ২০১৭ সালে ‘বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে যুক্ত হয়েছে। ৪৬ বছর আগে ঢাকার সোহ্্রাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাকামী ৭ কোটি মানুষকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম-এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তার ওই ভাষণের ১৮ দিন পর পাকিস্তানী বাহিনী বাঙালী নিধনে নামলে বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সেই সশস্ত্র সংগ্রামের পর আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড (এমওডব্লিউ) কর্মসূচীর ইন্টারন্যাশনাল এ্যাডভাইজরি কমিটি চলতি বছর ২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর প্যারিসে দ্বিবার্ষিক বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ মোট ৭৮টি দলিলকে এবার ডকুমেন্টারি হেরিটেজ হিসেবে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে যুক্ত করার সুপারিশ করে। এরপর ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা ওই সুপারিশে সম্মতি দিয়ে বিষয়টি ইউনেস্কোর নির্বাহী পরিষদে পাঠিয়ে দেন। গত ৩১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে সেই তথ্য প্রকাশ করা হয়। ডকুমেন্টারি হেরিটেজ হলো সেই সব নথি বা প্রামাণ্য দলিল, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যার ঐতিহ্যগত গুরুত্ব আছে। আর সেসব ঐতিহ্যের তালিকা হলো, মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার। এসব দলিল সংরক্ষণের পাশাপাশি বিশ্বের মানুষ যাতে এ বিষয়ে জানতে পারে, সে জন্যই ১৯৯২ সালে এ কর্মসূচী শুরু করে ইউনেস্কো। এতদিন এই তালিকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোট ৪২৭টি নথি ও প্রামাণ্য দলিল ছিল। কোন দলিল বা নথি এই তালিকায় স্থান পাবে তা পরীক্ষা ও মূল্যায়নের দায়িত্বে রয়েছে ১৫ জন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে গঠিত এমওডব্লিউ কর্মসূচীর ইন্টারন্যাশনাল এ্যাডভাইজরি কমিটি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ন্যাশনাল আর্কাইভের মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আলরাজি বর্তমানে এর চেয়ারম্যান। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে আসা প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ৭৮টিকে এবার মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে যুক্ত করার সুপারিশে সমর্থন দেয় ইউনেস্কো মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা। এর মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ এই সাফল্য অর্জন করে। এদিকে চলতি বছরের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গা নিপীড়ন শুরু হলে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। ওই ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশ সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর থেকেই বাংলাদেশ এই সঙ্কটকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে সক্ষম হয়। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যায়। একই সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে এই সঙ্কট তুলে ধরে সমর্থন ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ৫ দফা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর সেই ৫ দফা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পেয়েছে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠা এবং বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়ে চলতি বছর পহেলা এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৬তম সম্মেলন। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ দিনব্যাপী এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন। ১৯৭২ সালে আন্তর্জাতিক এই ফোরামে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো বিশ্বের আইন প্রণেতাদের দীর্ঘদিনের পুরনো এই সংগঠনের সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ ছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও আইপিইউর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রায় এক হাজার ২০৬ লোক অংশ নেন। এদের মধ্যে ১২৬টি দেশ থেকে ৬০৭ জন এমপি, ৪৬ জন সংসদের স্পীকার, ৩৬ জন ডেপুটি স্পীকার এবং ১৯১ জন নারী এমপি ছিলেন। আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী ঢাকায় এই সম্মেলন আয়োজনের জন্য মূল ভূমিকা পালন করেন। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। এদিকে চলতি বছর নবেম্বরে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) ৬৩তম সম্মেলন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নিঃশর্তভাবে দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে একটি বিবৃতি গৃহীত হয়। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সংসদ সদস্যদের সংগঠনের এই সম্মেলন গত পহেলা নবেম্বর ঢাকায় শুরু হয়। পরে ৫ নবেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও সিপিএ ভাইস প্যাট্রন শেখ হাসিনা এই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এই সম্মেলনের আয়োজক ছিল সিপিএ বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়। সিপিএ সম্মেলনের সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে একটি বিবৃতি গৃহীত হয়। বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নাগরিকরা যে মানবেতর সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তার দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশ একই বছরে আইপিইউ ও সিপিএর মতো দুটো বড় সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছে। এই দুটি সম্মেলনের সফল আয়োজন বাংলাদেশের জন্য ছিল সবচেয়ে বড় অর্জন। এই সম্মেলন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সংসদের অগ্রযাত্রায় বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই দুটি সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশে কোন ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই। এ ছাড়া এই দুটি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসী স্বচক্ষে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিসহ অন্য বিষয়গুলো দেখার সুযোগ পেয়েছে। সিপিএ সম্মেলনে ৪৪টি দেশের জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের ৫৬ জন স্পীকার ও ২৩জন ডেপুটি স্পীকারসহ মোট ৫৫০ জন সিপিএ সদস্য অংশগ্রহণ করেন। ২০১৭ সালে রাসায়নিক অস্ত্রনিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল উইপনসের (ওপিসিডব্লিউ) নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এ পদে এবারই প্রথম নির্বাচিত হয়। ওপিসিডব্লিউয়ের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়াটা ছিল কূটনীতির ক্ষেত্রে এটি একটি বড় অর্জন। রাসায়নিক অস্ত্রনিরোধ সনদ কার্যকর করার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে ওপিসিডব্লিউ। নেদারল্যান্ডসের হেগভিত্তিক সংস্থাটিতে বর্তমানে ১৮৯টি দেশ সদস্য হিসেবে রয়েছে। এই পদে বাংলাদেশ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ওপিসিডব্লিউ এর স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মাদ বেলাল দায়িত্ব পালন করছেন। ওপিসিডব্লিউ এর নতুন নির্বাহী পরিষদের মেয়াদ ২০১৭ সালের ১২ মে থেকে ২০১৮ সালের ১১ মে পর্যন্ত। এই সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। নেদারল্যান্ডসের হেগে ওপিসিডব্লিউয়ের ৮৪তম নির্বাহী কমিটির সভায় বাংলাদেশ এই পদে দায়িত্ব লাভ করে। ওপিসিডব্লিউ জাতিসংঘের সংস্থা না হলেও নীতিগত বিষয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে এ দুই প্রতিষ্ঠানের। কোন দেশে রাসায়নিক অস্ত্রের বিষয়ে পরিদর্শন বা পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন হলে জাতিসংঘ ওপিসিডব্লিউর সহায়তা নেয়। এ বিষয়ে ২০০০ সালে একটি চুক্তিও করে দুই সংস্থা। রাসায়নিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার চেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। ১৯২৫ সালে জেনেভা সনদের মাধ্যমে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু তার পরও রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন ও মজুদ করার সুযোগ থেকেই যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার এই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেই ব্যাপক গণহত্যা চালান। ১৯৯২-৯৩ সালে আরেক সনদের মাধ্যমে রাসায়নিক অস্ত্রের উৎপাদন ও মজুদও নিষিদ্ধ করা হয়, যা কার্যকর হয় ১৯৯৭ সালে। তার পর থেকেই ওপিসিডব্লিউ তদন্ত চালিয়ে এবং মজুদ ধ্বংসের মাধ্যমে রাসায়নিক অস্ত্র নিরোধে ভূমিকা রেখে আসছে। এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিংয়ের (এপিজি) কো-চেয়ার এবং স্টিয়ারিং গ্রুপের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। চলতি বছর ১৭-২১ জুলাই শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে এপিজির ২০তম বার্ষিক সভায় ২০১৮ সালের জুলাই থেকে দুই বছরের জন্য বাংলাদেশকে কো-চেয়ার নির্বাচিত করা হয়। এর ফলে স্থায়ী কো-চেয়ার অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি এপিজির কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ এপিজির স্টিয়ারিং গ্রুপের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মানদ- নির্ধারণকারী সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল এ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সংস্থা এপিজির প্রতিষ্ঠালগ্ন ১৯৯৭ সাল থেকেই বাংলাদেশের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে এপিজির প্রাইমারি কন্ট্যাক্ট পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ এপিজির বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ ও এক্সপার্ট গ্রুপে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে, যার ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়াও এপিজির সদস্য। চলতি বছর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সুইজারল্যান্ডে বার্ষিক সভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারই প্রথম ডাব্লিউইএফ বাংলাদেশের কোন নির্বাচিত সরকার প্রধানকে এই সম্মানজনক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। ফলে এই আমন্ত্রণ একদিকে যেমন বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের শক্তিশালী ভূমিকা ও অবস্থানকে প্রতিফলিত করেছে, অন্যদিকে তেমনি প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্ব যে আজ তাকে বিশ্ব দরবারে এক অনন্য আসনে বসিয়েছে তারও ইঙ্গিত বহন করে। এ ছাড়া চলতি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, সুইডেন, জার্মানি, কম্বোডিয়া, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি দেশ সফর করেছেন। এসব দেশে দ্বিপক্ষীয় সফরের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন তিনি। এই সফরের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভূমিকাও উজ্জ্বল হয়েছে।
×