ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইংরেজী নববর্ষে ফেনীসহ দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার সিক্সলেইন ফ্লাইওভার

প্রকাশিত: ২১:৪৩, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

ইংরেজী নববর্ষে ফেনীসহ দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার সিক্সলেইন ফ্লাইওভার

ওছমান হারুন মাহমুদ, ফেনী ॥ ঢাকা-চট্রগ্রাম মহা সড়কের নাভী বলে পরিচিত ফেনীর মহিপালে নির্মান হয়েছে দেশের প্রথম সিক্স লেইন ফ্লাইওভার। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা এই ফ্লাইওভার আগামী ৪ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গনভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্ভোধন করবেন বলে জানিয়েছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সকাল সাড়ে ১০ টায় ফেনী জেলা প্রসাশকের সম্মেলন কক্ষ ও মহিপালের ফ্লাইওভারের কাছ থেকে একযেগে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে সাজসজ্জা। মহিপালের রেপলিকা জেলা প্রসাশকের সম্মেলন কক্ষে প্রদর্শিত হবে। দেশের প্রথম সিক্স লেইন ফ্লাইওভারের নির্মান কাজ করেছে বাংলাদেশ সোবাহহিনীর স্পেশাল ওয়ার্ক অর্গানাইজেশনের আওতায় ৩৪ ইন্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন। তাদের সহযোগী হিসাবে কাজ করেছে আবদুল মোমিন লিমিটেড। নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস আগেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ফ্লাইওভারটির নির্মান কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালর ১ এপ্রিল। ২০১৮ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পের নির্মান কাজ শেষ হওয়া কথাছিলো। সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও সেনা বাহনিীর নিরলস পরিশ্রমের কারনে নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস আগেই নির্মান কাজ হওয়ায় আগামী ৪ জানুয়ারী থেকে যানচলাচলর জন্য খুলে দেওয়া হবে। ফ্লাইওভারের উপরে ৬ লেইন নিচে ৪ লেইন সাভিস সহ মোট ১০ লেইনে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের অবিচ্ছেদ্য অংশ এই সিক্স লেইন ফ্লাইওভারটি। ফ্লাইওভারটি চালু হলে মহাসড়কের মহিপাল অংশ সহ বিভিন্ন স্থানের যানজট কমে যাবে বলে জানান সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দেশে যতগুলো ফ্লাইওভার রয়েছে সবগুলো চার লেইনের। ফেনীর মহিপালের চৌরাস্তা দিয়ে ফেনী নোয়াখালীর আঞ্চলিক মহাসড়ক ও ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের যানচলাচল করায় এখানে যানজট নিত্য দিনের দৃশ্য ছিলো। এ বিষয়গুলা বিবেচনা করে এই ফ্লাইওভারটি সিক্স লেইন করা হয়েছে। এ ফ্লাইওভারটি চালু হলে যানজট নিরসন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগের প্রাককলন অনুসারে এ প্রকল্পের ব্যায় ধরা হয়েছিলো ১৫৮ কোটি টাকা। পরবর্তীতে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ১৮১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। মুল ফ্লইওভারের দৈঘ্য ৬৬০ মিটার প্রস্থ ২৪ দশমিক ৬২ মিটার, সাভিস রোডের দৈঘ্য ১৩৭০ মিটার প্রস্থ ৭ দশমিক ৫ মিটার, এপ্রোচ রোডের দৈঘ্য ১১৬০ মিটার, সাইড ড্রেনের দৈঘ্য ২২১০ মিটার। ড্রেনের উপর নির্মিত ফুটপাতের দৈঘ্য ২২১০ মিটার। এই ফ্লাইওভারে পিসি গার্ডার ১৩২টি , ষ্টেন ১১ টি, পিলার ২০ টি এবং ফ্লাইওভারটিতে ১১ টি স্পেনে র্যাম্প রয়েছে ২৯০ মিটার। ঢাকা- চট্রগ্রাম মহা সড়কের মহিপালের উত্তর প্রান্তের দেবীপুরের বাখরাবাদ গ্যাস অফিসের কাছ খেকে ঢাকা থেকে আসা গাড়ী গুলো ফ্লাইওভারে উঠে দক্ষিন প্রান্তের চাড়িপুর স্কুলের কাছে গিয়ে নেমে আবার সমতল মহাসড়ক দিয়ে চট্রগ্রাম অভিমুখে যাবে। যে সকল যানবাহন ঢাকা থেকে এসে ফেনী শহর বা নোয়াখালী সড়কে যাবে তারা উত্তর প্রান্তের পয়েন্টের ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে অপর সাইড রোড দিয়ে যাবে। একইভাবে চট্রগ্রাম থেকে আসা যানবাহন গুলো ঢাকাগামী হলে ফ্লাইওভার দিয়ে যাবে। যারা ফেনী শহর বা নোয়াখালী যাবে তার ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে অপর সাইড রোড দিয়ে যাতায়ত করবে। যাকে লিংক রোড বলা হচ্ছে। স্থানিয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে নির্মান কাজ চলাকালে কাজের মান কাজের ধরন ছিলো লক্ষনীয়। যা হতবাক হওয়ার মত। মহাসড়কের এ যাবত যেসকল বেসামরিক ঠিকাদার কাজ করছে তার নির্মান কাজের মান নিয়ন্ত্রন করতে চোখে পড়েনি কারো। অপর দিকে সেনাবাহিনীর তত্বাবধান কাজ চলাকাল নির্মান কাজের মান নিয়ন্ত্রন কাজের পদ্ধতি দেখার জন্য উৎসুক জনগন ভীড় জমাতো। অপর দায়িত্বশীল সূত্র জানায় ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফতেহপুরে রেললাইনের উপর নির্মানাধীন ওভার পাস কাজ শেষ না হওয়ায় মহাসড়কের ফেনী অংশে যানজট লেগে থাকার আশংকা রয়েছে। এই প্রকল্পের নির্মান কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিক্স লেইন ফ্লাইওভারের সুফল পেতে সময় লাগবে। এই প্রকল্পের নির্মান কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন কারনে ২ জন বেসামরিক ঠিকাদার বদল হয়েছে। তারা নির্মান কাজ ফেলে চলেযায়। এমতাবস্থায় সম্প্রতি এ প্রকল্পের বাকী কাজ শেষ করার জন্য সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান সেতু ও সড়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকার অনুষ্ঠান স্থলে থাকবেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল সিদ্দিকসহ সরকারী উদ্ধতন কর্মকর্তা ও ফেনীর অনুষ্ঠান স্থলে থাকবেন ফেনী -২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, সেনাবাহিনীর এ প্রকল্পের দায়িত্ব পালনকারী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল সহ সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তাগন।
×