ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দৃষ্টি নন্দন সাজে রাজধানী সাজাবে ছাত্রলীগ

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দৃষ্টি নন্দন সাজে রাজধানী সাজাবে ছাত্রলীগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। আর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাজধানী ঢাকাকে বর্ণিল সাজে রাঙিয়ে তুলবে সংগঠনের নেতারা। বিভিন্ন আলোকসজ্জায় তুলে ধরা হবে সংগঠনের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং আন্দোলন সংগ্রামের সাফল্যও। ইতোমধ্যে এসবের জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রস্তুতি সভাও হয়েছে। প্রস্তুতি সভার বাইরেও আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর কান্টিনে কেন্দ্রের অধীনে রাজধানীর ১০ কলেজের নেতাদের ডেকে প্রয়োজনীয় দিকে নির্দেশনা দিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন। সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গোটা রাজধানী সাজানো হবে রঙিন সাজে। আলোকসজ্জা করা হবে নগরীর প্রতিটি সড়কদ্বীপ, ফ্লাইওভার, ফোয়ারা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। নগরীর প্রবেশ পথগুলোতে বানানো হবে তোরণ। সড়কের মোড়ে-মোড়ে টাঙানো হবে জাতীয় পতাকা। টাঙানো হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে বিলবোর্ড, ব্যানার। ব্যানার ফেস্টুনে তুলে ধরা হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্মলগ্ম থেকে বর্তমানের ইতিহাস-ঐতিহ্য, আন্দোলন সংগ্রামসহ বিভিন্ন অর্জন। নিজস্ব অর্থায়নে এগুলো করবে রাজধানীর স্ব স্ব এলাকার ইউনিটের নেতৃবৃন্দ। বিশেষ করে রাজধানীকে বর্ণিজ সাজে সাজানোর জন্য দায়িত্ব নিয়েছেন ঢাকা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, হোম ইকোনোমিক্স কলেজ, হাবিবুল্লাহ্ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। এসময় উপস্থিত রাজধানীর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দদেরও দায়িত্বের কথা নির্দেশনা দেওয়া হয়। জানা গেছে, বৈঠকে শাখা কমিটিগুলোকে নিজ নিজ ক্যাম্পাস ও এর আশ-পাশের এলাকা বর্ণিল সাজে সাজাতে বলা হয়েছে। এছাড়া এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনুমোদিত পোস্টার ব্যবহার করতে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ জনকণ্ঠকে বলেন, সংগঠনের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিটের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছি। প্রয়োজনে আরো বৈঠক হবে। নিজ নিজ উদ্যোগে স্ব স্ব এলাকার ফ্লাইওভার, সড়কগুলো বর্ণিল সাজে আলোকসজ্জার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্য তুলে ধরবো। জন্মের প্রথম লগ্ন থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যূত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বধিকার আন্দোলনের ছয় দশকের সবচেয়ে সফল সাহসী সারথি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তাই জাকজমকভাবেই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে চাই। এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন জনকণ্ঠকে বলেন, এশিয়ার বৃত্ততম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এটি। আমরা বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্ব স্ব এলাকায় দায়িত্ব দিয়েছি। স্ব স্ব এলাকায় ওভার ব্রিজ বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সাজাতে।এটা শুধু সাজ নয় এর মাধ্যমে আমরা একটি বার্তা দিতে চাই তরুণ প্রজন্মকে যারা ছাত্রলীগ করবে বা করতে চায়। আলোকসজ্জা, ব্যানার ফেস্টুনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের বিভিন্ন সময়ের ভূমিকা, আন্দোলন সংগ্রাম ও সাফল্যগুলো তুলে ধরা হবে। আমরা দেশের উন্নয়নগুলো ফোটিয়ে তুলতে চাই যার ফলে আমাদের সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো ভালো কিছু করার। সংগঠনের দফতর সম্পাদক দেলেয়ার হোসেন শাহজাদা বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যানার ও পোস্টার করতে কেন্দ্র থেকে ডিজাইন দেওয়া হবে। এই ডিজাইন ইতোমধ্যে আমাদের সংগঠনের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন। রাজধানী ঢাকার ১০ কলেজসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ইউনিট সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঢাকাকে সাজাবে বর্ণিল সাজে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের সকল পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাথে সমন্নয় করেই হয়। কেন্দ্র থেকে যেমন নির্দেশনা দেবে সেভাবে কাজ করবো। কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাওলাদার জনকণ্ঠকে বলেন, ছাত্রলীগ চেষ্টা করে সৃষ্টিশীল কিছু করার, সবসময়ই ভালো কিছু করার। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশে যেভাবে আলোকসজ্জা বা ফেস্টুনে ছাত্রলীগের গৌরবের ইতিহাস তুলে ধরা যায় আমরা সেভাবে কাজ করবো। আমরা সরকারের উন্নয়নগুলোও শিক্ষার্থীসহ রাজধানীতে বসবাসরত মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল বলেন, পুরাণ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, আমাদের ক্যাম্পাস আলোকসজ্জা করা হবে। কেন্দ্রীয়ং ছাত্রলীগের নির্দেশনায় কাজ করবো। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি এস. এম. মাসুদুর রহমান মিঠু জনকণ্ঠকে বলেন আলোক সজ্জা, দেয়াল লিখন, ফুটওভার ব্রিজ ইত্যাদি বিষয়ে নির্দেশনা পেয়েছি। আমরা চাইবো এসবের সৌন্দর্যের মাধ্যমে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুনরা অনুপ্রাণিত হয়, ছাত্রলীগ সর্ম্পকে আরো ভালো ভাবে জানতে পারে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আশপাশ আমরা দায়িত্ব নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দিক নির্দেশনায় কাজ করবো। বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে প্রতিষ্ঠাবাষির্কী নিয়ে তাদের মধ্যে উৎসব বিরাজ করছে। ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠনের সাথে যুক্ত হতে পেরে অনেক নেতাকর্মী নিজেদের সৌভাগ্য মনে করছেন সেই সাথে প্রতিষ্ঠাবাষির্কী সফল হোক সে কামনাও করেছেন।
×