ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয়ের মাসে ‘আমি’ নাটকের ৬ মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

বিজয়ের মাসে ‘আমি’ নাটকের ৬ মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ থিয়েটারের অন্যতম নন্দিত প্রযোজনা ‘আমি’। বিজয়ের মাসে দেশে-বিদেশে ‘আমি’ নাটকের ৬টি মঞ্চায়ন করতে যাচ্ছে দলটি। বাংলাদেশ থিয়েটারের সপ্তদশ প্রযোজনা ‘আমি’ নাটকটি দেশে দুটি এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ৪টি প্রদর্শনী হওয়ার কথা রয়েছে। দলসূত্রে জানা গেছে আজ ২৪ ডিসেম্বর রবিবার ভারতের বীজপুর চতুর্থ সূত্র আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে নাটকটির একটি মঞ্চায়ন হবে। আগামী ২৭ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদে নাটকটির আরও একটি মঞ্চায়ন হবে। পাশাপাশি বহরমপুরে নাটকটির আরও দুটি শো করার কথা রয়েছে। এদিকে গত ২২ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তন এবং এর আগে ৮ ডিসেম্বর এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটির একটি মঞ্চায়ন হয়। বিদেশে প্রথমবারের মতো নাটকটি মঞ্চায়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ভারত পৌঁছেছে ‘আমি’ নাটকের টিম। বাংলাদেশ থিয়েটারের ‘আমি’ নাটকটি রচনা করেছেন তরুণ নাট্যকার মাহবুব আলম। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন আইরিন পারভীন লোপা। আর এতে একক অভিনয় করেছেন বাংলাদেশ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলম। নাটকটির মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন ফজলে রাব্বী সুকর্ণ, আলোক পরিকল্পনায় কলকাতার জয়ন্ত মুখার্জী। আবহসঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন শেখ জসিম। দেশের বাইরে নাটকটি মঞ্চায়ন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ থিয়েটার। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোন পুরুষ অভিনীত একক অভিনয়ের নাটক ‘আমি’। আমাদের দেশে বর্তমানে মঞ্চে প্রচুর একক নাটক মঞ্চায়িত হয়ে আসছে যা মূলত অভিনেত্রীদের দ্বারাই অভিনীত হয়। সেই ধারাবাহিকতার ব্যত্যয় ঘটিয়ে খন্দকার শাহ্ আলম ‘আমি’ নাটকে অভিনয় দক্ষতার গুণে একটি নতুন মাইলস্টোন রচনা করেছেন। একজন মানুষের যাপিত জীবন ব্যাপ্ত থাকে নানাবিধ কর্মময়তায়। রুশদু তেমনি একজন মানুষ, যার পুরো জীবন জড়িয়ে আছে শিল্পের বাতাবরণে। আর দশটা সাধারণ মানুষের মতো তার জীবন নয়। সৃষ্টিশীল এই মানুষটা বেঁচে থাকতে চায় তার শিল্পের জীবনের মধ্য দিয়ে। কিন্তু শিল্পের মাঝে যাপন করা শিল্পীর জীবন মসৃণ নয় কারণ শিল্প সাধনায় যে সুখ তা শুধু শিল্পের জন্য বাঁচা যায় যা শিল্পের সুদীর্ঘ কণ্টাকীর্ণ পথকে মসৃণ করে। শিল্প স্রষ্টার এই বেঁচে থাকা সমাজের জন্য, শিল্প সৃষ্টির জন্য। তাই শিল্পীর ব্যক্তিজীবনের সঙ্কট কখনই লোকচক্ষুর সামনে দৃশ্যমান হয় না। শিল্পের জীবনযাপনের একজন শিল্পী বা শিল্পস্রষ্টা তার ব্যক্তি জীবনে কত কঠিন পরীক্ষা আর ত্যাগের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তা কেবল শিল্পের সাধনায় ব্রত মানুষটিই অনুধাবন করতে পারে। ‘আমি’ নাটকটি শিল্পের সাধক রুশদুর শিল্প জীবন ও ব্যক্তি জীবনের টানাপোড়েনের মিথস্ক্রীয়া। এই নাটকের পরতে পরতে রয়েছে ব্যক্তি ও শিল্প জীবনের দ্যোতনা। চমৎকার ভাষায় রচনা করেছেন তরুণ নাট্যকার মাহবুব আলম। যা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। শিল্পী জীবনের এই টানাপোড়েনের গল্পটির নান্দনিক চিত্র মঞ্চে নির্মাণ করেছেন নির্দেশক ড. আইরিন পারভীন লোপা। এই নাটকের প্রাণ, অভিনেতা খন্দকার শাহ্ আলম। কঠিন এই পা-ুলিপিটি অভিজ্ঞ অভিনেতা খন্দকার শাহ্ আলমের অভিনয় দক্ষতার কারণেই অপূর্ব দৃশ্যকাব্যে রচিত হয়েছে মঞ্চে। নাটকের গল্পে একজন শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবনের নানা টানাপোড়েনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। একজন শিল্পী তিনি তার সব কিছু দিয়ে শিল্পচর্চার মাধ্যমে সমাজের মানুষকে আনন্দ দিয়ে যান। আনন্দ দেয়ার কারণে সমাজে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মানুষ একজন শিল্পী। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে তিনি সমাজে কতটা আনন্দ অনুভূতিতে বেঁচে থাকেন। এমনি ঘটনা প্রবাহ নিয়ে এগিয়েছে ‘আমি’ নাটকের কাহিনী।
×