ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাশিয়া বিশ্বকাপ নিয়ে মেসির ভাবনা -বিউটি পারভীন

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২০ ডিসেম্বর ২০১৭

রাশিয়া বিশ্বকাপ নিয়ে মেসির ভাবনা  -বিউটি পারভীন

শেষ মুহূর্তের নাটকীয় জয়ে এবার বিশ্বকাপ খেলার টিকেট পেয়েছে আর্জেন্টিনা ফুটবল দল। ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে বাঁচা-মরার সে লড়াইয়ে ৩-১ গোলের জয় এসেছিল। ঐতিহাসিক হ্যাটট্রিক করেছিলেন সুপারস্টার লিওনেল মেসি। যেখানে ২০১৮ বিশ্বকাপে খেলার জন্য রাশিয়ায় যাওয়াটাই অনিশ্চিত ছিল, দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে শেষ ম্যাচে এ অবিস্মরণীয় বিজয়ে তিন নম্বর স্থান দখল করেই টিকেট নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। এখন মেসির নেতৃত্বে আগামী বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া এবং নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে খেলবে গত বিশ্বকাপের রানার্সআপরা। এই বাছাইয়ের সময়ে দলকে কেমন দেখেছেন এবং আসন্ন বিশ্বকাপে লা আলবিসিলেস্তেরা কেমন করবে সেসব নিয়ে এক সাক্ষাতকারে কথা বলেছেন মেসি। তিনি দাবি করেছেন, যেভাবেই দল রাশিয়ার বিশ্বকাপ টিকেট পেয়ে থাকুক না কেন টুর্নামেন্টে বেশ ভাল অবস্থান নিয়েই নিজেদের প্রমাণ করবে আর্জেন্টিনা। প্রশ্ন ॥ আপনার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে ম্যাচটিকে র‌্যাঙ্কিংয়ে কোন্ অবস্থানে রাখবেন? মেসি ॥ এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, বিশ্বকাপ মিস করাটা বিশাল এক ধাক্কার মতো হয়ে উঠত। প্রথমত পুরো স্কোয়াডের জন্য এবং এর পর আমার ব্যক্তিগত পর্যায়ের সবখানে। আমি জানি না সেটাকে আমি কিভাবে গ্রহণ করতাম। একই অবস্থায় পড়ে যেত আর্জেন্টিনার মানুষও। রাশিয়ায় যাওয়াটা ব্যর্থ হলে সেটা আর্জেন্টিনার জন্য সর্বকালের সবচেয়ে বাজে অবস্থার নিদর্শন হতো। প্রশ্ন ॥ ব্রাজিল-জার্মানির সঙ্গে তুলনা করলে এই মুহূর্তে আর্জেন্টিনার অবস্থান কোন্ পর্যায়ে? মেসি ॥ আমরা যেহেতু সেখানে পৌঁছে গেছি তখন অবশ্যই খুব ভাল অবস্থায়ই থাকব। কারণ, আমরা এখন নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছি। আমরা যা প্রত্যাশা করি না কিংবা আমাদের প্রাপ্য নয় এমন কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। কারণ ভেনিজুয়েলা ও পেরুর বিরুদ্ধে আগে যে ম্যাচগুলো ছিল সেসব আমরা সহজেই জিততে পারতাম। সেটা যদি পারতাম তাহলে শেষ মুহূর্তে আমাদের যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছিল সেটা হতো না। আমরা নতুন কোচের অধীনে মাত্র চারটি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু এখন জাতীয় দলে একটা পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে ম্যাচটি এখন অতীত হয়ে গেছে। প্রশ্ন॥ চিলি শেষ মুহূর্তে আসতে না পারায় আপনি বিস্মিত হয়েছেন? মেসি ॥ হ্যাঁ, অন্য আর সবার মতোই। কারণ সর্বশেষ দুটি কোপাই জিতেছে চিলি এবং তারা এমন একটি দল যারা ধারাবাহিকভাবে জিততে শিখে গিয়েছিল। খুব ভাল কিছু খেলোয়াড়ের সমন্বয়ে দুর্দান্ত একটা দল তারা। কিন্তু এটা তো স্বাভাবিক যে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইটা কতখানি কঠিন। কারণ, কেউ এখানে অন্যকে ছেড়ে কথা বলে না। ব্রাজিল ব্যতীত বলিভিয়া, ভেনিজুয়েলা, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া এবং অন্য যেকোন দেশে গিয়ে খেলাটা একেবারেই সহজ নয়। সেখানে প্রতিটি দলের মধ্যে ব্যবধানটা খুব স্বল্প। ক্রমান্বয়ে বিশ্বকাপে পৌঁছা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। প্রশ্ন ॥ ব্রাজিল ২০১৪ বিশ্বকাপের ক্ষতটা কি সেরেছে? মেসি ॥ নাহ! আমি জানি না সেটা কখনও সারবে কিনা! আমরা সেটা নিয়েই হয়ত বেঁচে থাকব। এটা আজীবনের জন্যই থেকে যাবে। বিশ্বকাপ খুবই সুখস্মৃতির বিষয় এবং একই সঙ্গে তিক্ততার। কারণ, এটা যেভাবে শেষ হয়েছিল এবং যেমন কার্যকলাপ হয়েছিল এর পর সেটা ভোলার নয়। প্রশ্ন ॥ ৩০ বছর বয়সে কি মনে হচ্ছে যে অবস্থানে থাকতে চেয়েছিলেন সেখানে পৌঁছতে পেরেছেন? মেসি ॥ আপনাকে যদি সত্য কথাটা বলতে চাই তাহলে বলবÑ আমি কখনও চিন্তা করি না সেখানে পৌঁছার পর কেমন অনুভব করছি। কিন্তু আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন এবং ফুটবল নিয়ে খুবই সুখী। আমি বলতে পারি যে মাঠের ভেতর ও বাইরে আমি খুব ভাল অবস্থাতেই আছি। এই মুহূর্তে যে অবস্থায় আছি নিজেকে নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট আমি। প্রশ্ন ॥ সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন আসে। আপনার ফুটবলেও কি পরিবর্তন এসেছে? মেসি ॥ হ্যাঁ, অবশ্যই। আপনি ক্রমান্বয়ে বেড়ে উঠবেন এবং সময় পেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে কিছু উন্নতিও করবেন। পুরো যাত্রাপথে নতুন অনেক কিছুই যোগ হবে জীবনে। আমি যেহেতু বয়সে বেড়েছি, মাঠেও সেভাবে বেড়ে উঠেছি। প্রশ্ন ॥ কোচ জর্জ সাম্পাওলি বলেছেন, ফুটবলকে এখন মেসিকে বিশ্বকাপ তুলে দেয়ার ঋণ শোধ করতে হবে। আপনি সেটা শুনেছেন এবং কিভাবে এটা করে দেখাতে চান? মেসি ॥ হ্যাঁ, এ রকম আমি শুনেছি এবং তিনি নিজেও আমাকে সেটা বলেছেন। আশা করি, আমাকে কিছু দিয়েই ফুটবলের যবনিকা ঘটবে (হাসি)। আমার জাতীয় দলের হয়ে কিছু ভাল ম্যাচ গেছে। আমি যা বলতে পারি সেটা হচ্ছে যেসব বিষয় ঘটেছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং সবই আমার জন্য বিশেষ একেকটি মুহূর্ত। রাশিয়ার আধিপত্য স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিগার স্কেটিংয়ে বরাবরই রাশিয়া নৈপুণ্যে দুর্দান্ত। বেজিংয়ে চলমান ফিগার স্কেটিং প্রতিযোগিতা কাপ অব চায়নাতে সেটা আরেকবার প্রমাণিত হচ্ছে। রাশিয়া তাদের আধিপত্য অব্যাহত রেখেছে। রাশিয়ান কিশোরী ১৫ বছর বয়সী এ্যালিনা জাগিতোভা গ্রাঁ প্রিঁ অভিষেকেই আলো ছড়িয়েছেন। আর পুরুষদের প্রতিযোগিতায় মিখাইল কোলিয়াডা হয়েছেন বিজয়ী। অর্থাৎ বেজিংয়েও স্বাগতিকদের ছাড়িয়ে রাশিয়ান ফিগার স্কেটাররাই আধিপত্য করছেন। আর আইস ডান্সে চমক দেখিয়েছে ফ্রান্স। পয়েন্টের বিশ্বরেকর্ড গড়ে জিতেছেন গ্যাব্রিয়েলা পাপাডাকিস ও গুইলাউম সিজেরন জুটি প্রথমবারের মতো এই ইভেন্টে ২০০ পয়েন্টের সীমানা পেরিয়ে অবিস্মরণীয় এই রেকর্ড গড়েন। এগিয়ে আসছে আরেকটি অলিম্পিক। ২০১৪ সালে সর্বশেষ রাশিয়ার সোচিতে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার সেটাকে সামনে রেখে বেজিংয়ের এই গ্রাঁ প্রিঁ সব ফিগার স্কেটারের জন্যই বড় রকমের একটি প্রস্তুতি। দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাংয়ে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে এবারের অলিম্পিক। চীনের মাটিতে তাই অন্য দেশগুলোর জন্য কাপ অব চায়না ভাল ধরনের অনুশীলন হিসেবেই ধরা হচ্ছে। এখানেও রাশিয়া তাদের দাপট দেখিয়ে যাচ্ছে। কিশোরী জাগিতোভা দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে যাচ্ছেন। তিনি সর্বশেষ ফ্রি স্কেটের ইভেন্টে নেমেছিলেন চতুর্থ স্থানে থেকে। কিন্তু এই প্রোগ্রামে তিনি ছাড়িয়ে গেলেন সবাইকেÑ স্কোর করলেন ১৪৪.৪৪। তিনি ডন কুইক্সোট সঙ্গীতের সঙ্গে পারফর্ম করেন এবং ট্রিপল লুটজের সঙ্গে ট্রিপল লুপের একটি সম্মিলন ঘটিয়ে নিজেকে অন্যদের চেয়ে ওপরে নিয়ে যান। সবমিলিয়ে ২১৩.৮৮ পয়েন্ট নিয়ে স্বর্ণপদক নিশ্চিত করেন তিনি। চলতি বছর বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণজয়ী এ ভবিষ্যতের সম্ভাব্য উজ্জ্বল তারকা আকর্ষণীয় নৈপুণ্য দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বছরের ৬টি আইএসইউ গ্রাঁ প্রিঁ আসরের মধ্যে তিনি সার্বিকভাবে তৃতীয় স্থানে আছেন। স্বাগতিক চীনের কেউ পোডিয়ামে উঠতে পারেননি। জাপানের ওয়াকাবা হিগুচি ২১২.৫২ পয়েন্ট নিয়ে রৌপ্য জয় করেন। তবে রাশিয়ার উজ্জ্বল নক্ষত্র এলেনা রেডিওনোভা তেমন সুবিধা করতে পারেননি। তিনি ২০৬.৮২ পয়েন্ট স্কোর করে তৃতীয় হিসেবে জিতেছেন ব্রোঞ্জ। স্বর্ণপদক জয়ের পর দারুণ খুশি জাগিতোভা। তিনি বলেন, ‘প্রথম গ্রাঁ প্রিঁ আসরেই স্বর্ণ জেতা অনেক বড় ব্যাপার আমার জন্য। তবে এখন আমার কাজ চালিয়ে যাওয়াটা অনেক জরুরী বিষয়। সুতরাং এখন আমি ফুলশয্যায় শুয়ে আনন্দে বিশ্রাম করতে পারি না। আগেরদিনে আমি নিজের শর্ট প্রোগ্রাম নিয়ে তেমন সন্তুষ্ট ছিলাম না। কিন্তু আমি ফ্রি স্কেট নিয়ে খুবই আনন্দিত, কারণ আমি যেভাবে চেয়েছি সেভাবেই সবকিছু করতে পেরেছি।’ ২২ বছর বয়সী কোলিয়াডা রাশিয়ার জন্য একইদিনে দ্বিতীয় স্বর্ণপদক এনে দেন। এ তরুণ সবমিলিয়ে ২৭৯.৩৮ পয়েন্ট স্কোর করেন। তবে অন্যতম ফেবারিট হয়েও শেষ পর্যন্ত স্বাগতিক চীনের জিন বোইয়াং ২৬৪.৪৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় হন। তিনি রৌপ্য জিতলেও হতাশ হয়েছে চীনের দর্শকরা। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাক্স এ্যারন ফ্রি স্কেটে প্রথম হওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত সার্বিকভাবে ২৫৯.৬৯ পয়েন্ট নিয়ে ব্রোঞ্জ জয় করেন। তবে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনের জ্যাভিয়ের ফার্নান্দেজ হতাশ করেছেন ষষ্ঠ হয়ে। আইস ডান্সে পাপাডাকিস ও সিজেরন জুটি এমনিতেই ছিলেন ফেবারিট। কারণ তারা দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এবার আরও দুরন্ত ছিলেন এ জুটি। তারা শেষদিনে নিজেদের ক্যারিয়ারসেরা ১১৯.৩৩ পয়েন্ট স্কোর করেন। আর এতে করে সার্বিকভাবে ২০০.৪৩ পয়েন্ট অর্জন করেন তারা। আজ পর্যন্ত আইস ডান্সের ইতিহাসে এটিই প্রথম ২০০ পয়েন্টের স্কোর।
×