ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শারজায় অনুষ্ঠিত টি১০ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন কেরালা কিংস

প্রথম আসরে শিরোপার স্বাদ পেলেন সাকিব

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭

প্রথম আসরে শিরোপার স্বাদ পেলেন সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভাগ্যটা দারুণ সহায় সাকিব আল হাসানের। যেখানেই তার পদচিহ্ন পড়ে সেখানেই কেন্দ্রীভূত হয় সর্বোচ্চ সাফল্য। এবারই প্রথম ব্যতিক্রমী ক্রিকেট আসর টি১০ ক্রিকেট লীগ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আরব আমিরাতের শারজায়। ৬ দলের অংশগ্রহণে ক্রিকেটের এ ক্ষুদ্রতম ফরমেটেও তার দল কেরালা কিংস হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। ফলে প্রথম এই আসরে খেলতে নেমেই শিরোপা স্বাদ পেলেন টেস্ট ও টি২০ ক্রিকেটের বিশ্বসেরা এ বাংলাদেশী অলরাউন্ডার। রবিবার রাতের ফাইনালে পাঞ্জাবী লিজেন্ডসকে ৮ উইকেটে বিধ্বস্ত করে টি১০ ক্রিকেট লীগের প্রথম আসরের ‘রাজা’ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে সাকিবের দল কেরালা কিংস। মাত্র চারদিনের টুর্নামেন্ট। এ কারণে একই দিনে দুটি করে খেলায় অংশ নিতে হয়েছে প্রতি দলকে। রবিবার শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একই দিনে অনুষ্ঠিত হয় টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। প্রথম সেমিফাইনালে মারাঠা এ্যারাবিয়ান্সের বিপক্ষে মাঠে নেমে ৫ উইকেটে জিতে ফাইনালে উঠেছিল সাকিবদের কেরালা। ওই ম্যাচে দুর্ভাগ্যক্রমে নন স্ট্রাইকে থেকেই রান আউটের শিকার হন সাকিব। এই টুর্নামেন্টে পাখতুনসের হয়ে খেলেছেন আরেক বাংলাদেশী তারকা তামিম ইকবাল। তবে তামিমের দল দ্বিতীয় সেমিফাইনালে পাঞ্জাবী লিজেন্ডসের কাছে ৯ উইকেটে হেরে বিদায় নেয়। প্রথম দুই ম্যাচে অপরাজিত ৫৬ ও ৮ রান করা তামিম সেমিফাইনালে ৯ বলে করেন ১৭ রান। কিন্তু তামিমের বিদায়ের বেদনাকে সর্বোচ্চ সাফল্য দিয়েই ভুলিয়েছেন সাকিব। গ্রুপ পর্বে কেরালা ১ ম্যাচ জিতলেও আরেকটি ম্যাচ হেরেছিল। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকায়নি দলটি। প্লে অফ ও সেমিফাইনাল জিতে উঠে যায় ফাইনালে। সাকিব দুই ম্যাচে জিতেছেন সেরা ফিল্ডার ও সবচেয়ে এনার্জেটিক খেলোয়াড়ের পুরস্কার। এ কারণে শুরু থেকেই আলোচনায় ছিলেন এ বাংলাদেশী অলরাউন্ডার। ফাইনালে মুখোমুখি হয় পাঞ্জাবী লিজেন্ডসের বিপক্ষে নামেন তারা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে লুক রনকির হাফসেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ১০ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ১২০ রান সংগ্রহ করে পাঞ্জাবী লিজেন্ডস। ৩৪ বলে ৫ চার ও ৫ ছক্কায় ৭০ রান করেন রনকি। ১৪ বলে ২৬ রান করেন শোয়েব মালিক। সেমিফাইনালে বোলিং করার সুযোগ না পেলেও ফাইনালে দুই ওভার বল করে ৩১ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন বাঁহাতি সাকিব। প্রথম ওভারে ১০ রান দিলেও নিজের দ্বিতীয় ওভারে ২১ রান দিয়েছেন সাকিব। ১২১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন কেরালা ওপেনার চ্যাডউইক ওয়ালটন। তবে পল স্টার্লিং ও অধিনায়ক মরগানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুই ওভার বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় দলটি। দ্বিতীয় উইকেটে মাত্র ৪০ বলে ১১৩ রানের জুটি গড়েন স্টার্লিং ও মরগান। জয় থেকে আট রান দূরে থাকতে মরগান ফিরে গেলেও স্টার্লিং দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। মাত্র ২১ বলে পাঁচটি চার ও ছয় ছক্কায় ৬৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন মরগান। ২৩ বলে তিন চার ও পাঁচ ছক্কায় ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন স্টার্লিং। টি১০ ক্রিকেট লীগের ৫ ম্যাচেই খেলেছেন সাকিব। এর মধ্যে তিন ম্যাচে বোলিং করে কোন উইকেট শিকার করতে পারেননি। দুই ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে মাত্র ৭ রান করেছেন। নিজেদের প্রথম ম্যাচে বেঙ্গল টাইগার্সের বিপক্ষে ১ ওভার বল করে মাত্র ৫ রান দেন সাকিব। ওই ম্যাচে সেরা ফিল্ডারের পুরস্কারও জিতে নেন। পরের ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং কোনটিই করেননি। তবে সেরা এনার্জেটিক খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন সাকিব। সেমিফাইনালে বল করার সুযোগ না পেলেও জয় থেকে দল যখন মাত্র চার রান দূরে তখন ব্যাটিংয়ের সুযোগ পান তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে নন স্ট্রাইকে থেকেই আউট হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। সাকিবের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য যেমনই হোক তার দল কেরালা হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। আর সেমিফাইনাল খেলেছেন তামিম পাখতুনসের হয়ে।
×