ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রিমা কনভেনশন সেন্টারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ;###;আহত অর্ধশতাধিক

মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতে শোকের ছায়া ॥ পদপিষ্টে নিহত ১০

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭

মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতে শোকের ছায়া ॥ পদপিষ্টে নিহত ১০

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টলবীর সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্ষীয়ান নেতা আলহাজ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে পুরো নগরী যখন গভীর শোকে মুহ্যমান; ঠিক তখনই তাঁর কুলখানিতে ঘটে গেছে হৃদয়বিদারক আরেক ঘটনা। মহিউদ্দিনের কুলখানিকে কেন্দ্র করে ১৪টি পয়েন্টে আয়োজিত মেজবানে লাখো জনতার ঢল নামে। ১৪টির মধ্যে একটি পয়েন্টে উপচেপড়া ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এদের মধ্যে সঙ্কটাপন্ন তিনজনসহ ৫ জন চমেকের নিউরো বিভাগে এবং ৬ জন ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে চিকিৎসাধীন। যারা প্রাণ হারিয়েছেন তারা হচ্ছেন সুধীর দাশ (৪৫), কৃষ্ণ প্রসাদ দাশ (৩৫), ঝুন্টু দাশ (৪৫), টিটু দাশ (৩০), প্রদীপ তালুকদার (৫৫), লিটন দেব (৫০), চবি ছাত্র দীপংকর দাশ রাহুল (২৩), ধনাশীল (৬০), অলক ভৌমিক (৩৬), বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আশীষ বড়ুয়া (৩৫)। সঙ্কটাপন্নসহ গুরুতর জখম হওয়াদের তাৎক্ষণিকভাবে নাম পাওয়া যায়নি। এরা সনাতন ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠীর সদস্য। এই মর্মান্তিক ঘটনায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মহিউদ্দিনের মৃত্যুতে পুরো চট্টগ্রামে চলমান শোকের মাতমের মধ্যে চার দিনের মাথায় সোমবার তাঁর কুলখানিতে পদপিষ্ট হয়ে মানুষের প্রাণহানির মর্মস্পর্শী ও হৃদয়বিদারক এ ঘটনায় এ নগরীতে নতুন করে ভিন্ন আঙ্গিকের আরেক বড় ধরনের শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি করল। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। কেননা, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার ও জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী মর্মন্তুদ এ ঘটনাকে মানুষের তাড়াহুড়ো ও ধাক্কাধাক্কির মাধ্যমে প্রবেশ করতে যাওয়ার জের হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও রীমা কনভেনশন সেন্টারে ব্যবস্থাপনায় জড়িতরাও একই দাবি করেছেন। পুলিশ কমিশনার দাবি করেছেন, মূল সড়ক থেকে রীমা কনভেশন সেন্টারটি কমপক্ষে ১০ ফুট নিচুতে অবস্থিত। ফলে ঢালু সড়কপথে মানুষের তাড়াহুড়ো ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় মর্মান্তিক এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও দাবি করেছেন, শৃঙ্খলা রক্ষায় কোন ঘাটতি ছিল না। শুধু রীমা কমিউনিটি কনভেনশন হল নয়, সব হলে মেজবান উপলক্ষে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। সঙ্গে ছিল বিপুল স্বেচ্ছাসেবক। কিন্তু চট্টগ্রামের জনপ্রিয় নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতেও মানুষের ঢল যেমন নামে তেমনি হুড়োহুড়ি করে কার আগে কে যাবে এ মানসিকতা নিয়ে আগোয়ান মানুষের ঢল ঢালুপথ দিয়ে হলে প্রবেশ করতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কির কারণে এ অনাকাক্সিক্ষত প্রাণহানির ঘটনাটি ঘটে গেল। নগরীর আসকারদীঘি এলাকার রীমা কনভেনশন সেন্টার ছাড়াও প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর চশমাহিলের বাসভবন প্রাঙ্গণসহ মোট ১৪টি কমিউনিটি সেন্টারে তাঁর জন্য কুলখানির আয়োজন করা হয়েছিল সোমবার। প্রায় দেড় লাখ মানুষকে খাওয়ানোর টার্গেট নিয়ে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এ মহামেজবানযজ্ঞের আয়োজন করা হয়। এতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনসহ সমাজের বিভিন্নস্তরের শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিদের ব্যাপক সহযোগিতা ছিল। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত করা হয়েছিল বিপুল পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দল। দুপুর একটার মধ্যেই সব কমিউনিটি সেন্টারে একযোগে মেজবানির খাবার পরিবেশন শুরু হয়। অনুরূপভাবে রীমা কনভেনশন সেন্টার ও এর সন্নিহিত এলাকার আরও তিনটি কমিউনিটি সেন্টারে মেজবানির খাবার শুরু হয়ে যায়। অবশিষ্ট কমিউনিটি সেন্টার ছিল নগরীর আগ্রাবাদ, বাকলিয়া, মুরাদপুর, জিইসি মোড়ে। নগরীর প্রায় প্রতিটি দরগাহ ও এতিমখানায়ও ছিল মেজবানি। মেজবানির অনুষ্ঠানে ১৪ পয়েন্টের মধ্যে জামালখানের রীমা কনভেনশন সেন্টারটি হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য। দুঃখজনক এ দুর্ঘটনাটি ঘটে গেল রীমা কনভেনশন সেন্টারটিতে। এছাড়া মুরাদপুরের এন মোহাম্মদ কনভেনশন সেন্টারটি উপচেপড়া ভিড়ে এক পর্যায়ে ব্যাপক ভাংচুরের কবলে পড়ে। উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির কিছু যুবক ভাংচুরের এ ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। ১৩টি কনভেনশন সেন্টার ছাড়া মহিউদ্দিন চৌধুরীর চশমাহিল ভবনের আয়োজনটি ছিল শুধু মহিলাদের জন্য। দুপুর একটার পর প্রতিটি কনভেনশন সেন্টার ও তাঁর বাসভবনে মেজবানি খাবার পরিবেশনের সূচনা ঘটে। শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী মোতায়েন ছিল। সবচেয়ে বৃহত্তম আয়োজনটি ছিল নগরীর ‘কিং অব চিটাগাং’ নামের কমিউনিটি সেন্টারে। এখানে উপস্থিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরুসহ ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন দলীয় শীর্ষ পর্যায়ের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। সব সেন্টারে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মাইকযোগে আহ্বান জানানোর প্রক্রিয়াটিও দৃশ্যমান ছিল। প্রতিটি সেন্টারে মেজবানির খাওয়া প্রচ- চাপের মাঝেও মোটামুটি শৃঙ্খলার সঙ্গে চলে আসছিল। কিন্তু দুপুর একটা ৪০ মিনিটে পদদলিত হয়ে হতাহতের দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে জামালখান এলাকার রীমা কনভেনশন হলে। ঘটনাস্থলেই ৫ জন প্রাণ হারায়। অবশিষ্টদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের বিপুলসংখ্যক কর্মী ঘটনাস্থলে পৌঁছেয় এবং উদ্ধার কাজ শুরু করে। তাদের সঙ্গে পুলিশ ও সাধারণ মানুষসহ মোতায়েন থাকা ২০ পুলিশ সদস্যও যোগ দেয়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, অর্ধশতাধিক আহতের মধ্যে ২২ জনকে চট্টগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে গুরুতর ৫ জনকে নিউরো বিভাগে এবং ৬ জনকে ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। নিউরো বিভাগে ভর্তিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। রীমা কনভেনশন সেন্টারে পদদলিত হয়ে প্রাণহানির এ ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সব স্থানে মেজবানির খাবার পরিবেশনা বন্ধ করে দেয়া হয়। ঘটনাস্থান ছাড়াও হাসপাতালে ছুটে যান সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার, জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী, মহিউদ্দিন চৌধুরীর পুত্র কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং দলের সর্বস্তরের নেতা ও কর্মী। সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা হারে প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। এছাড়া নিহতদের সৎকারের যাবতীয় ব্যবস্থা প্রশাসনের সহযোগিতায় সামাজিক পর্যায় থেকে সম্পন্নের কথা জানানো হয়। আকস্মিক ও অনাকাক্সিক্ষত এ ঘটনার খবর শুনে চমেক হাসপাতালে এসে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সৃষ্টি হয় শোকাবহ পরিবেশের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুরো চমেক হাসপাতাল প্রাঙ্গণ মানুষের ভিড়ে সয়লাব হয়ে যায়। হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় রীতিমতো অচলাবস্থার কবলে পড়ে যায়। পরে চিকিৎসক, ইন্টার্নি চিকিৎসক ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যের সহযোগিতায় অস্বাভাবিক পরিবেশের উন্নতি ঘটানো হয়। হাসপাতালে স্বজনহারানোদের চিৎকারে মহিউদ্দিন পুত্র ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এখানে উল্লেখ করতে হয়, মেজবান চট্টগ্রামবাসীর সামাজিক রীতিনীতিতে ঐতিহ্যবাহী। মহিউদ্দিন চৌধুরী এ মেজবান অনুষ্ঠানকে দেশের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে গেছেন। টুঙ্গীপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মাজারে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট বিশাল মেজবানযজ্ঞ আয়োজন করে গেছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। শুধু তাই নয়, তিনি নিজে এ মেজবানে উপস্থিত থাকতেন। প্রতিবছর অর্ধশত গরু জবাই করে টুঙ্গীপাড়ার মানুষকে তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্য মেজবানি খাওয়াতেন। যেখানে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও শরিক হয়ে আসছেন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, রণাঙ্গনে সম্মুখ সমরে লড়াই করে বাঙালীর স্বাধীনতা লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন চৌধুরী গত শুক্রবার ভোরে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হসপিটালে ইন্তেকাল করেন। ঐদিন বিকেলে ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে তাঁর নামাজে জানাজায় সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামার যে দৃশ্য ছিল তা চট্টগ্রামের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। ধর্মীয় ও রীতিনীতি অনুযায়ী সোমবার মৃত্যুর ৪ দিনের মাথায় তাঁর কুলখানির আয়োজন করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। এ উপলক্ষে নগরবাসীকে মেজবানি খাওয়াতে জবাই করা হয় ১২৭টি গরু। এছাড়া হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য ছাগল ও মুরগি জবাই করা হয় বহু। আয়োজনটি হয় শুধু রীমা কনভেনশন সেন্টারে। অতিথি টার্গেট করা হয়েছিল ১০ হাজার। কিন্তু সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকে ভিড় জমান। এতে রীমা কনভেনশন সম্মুখস্থ পুরো শহীদ সাইফুদ্দিন সড়কটিতে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। এই কনভেনশন হলে একযোগে এক ব্যাচে প্রায় ৩ হাজার মানুষকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। বেলা ১টার দিকে খাওয়ানো শুরু হয়ে যায়। এদিকে অতিথিদের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকে। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে সৃষ্টি হয় বড় ধরনের চাপ। এর আগে এক ব্যাচের খাবার সম্পন্ন হয়। দ্বিতীয় ব্যাচ খাওয়ানোর জন্য কনভেনশন হলের লোহার গেটটি খোলা হয়। কনভেনশন হলটির অবস্থান মূল সড়ক থেকে বেশ নিচুতে অবস্থিত। হলের গেট খুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢোকার জন্য অতিথিদের মাঝে শুরু হয় তাড়াহুড়ো। সড়ক থেকে নি¤œমুখী পথে নামতে গিয়ে পেছনে অবস্থানরত বিপুলসংখ্যক মানুষের ধাক্কায় সামনের সারির অনেকেই পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে পেছনে থাকা অনেকে একজনের ওপর একজন পড়তে থাকে। এ অবস্থায় বিপুলসংখ্যক মানুষের অগ্রমুখিতা অব্যাহত থাকে। ফলে যারা আগে পড়ে গিয়েছিল তাদের মধ্যে অর্ধশতাধিক পদদলিত হয়। এর মধ্যে ঘটনাস্থলে ৫ জন প্রাণ হারায়। অবশিষ্ট ৫ জনকে চমেক হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়। আহতদের মধ্যে ৩০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ২২ জনকে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তন্মধ্যে নিউরো বিভাগে ভর্তি করা ৫ জনের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। চমেক সূত্রে জানানো হয়েছে, নিহতের সংখ্যা বাড়তেও পারে। তবে তাদের বাঁচানোর জন্য যাবতীয় জরুরী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে, মহিউদ্দিনের জন্য আয়োজিত মুরাদপুরের এন মোহাম্মদ কনভেনশন সেন্টারটিতে একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক ভাংচুর চালায়। কারণ হিসেবে জানা গেছে একই ঘটনা। প্রচ- ভিড়ের চাপে হলে প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বিক্ষুব্ধ ও উচ্ছৃঙ্খল এসব যুবক কনভেনশন হলটির সম্মুখভাগে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এতে হলটির বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে হল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। এছাড়া যেসব কনভেনশন হলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানি অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছেÑ কিং অব চিটাগাং, কে স্কয়ার, গোল্ডেন টাচ, কিশলয়, সুইস পার্ক, স্মরণিকা, কেবি কনভেনশন হল, ভিআইপি বাঙ্ক্যুয়েট ও সাগরিকা কনভেনশন ক্লাব। এছাড়াও নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের বিভিন্ন এতিমখানা ও দরগায় আলাদাভাবে মেজবানির খাবার বিতরণ করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি কনভেনশন হলে জনমানুষের ব্যাপক আধিক্য ছিল। মহিউদ্দিনের মৃত্যুর পর এমনিতেই পুরো চট্টগ্রাম শোকে মুহ্যমান। তাঁর কুলখানিতে নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ও আহত হওয়ার ঘটনায় নগরজুড়ে বেদনাবিধুর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
×