ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অপরাধীকে না ধরতে দৈনিক এক হাজার টাকা

প্রকাশিত: ২১:৪১, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭

অপরাধীকে না ধরতে দৈনিক এক হাজার টাকা

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ টেকনাফে অপরাধীদের প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করার জন্য পুলিশের খরচ দৈনিক হাজার টাকা বলে জানা গেছে। ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য, ধর্ষণ, হত্যা ও অস্ত্র মামলার পলাতক কিছু আসামিকে গ্রেফতার না করতে টেকনাফ থানার এক শ্রেণীর অসৎ কর্মকর্তার সঙ্গে চুক্তি করেছে অপরাধীরা। তবে ইয়াবা কারবারি যারা ইয়াবা বেচাবিক্রি করছে, তাদের চুক্তি প্রতি মাসে জনপ্রতি এক লক্ষ টাকা বলে অভিযোগ রয়েছে। ওসব আসামি ও ইয়াবা কারবারির কাছ থেকে মাস শেষ হওয়ার আগেই থানার কথিত ক্যশিয়ার (চাঁদা সংগ্রহকারী) নির্ধারিত স্থানে গিয়ে টাকা তুলে নিয়ে আসে বলে জানা গেছে। সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ থানায় বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামির সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। এদের অনেকে প্রকাশ্যে ঘুরলেও কিন্তু পুলিশের খাতায় সর্বদা তারা পলাতক। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ওয়ারেন্ট তামিল করার জন্য তাগাদা দেয়া হলেও ওই পুলিশ কর্মকর্তারা সরকারী গাড়ি ও জ্বালানি খরচ করে প্রতিরাতে টহলে বের হচ্ছে। তবুও চুনিপুঠি ছাড়া ইয়াবা গডফাদারসহ কুখ্যাত আসামিদের ধরে থানায় আনতে পারছেনা পুলিশ। এদিকে প্রায় দশ মাস ধরে টেকনাফের চাঞ্চল্যকর সোলতান আহমদ হত্যা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। অথচ পুলিশ তাদের দেখেও যেন দেখেনা। পিবিআই অভিযান চালিয়ে রবিবার ঐ মামলার প্রধান আসামি দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মাহমুদুর রহমানের পুত্র মহিদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে। মহিদুর গ্রেফতার হওয়ার পর অন্য পলাতক আসামি মাহমুদুর রহমান, এহসান উদ্দিন, নাছির উদ্দিন, নেওয়াজ উদ্দিন বাপ্পি, আবদুর রহিম প্রকাশ বন্দুইক্যা এবং শফিকরা বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পিবিআই সূত্র জানায়, ব্যবসায়ী সোলতান আহমদ প্রকাশ চামড়া বাদশা হত্যা মামলার সকল আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক পলাতক আসামি জানায়, টেকনাফ পুলিশকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা করে দিয়ে আয়-রোজগার করে ভীতি ছাড়া সংসার চালাচ্ছি। ঘরে পুলিশ আসবে বলে ভয় থাকেনা। আসলেও নেতারা ফোন করলে কাজ হয়। সূত্র জানায়, টেকনাফে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল সামলাতে প্রশাসন হিমশিম খেলেও টেকনাফ থানার কতিপয় ধান্ধাবাজ পুলিশ ইয়াবা সম্রাট ও দুস্কৃতিকারীদের (পলাতক) কাছ থেকে টাকা আদায়ে মশগুল থাকে প্রতিনিয়ত। ওই অসৎ কর্মকর্তাদের কারণে মিয়ানমার থেকে টেকনাফে ইয়াবার চালান প্রবেশ রোধ করা যাচ্ছেনা মোটেও। চিহ্নিত দুস্কৃতকারীরাও ওসব পুলিশকে ম্যানেজ করে নানা অপরাধ করে চলছে।
×