ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীর মেধাবী তরুণ তারেখের লেখাপড়া অনিশ্চয়তার মুখে

প্রকাশিত: ০০:০২, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭

নীলফামারীর মেধাবী তরুণ তারেখের লেখাপড়া অনিশ্চয়তার মুখে

স্টাফ রির্পোটার, নীলফামারী ॥ মানুষের কাছে হাত পেতে অর্থ জোগাড় করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে অনার্সে ভর্তি হতে পাড়লেও লেখাপড়া খরচ বহনে অনিশ্চয়তার কবলে পড়েছে তারেখ ইসলাম নামের এক মেধাবী ছাত্র। অসহায় ভ্যান চালক বাবা ও মা তাদের মেধাবী ছেলের চিন্তায় ভেঙে পড়েছে। তারেখ ইসলাম নীলফামারী জেলা সদরের সংগলশী ইউনিয়নের বড় সংগলশী কাচারীপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক আবেদ আলীর ছেলে। তার সামান্য আয়ে চলে তাদের ছয় সদস্যের পরিবার। মেধাবী তারেখ এবারের ভর্তিযুদ্ধের পরীক্ষায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে (অনার্স) ই ওয়ান ইউনিটে মেধা তালিকার ৩২ তম অবস্থান দখল করে (রোল ১৯৫০২)। ভর্তির টাকা হাতপেতে জোগার করে ৭ ডিসেম্বর ভর্তি হয়। আগামী নতুন বছরের জানুয়ারী হতে ক্লাশ শুরু হবে। কোথায় থাকবে, কি খাবে, বই কিনবে কি ভাবে এ্ই চিন্তায়তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। রবিবার সকালে এমন অবস্থায় তারেখ ও তার বাবা নীলফামারীতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করে তাদের অসহাত্বের কথা তুলে ধরে। তারেখ জানায়, ২০১৭ সালে দিনাজপুর বোর্ডের অধিনে নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় (বিজ্ঞান) অংশ নিয়ে ৪ দশমিক ০৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। একই বোর্ডের অধিনে ২০১৫ সালে জেলা সদরের সোনারায় সংগলশী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ- ৫ পায় সে। প্রাথমিক থেকে কলেজ পর্যন্ত শিক্ষকদের সহযোগিতায় বই খাতা যোগার করে পাড়ি দিয়েছে ওই পথ। বেতন ছাড়া প্রাইভেট পড়িয়েছেন অনেক শিক্ষক। তারেখ বলেন, ’চার ভাই বোনের মধ্যে সে সবার বড়। মেজো ভাই সুমন আহমেদ পড়ছে নবম শ্রেণীতে, বোন সুমি আক্তার ষষ্ঠ শ্রেণী আর সবার ছোট ভাই স্বপন ইসলাম পড়ছে চতুর্থ শ্রেণীতে। তারেখের মা ছবিয়া বেগম বড় ছেলের লিখাপড়া খরচের চিন্তায় শর্যাসায়ি হয়ে পড়েছ। তারেখের বাবা আবেদ আলী বলেন, আমি নিজে লেখাপড়া জানি না, তিন শতাংশ ভিটে আর একখানা রিক্সাভ্যানই আমার সম্বল। আমার একার আয়ে ছেলে মেয়ের ভরণ পোষন দেয়ার পর লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারি না। এ জন্য তারেখের মা এলাকার একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাসিক দুইশ টাকায় কাজ করেন। স্কুল বন্ধ থাকলে দিনমজুরী করে লেখাপড়ার কিছু খরচ জোগার করেছে তারেখ নিজে। আবার আমি কখনো অসুস্থ্য হলে আমার রিক্সাভ্যানটি চালিয়ে সংসারে সহযোগিতা করেছে সে। তিনি জানান বর্তমানে হাতে কোন টাকা নেই। সামনের মাসে ছেলেকে রাজশাহীতে যেতে হবে। তার থাকা,খাওয়া বইপত্র কেনার কোন টাকা জোগার করতে পারিনি। তাই তিনি তার ছেলের লিখাপড়ার খরচ বহনের সহযোগীতা চেয়েছেন দেশের মানুষজনের কাছে।মেধাবী তারেখের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭২৩৮৬১০৭১ মোবাইল নম্বরে।
×