ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গণ বিশ্ববিদ্যালয়

স্মৃতিসৌধে বিজয়ের আড্ডা -মুন্নী আক্তার

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭

স্মৃতিসৌধে বিজয়ের আড্ডা  -মুন্নী আক্তার

১৯৭১ সালে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের সোনার বাংলাদেশ। ৩০ লাখ বীর শহীদ আর হাজারো মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়েছে এই বিজয়। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। জাতি হিসেবে আমরা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ। আর সেই আবেগ যদি হয় দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় নিয়ে তাহলে সেটা কোন পর্যায়ে পৌঁছায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বছর ঘুরে আবার এলো বিজয়ের মাস। ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের মহান বিজয় দিবস। আর এ বিজয়ের মাসে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পালন করে বিজয় দিবসের নানা আয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আড্ডায় এখন আলোচনার প্রধান বিষয় বিজয়ের মাস। ক্লাস ও পরীক্ষার ফাঁকে ক্যাম্পাস চত্বর কিংবা ক্যান্টিন আড্ডায় বার বার উঠে আসছে মুক্তিযুদ্ধ, বিজয় দিবসের ইতিহাস, পটভূমি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁধা। এমনই এক আড্ডা হলো সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। মুক্তিযুদ্ধে নিহত মহান বীর শহীদের স্মৃতিতে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ গণবিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাশেই অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এই তরুণরা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি কিন্তু তাদের রক্তে রয়েছে অকৃত্রিম দেশপ্রেম আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই শিক্ষার্থীরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে শপথ নিয়েই তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করেছে আর বিজয়ের মাসে তাই তাদের আড্ডাটা হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। তাদের একেকজনের ভাষায় বিজয় দিবসের আবেগ এক এক রকম। সিহাবের ভাষায়, ‘বিজয় মানে নিরাপদে ঘর থেকে বের হয়ে আবার নিরাপদে ফিরে আসা।’ আবার ইমরান হাসান জনির ভাষায়, ‘বিজয় মানে যাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে এ স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তাদের কথা চিন্তা করে সেই আলোকে জীবন পরিচালনা করা, দেশের জন্য কাজ করা।’ আর নিশুর ভাষায়, বিজয় দিবস মানে একটা চেতনা যা লালন করে প্রতিটি বাঙালী তাদের অন্তরে।’ মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধের মুক্ত মঞ্চে বসে কথা হচ্ছিল সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে, এদের সঙ্গে আরও যোগ দিলেন সামিয়া ইসলাম উপমা, এস এম আহমেদ মনির, সুরাইয়া পারভীন ইতি, মিষ্টি রহমান, শাহীনুর আলম। মিষ্টির কথায়, বিজয় দিবস মানে পতাকা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি আর মুক্ত পাখির মতো ডানা মেলে নীল আকাশে ছুটে চলা।’ কথায় কথায় এভাবেই জমে উঠে তাদের আড্ডা। আড্ডা চলতে চলতে সময় বয়ে যায়, প্রসঙ্গক্রমে কথা হয় আমাদের প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তি নিয়ে। শাহীনুরের মতে, ‘প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তির পাল্লাই বেশি ভারি। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের এ অল্প কয়েকদিনে আমাদের অর্জন অনেক বেশি। আমরা ধীরে ধীরে বিশ্বের মানচিত্রে নিজেদের গৌরবান্বিত একটি জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি নানাভাবে।’ কিন্তু মনির আর সামিয়া ইসলাম উপমা তর্ক জুড়ে দেন মুন্নীর সঙ্গে। মনির বলেন, ‘আমাদের অর্জন দেখে আমাদের চিরশত্রুরাও এখন আমাদের সমীহ করে। তবে এখানেই থেকে গেলে চলবে না আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। সেটা অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে লালন করে। কেননা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই আমাদের পারে ্এই দেশটাকে সঠিক পথে চালিত করতে। তবে যে যাই বলুক না কেন সবার প্রত্যাশার জায়গা একটাই সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
×