ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পর্তুগীজ তারকা রোনাল্ডোকে ম্যারাডোনার জবাব!

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭

পর্তুগীজ তারকা রোনাল্ডোকে ম্যারাডোনার জবাব!

এমবাপেকে কিনতে রিয়াল মাদ্রিদকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপের নায়ক স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফুটবলারদের ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফির নাম ব্যালন ডি’অর। এই ট্রফিটিকে এখন যেন একেবারেই নিজেদের করে নিয়েছেন লিওনেল মেসি আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। কেননা গত এক দশক ধরেই যে ব্যালন ডি’অর ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন তারা। সম্প্রতি এই পুরস্কার নিজের শোকেসে তুলেছেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ সুপারস্টার রোনাল্ডো। সেই সঙ্গে মেসির পঞ্চম ব্যালন ডি’অর জয়ের রেকর্ডেও ভাগ বসান সি আর সেভেন। আর এই পুরস্কার জয়ের পরই নিজেকে ইতিহাসের সেরা ফুটবলার হিসেবে ‘ঘোষণা’ করেন ৩২ বছর বয়সী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এরপর থেকেই এ নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। রোনাল্ডোর ভক্ত-অনুরাগীরা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নিলেও ফুটবলপ্রেমীদের অনেকেই তা মানতে নারাজ। আর্জেন্টাইন ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনাও তার কড়া সমালোচনা করেছেন। শুধু তাই নয়, সুযোগ থাকলে রোনাল্ডো এবং তার স্বদেশী লিওনেল মেসির চেয়েও বেশি পুরস্কার নিজের শোকেসে তুলতেন বলে এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন ম্যারাডোনা। এ বিষয়ে রোনাল্ডোর কড়া সমালোচনা করে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী এই কিংবদন্তি বলেন, ‘ওকে (রোনাল্ডো) এসব কৌতুক করতে নিষেধ করুন। আমার সময়ে সুযোগ থাকলে মেসি-রোনাল্ডোর চেয়েও বেশি ব্যালন ডি’অর জিততাম আমি।’ তাহলে কী ব্যালন ডি’অর না জিততে পারার আফসোসটা এখনও রয়ে গেছে আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপের নায়কের? সেই প্রশ্নটাও কিন্তু এখন উঁকি দিচ্ছে ফুটবলবোদ্ধাদের মনে। শুধু ম্যারাডোনা কেন? তার সময়ের আরেক ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলেও যে ছুঁতে পারেননি স্বপ্নের এই ট্রফি। তবে ফুটবলের দুই জীবন্ত কিংবদন্তি কেন ব্যালন ডি’অর জয়ের স্বাদ পাননি? এই তথ্যটা অবশ্য অনেকের কাছেই অজানা। ১৯৫৬ সাল থেকে চালু হয় ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের। ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর সম্পাদক গ্যাব্রিয়েল হান্তের সৌজন্যে। তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্রীড়া সাংবাদিকদের ভোটে নির্বাচিত হবেন ইউরোপের সেরা ফুটবলার। প্রথমদিকে এই পুরস্কার পেতে একজনকে দুটি শর্ত মানতে হতো। প্রথমত তাকে ইউরোপীয় হতে হবে। দ্বিতীয়ত সেই ফুটবলারকে ইউরোপের কোন লীগে খেলতে হতো। মূলত এসব নিয়মের কারণেই ফুটবলের ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের এই পুরস্কারটি কখনই হাতে নিতে পারেননি ফুটবলের দুই জীবন্ত কিংবদন্তি পেলে এবং ম্যারাডোনা। ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে কখনও ইউরোপে খেলতেই আসেননি। তাহলে ম্যারাডোনা? আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ইউরোপ মাতালেও দক্ষিণ আমেরিকান হওয়ায় এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হননি। এরপর অবশ্য অনেক পরিবর্তন ঘটে এই পুরস্কারের। ১৯৯৫ সাল থেকে ইউরোপিয়ান লীগে খেলা অ-ইউরোপীয় খেলোয়াড়দের জন্যও উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ব্যালন ডি’অর। ২০০৭ সাল থেকে নিয়ম করা হয় ইউরোপ এবং ইউরোপের বাইরের যে কোন ফুটবলারই মনোনীত হবেন এই পুরস্কারের জন্য। ২০১০ সাল থেকে ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারের সঙ্গে এক হয়ে এর নামকরণ করা হয় ফিফা-ব্যালন ডি’অর। তবে গত বছর থেকে আবারও আলাদা হয়ে যায় ফিফা এবং ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকী। এদিকে সময়ের সেরা তারকা কিলিয়ান এমবাপেকে কিনতে রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু রোনাল্ডো থাকায় তরুণ ফরোয়ার্ডকে দলে টানেনি স্পেনের সফলতম ক্লাবটি। এর ফলে শেষ পর্যন্ত ধারে মোনাকো ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেন কিলিয়ান এমবাপে। প্যারিসের ক্লাবটিতে যোগ দেয়ার পর থেকেই প্রথম একাদশের নিয়মিত সদস্য হয়ে উঠেছেন এমবাপে। ২০১৬-১৭ মৌসুমে লীগ ওয়ান জয়ী ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে খেলা মোনাকোর হয়ে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স উপহার দেয়া এমবাপে এবারের ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে সপ্তম হন। এমবাপের প্রসঙ্গে ম্যারাডোনা বলেন, ‘আমার কাছে ফুটবল বিশ্বে এমবাপে বড় এক চমক। আমি মনে করি, সে অনেক খেলোয়াড়কেই ছাপিয়ে যাবে। পেরেজ কেন তাকে চুক্তিভুক্ত করেনি? ফিফায় আমাদের যখন দেখা হয়েছিল তখন আমি তাকে বলেছিলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন, তুমি তো জানো আমাদের ক্রিশ্চিয়ানো আছে।’
×