ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

২০১৩ বিপিএলে যেভাবে স্পট ফিক্সিং হয়েছিল

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭

২০১৩ বিপিএলে যেভাবে স্পট ফিক্সিং হয়েছিল

অনলাইন ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানের দাবি, অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের চেষ্টা চলেছে। দীর্ঘমেয়াদি অনুসন্ধান শেষে সংবাদমাধ্যমটি দুই বাজিকরের নামও প্রকাশ করেছে। সোবার্স জোবান ও প্রিয়াঙ্ক সাক্সেনা নামের সেই দুই বাজিকর নাকি বিগব্যাশ, আইপিএল, বিপিএলেও স্পট ফিক্সিং করে থাকেন। নতুন করে এই বোমা ফাটার পর মুখ খুললেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার ডার্ক ন্যানেস। তাঁর দাবি, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এমন কিছু ম্যাচ তিনি খেলেছেন, যেখানে তাঁর মনে হয়েছে, সেখানে আগে থেকেই বোঝাপড়া করা ছিল। বিপিএলের সে আসরেই স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। বিপিএলে ম্যাচের সময় কিছু মুহূর্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ন্যানেস। বর্তমানে বিলুপ্ত সিলেট রয়্যালসের হয়ে খেলা এই পেসারের ভাষ্য, ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে এ রকম কিছু ব্যাপার ঘটেছে। প্রথমে মালিকেরা মাঠে ঢুকে পড়তেন। যদিও তাঁদের মাঠে প্রবেশ করার অনুমতি নেই, কিন্তু সঙ্গে থাকা টিম ম্যানেজার গিয়ে তাঁদের জিজ্ঞেস করতেন, “এখন কী করব”—তারপর কোচের কাছে যেতেন। নিরাপত্তাকর্মীদের নাভিশ্বাস উঠে গেলও এটা থামেনি। মালিকেরা সব সময় ফোন নিয়ে বসে থাকতেন। তাঁরা সব সময় কোচের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাইতেন।’ পার্থে তৃতীয় টেস্ট চলাকালে ওয়াকার গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন ৪১ বছর বয়সী বাঁহাতি এই পেসার। তিনি সেখানে কাজ করছেন ধারাভাষ্যকার হিসেবে। ২০১৩ সালে সিলেট রয়্যালসের হয়ে বিপিএলে খেলেছেন ন্যানেস। আসরটিতে সবার চোখের সামনে কীভাবে ফিক্সিং হয়, সেই অভিজ্ঞতা তাঁর তখনই হয়েছে, ‘স্পটাররা (ফিক্সার) দর্শকদের মধ্য থাকত। তাদের জামার হাতায় থাকত মাইক্রোফোন এবং কোমরে ১০টির মতো মোবাইল ফোন। কখনো (ম্যাচে) কিছু ঘটলে আস্তিন গুটিয়ে তারা মাইক্রোফোনে কথা বলত। তারা যা খুশি তা-ই করার সময় পেত। কারণ, নিরাপত্তাকর্মীরা তো তাদের বের করে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ক্ষমতা রাখত না। আসলে বাংলাদেশে এটাও সম্ভব না।’ কেবল বিপিএলেই নয়, ন্যানেস কথা বলেছেন আইপিএলের স্পট ফিক্সিং নিয়েও। এ বছরই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের ভারত সফরের সময় তাঁর এক ব্যক্তির সঙ্গে একটি বারে পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ব্যক্তি ন্যানেসকে বলেন, ‘ওহ, তোমার জন্য আমার ৫০ হাজার ডলার ক্ষতি হয়েছে।’ ন্যানেসকে পরে সেই ব্যক্তি আইপিএলে চেন্নাই সুপারকিংস ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের মধ্যকার একটি ম্যাচের কথা মনে করিয়ে দেন। সে ম্যাচে চেন্নাইয়ের হয়ে খেলেছিলেন এই অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার। তাঁকে নিয়ে বাজি ধরা হয়েছিল—ওভারে তিনি ১৩/১৪ রানের চেয়ে কম দেবেন। কিন্তু ন্যানেসের একটি নো বলই নাকি সেই জুয়াড়িকে ক্ষতির মুখে ফেলেছিল, ‘আমি সে ম্যাচে প্রথম ওভারটা করেছিলাম। সেই ওভারে একটি নো বল করেছিলাম, যেটি ধোনির (উইকেটরক্ষক) মাথার ওপর দিয়ে গিয়েছিল। আমি টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে মাত্র দুটি নো বল করেছি; যার একটি সে ম্যাচে। পরের বলটি ফ্রি হিট ছিল। সেটা মেরেছিল কলকাতার ভারতীয় ব্যাটসম্যান মানবিন্দর বিসলা।’ বিপিএলে ফিক্সিং নতুন কিছু নয়। ২০১৩ সালের আসরে স্পট ফিক্সিংয়ের কথা স্বীকার করেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিতর্কটা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার কারণ সানের সেই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। যেখানে বিপিএল নিয়ে বাজিকর প্রিয়াঙ্ক সাক্সেনার দাবি, ‘আপনি বাংলাদেশে আগ্রহী? সবকিছু পাবেন। চারটি সেশনই। হার এবং জিত।’ শুধু তা-ই নয়, ছদ্মবেশী প্রতিবেদককে প্রিয়াঙ্ক আরও বলেন, ‘বিপিএলে ফিক্সিং করতে খরচ হবে “১ লাখ ৭৫ হাজার পাউন্ড। এই সন্ধ্যার মধ্যে আমাকে একটু খোঁজখবর নিতে দিন। আমি সবকিছু সুন্দর করে পাতিয়ে ফেলব”।’ সূত্র: জি নিউজ
×