ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিমুখী নীতিতে ক্ষিপ্ত আসিফ

প্রকাশিত: ০৫:১২, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭

দ্বিমুখী নীতিতে ক্ষিপ্ত আসিফ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ৭ বছর আগে সারাবিশ্বকে তোলপাড় করেছিল লর্ডস টেস্টে পাকিস্তানী তিন ক্রিকেটারের স্পট ফিক্সিংয়ে যুক্ত থাকার ঘটনা। পরে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ ও সবধরনের ক্রিকেট থেকে নিষেধাজ্ঞা পান মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ আসিফ ও সালমান বাট। সবার আগে ক্রিকেটে ফিরে তরুণ পেসার আমির বর্তমানে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের নিয়মিত সদস্য হয়ে গেছেন। বাট ও আসিফ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেছেন ক্রিকেটে। কিন্তু দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত জাতীয় দলে ফেরার কোন রাস্তা পাননি আসিফ। পিসিবির অধীনে যতগুলো দল আছে কোনটিতেই তাকে ডাকা হয়নি। পিসিবির দ্বিমুখী নীতিই এর কারণ বলে মনে করছেন আসিফ। দারুণ ক্ষুব্ধ আসিফ অভিযোগ করেছেন আজ পর্যন্ত তার ফিটনেস কিংবা ফর্ম এবং দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য বোর্ড কিংবা জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে ডাকা হয়নি। ৫ বছরের ক্রিকেট নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে গত বছর ফেরেন আসিফ। এরপর ঘরোয়া আসরে খেলতে শুরু করেন। কায়েদে আজম ট্রফিতে তার দুর্দান্ত এক স্পেলের কারণেই ফাইনালে ওয়াপদা জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। পুরো আসরেই ছন্দে আছেন এমন ইঙ্গিত দিতে পেরেছেন। এ মৌসুমেও তিনি দারুণ খেলছেন। কায়েদে আজম ট্রফিতে একটি ম্যাচের এক সেশনেই ৬ উইকেট শিকার করে ধসিয়ে দেন শক্তিশালী কেআরএলকে। নিজের বিষয়ে আসিফ বলেন, ‘আমি দুই মৌসুমেই পারফর্মেন্স দেখিয়েছি এবং আমি খুব ফিট। আমি পিসিবির অধীনে ফিটনেস টেস্ট এবং প্রয়োজনীয় কঠোর অনুশীলন করতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু বোর্ড যেমন মনোভাব দেখাচ্ছে সেটাকে আমি দ্বিমুখী নীতিই বলব।’ একই অপরাধে আমিরও সাজা ভোগ করেছেন। কিন্তু তিনি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফিরে এসেছেন জাতীয় দলে। আসিফের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। এমনকি তিনি কেমন পারফর্মেন্স দেখাচ্ছেন সেদিকেও ভ্রƒক্ষেপ নেই পিসিবির। এ বিষয়ে আসিফের কণ্ঠে অনুযোগের সুর, ‘তারা মোহাম্মদ আমিরকে পাকিস্তান দলে ফেরার বিষয়টি সাদরে গ্রহণ করলো কোন ধরনের প্রত্যাবর্তন করার মতো পারফর্মেন্স প্রদর্শনের আগেই। তাকে যথেষ্ট সহায়তাও দিল। কিন্তু আমার এবং বাটের ক্ষেত্রে যেন আমাদের সংস্পর্শেই আসতে চায় না তারা। আমাদের জাতীয় দলে ফেরার ক্ষেত্রে কোন সুযোগই যেন দিতে চায় না তারা। কিন্তু আমরা অনেক ভাল নৈপুণ্য দেখিয়ে যাচ্ছি।’ ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে যুক্ত অনেক ক্রিকেটারের ক্ষেত্রেই পিসিবির আচরণে আছে ভিন্নতা। একেক জনের সঙ্গে একেক রকম আচরণ করে তারা। কিন্তু আসিফ এমনটা মেনে নিতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘৭ বছর আগে আমি যা করেছিলাম সেটা ছিল ভুল এবং সেজন্য আমি অনুতাপ করি। আমি আমার শাস্তির পুরোটাই ভোগ করেছি। আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের আওতায় যা যা করা প্রয়োজন ছিল সবকিছুই করেছি। কিন্তু এরপরও বোর্ডে কিংবা জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে এমন কেউ নেই যে আমাকে ডাকবে এবং আমার ফিটনেস ও ফর্ম পরখ করবে।’ আসিফ মনে করেন পিসিবির উচিত সব শাস্তিভোগ করা ক্রিকেটারের সঙ্গে সমান আচরণ করা। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘একেকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে পারে না তারা। আমি বিস্তারিত কিছু বলতে চাইছি না, কিন্তু আমরা তিনজনই ৭ বছর আগে ইংল্যান্ডে যা ঘটেছিল সেটার জন্য সমানভাবে দায়ী ছিলাম।’ ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়েছিলেন অধিনায়ক বাট, আসিফ ও আমির। সেজন্য তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ-ও দেয়া হয়েছিল। তবে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর বাট এখন ওয়াপদাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং কায়েদে আজম ট্রফিও জিতিয়েছেন। এ বছরও দলটি শিরোপা ধরে রেখেছে তার কারণে। এ কারণে বাট নিজেও অনেকবার তার হতাশা ব্যক্ত করেছেন পিসিবির অধীনে কোন ক্যাম্পে ডাক না পাওয়ায়।
×