ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোহালিকে দু’দিকই সামলে চলার পরামর্শ দিলেন আজহার

প্রকাশিত: ১৯:৫৭, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

কোহালিকে দু’দিকই সামলে চলার পরামর্শ দিলেন আজহার

অনলাইন ডেস্ক ॥ বিরাট-অনুষ্কার আগে ছিলেন তাঁরা। ভারতীয় ক্রিকেটের ‘হট কাপ্ল’। মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন এবং তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সঙ্গীতা বিজলানি-কে নিয়ে ছিয়ানব্বই বিশ্বকাপের সময়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ভারতীয় ক্রিকেট মহল। মিডিয়া সারাক্ষণ তাঁদের অনুসরণ করতে চাইত। খুব জনপ্রিয় স্লোগান হয়ে গিয়েছিল, ‘বিজলি গিরি, আজহার চমকা’। এতটাই কৌতূহলের কেন্দ্রে থাকতেন আজহার ও প্রাক্তন বলিউড ‘হার্টথ্রব’। এতদিন পর নিজের পুরনো সম্পর্ক নিয়ে বেশি কথা বলতে চান না। তার পরেও আজহার বলেছেন কোহালি আর অনুষ্কাকে নিয়ে বিভিন্ন উপদেশমূলক কথা। ক্রিকেট ও বলিউডের জুটি: দু’টোই সবচেয়ে জনপ্রিয় জগত আমাদের দেশে। তাই বেশির ভাগ লোকের নজর পড়তে বাধ্য। ভেবে দেখুন না, সবচেয়ে বেশি করে লোকে দেখে ক্রিকেট আর সিনেমা। তাই সব সময় অনুসরণ করবেই লোকে। এখন তো আরওই নানা মাধ্যম এসে পড়েছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট তিনি কী ভাবে সামলাতেন: আলাদা কোনও টোটকা ছিল না। একটা জিনিস মাথায় রাখার চেষ্টা করতাম যে, সফল হয়েছি বলেই লোকে খোঁজ নিচ্ছে। মিডিয়া কৌতূহল দেখাচ্ছে। সব সময় হয়তো মাথা ঠান্ডা রাখা সম্ভব হবে না। কিছু কিছু মুহূর্ত থাকেই, যেগুলো একান্তই ব্যক্তিগত রাখতে চায় সকলে। সেই সময়ে কেউ যদি এসে ছবি তোলার জন্য জোরজার করে, রাগ হতে বাধ্য। তবে আমার মনে হয়, নিজেকে ঠান্ডা রাখতে পারলেই ভাল। সেলিব্রিটি হলে এগুলোও সামলাতে হবে। ব্যক্তিগত বৃত্তের বিতর্ক: এটা নিয়ে তর্ক করলে তো চলতেই থাকবে। আমি বলব, কেন আমার ব্যক্তিগত বৃত্তে মিডিয়া প্রবেশ করতে চাইছে। আর মিডিয়া যা করার করতেই থাকবে। ভারতে আমি তো সেটাই দেখে এসেছি। আমি যখন ক্রিকেট খেলতাম, তখন হয়েছে। এখনও তা-ই হচ্ছে। বলিউডের তারকাদের নিয়েও তো একই জিনিস হয়। আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে, সফল বা বিখ্যাত হলে এগুলোও তার সঙ্গে সঙ্গে চলে আসবে। আমাদের দেশে সেটাই নিয়ম। এটা নিয়ে মাঝেমধ্যে রাগ হবে ঠিকই, হয়তো প্রশ্নও করতে ইচ্ছে হবে যে, কেন আমার পিছনে লোকে ছুটছে। কিন্তু আটকানোও কঠিন হবে। নিরাপত্তার বলয় থাকে বলে কাছাকাছি পৌঁছনো কঠিন হয়। কিন্তু আকর্ষণের কেন্দ্র থেকে, প্রচারমাধ্যমের নজর থেকে সরানোর উপায় কোথায়? বিরাট-অনুষ্কার বিয়ে: আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে চাই ওদের। বিয়ের ছবি দেখেছি, খুব সুন্দর লেগেছে। ওদের সুখ, শান্তি কামনা করি এবং প্রার্থনা করি যেন ওরা সদা সুখী থাকে। আরও একটা কথা বলতে চাই যে, ওরা নিজেদের জগতে খুবই সফল দুই ব্যক্তি। প্রার্থনা করি, ওরা যেন আরও সাফল্য পায়। পেশায় চাপ আসে কি না: নতুন করে কী আর চাপ আসবে? ইতিমধ্যেই তো ওরা অনেক চাপ সামলে নিয়েছে। শুধুমাত্র দু’টো বিখ্যাত ব্যক্তি বিয়ে করেছে বলে তাদের নিজেদের পেশায় চাপ আরও বেড়ে যাবে, সেটা আমি মানতে নারাজ। এই যে বিরাট-অনুষ্কার বিয়ে নিয়ে সারা দেশে এত মাতামাতি হচ্ছে, সেটা ওরাও খুব ভাল করে জানে, কেন হচ্ছে। কারণ, ওরা দু’জনে খুব সফল ব্যক্তিত্ব। মিডিয়া এবং মানুষের কৌতূহলের কেন্দ্রে ওরা আগেও থেকেছে। হয়তো বিয়ের সময় সেই আকর্ষণের মাত্রাটা আরও বেড়ে গিয়েছে। এটা নতুন কোনও অভিজ্ঞতা নয় ওদের কাছে। আমি নিশ্চিত, এই কোলাহল সামলে ওরা সফল ভাবে এগিয়ে যাবে। বিরাটকে প্রাক্তন অধিনায়কের টিপ্স: আমার টিপ্স দেওয়া লাগবে কি? মনে হয় না। বিরাটকে দেখে বেশ পরিণতই মনে হচ্ছে এখন। মাঠে দাঁড়িয়ে কত কঠিন পরিস্থিতি একার হাতে সামলাচ্ছে। আমি নিশ্চিত, জনতার এই বেড়ে যাওয়া আগ্রহটাও ও ঠিকঠাক ভাবে সামলাবে। আমি শুধু একটাই কথা বলব, সব দিকে ভারসাম্য রাখার দিকে নজর দাও। ক্রিকেট মাঠ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই বা তার চেয়েও হয়তো বেশি গুরুত্বপূর্ণ জীবনের বাইশ গজ। দু’টো দিকই সামলাতে হবে। কোনওটাকে হেলাফেলা করা যাবে না। ক্রিকেট না সংসার, কোনটা কঠিন: কোনও তুলনাই চলে না (হাসি)। সংসার অনেক কঠিন। ক্রিকেট মাঠের চ্যালেঞ্জগুলোকে বিরাটের খুব ছোটখাটো মনে হতে পারে এখন (হাসি)। সংসারের ইনিংসটা অনেক ধরে-ধরে খেলতে হয়। আসলে আমরা তো তরুণ বয়স থেকে বাইরে বাইরেই থাকি ক্রিকেট খেলার জন্য। ঘরে সময় দেওয়ার ব্যাপারটা হয়ই না। বিয়ের পরে সেটা করলে চলবে না। দু’টো জগতের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে হয়। তবে ওই যে বললাম, আমি পুরোপুরি নিশ্চিত ওরা সেটা জানে এবং করেও দেখাবে। আমি শুধু বলব, খুব সুন্দর একটা ‘কাপ্ল’ তোমরা। অনেক শুভেচ্ছা রইল। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×