ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আফতাব নগরে খুন

কালো জিন্সের প্যান্ট ও টি-শার্ট পরা চার যুবককে খুঁজছে পুলিশ

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

কালো জিন্সের প্যান্ট ও টি-শার্ট পরা চার যুবককে খুঁজছে পুলিশ

নিয়াজ আহমেদ লাবু ॥ রাজধানীর আফতাব নগরে নিজ ফ্ল্যাটে ব্যবসায়ী একেএম মনজিল হক (৩০) খুনের ঘটনায় পুলিশ কালো জিন্স প্যান্ট ও কালো টি-শার্ট পরা চার যুবককে খুঁজছে। পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের পাশের ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করেছে। ইতোমধ্যে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। এদিকে ঘটনার পর শারমিন আক্তার ওরফে নিশি নামে এক তরুণীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। নিশি অবাধে মনজিলের ফ্ল্যাটে যাতায়াত করত। পুলিশ জানায়, মনজিল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওই নারীর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। কারণ হত্যাকা-ের সময় ওই তরুণী ফ্ল্যাটে ছিলেন। কালো জিন্স প্যান্ট ও কালো টি-শার্ট পড়া ঘাতক চার যুবককে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী জনকণ্ঠকে জানান, গ্রেফতারকৃত নিশিকে ডিবি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। সে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ পড়ছে। প্রায়ই সে মনজিলের ফ্ল্যাটে যাতায়াত করত। ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমঘটিত কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে পারিবারিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থসহ কয়েকটি কারণ বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে ওসি জানান। এ ব্যাপারে ৪/৫জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। রক্তাক্ত পোশাক ও ছুরি উদ্ধার ॥ পুলিশ জানায়, কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ঘাতকরা কালো জিন্স প্যান্ট ও কালো টি-শার্ট পড়ে এসেছিল। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) সদস্যরা। পুলিশ সূত্র জানায়, মনজিলের লাশের পাশ থেকে রক্তমাখা চাদর, দুইটি ছুরি ও টি-শার্টসহ চার সেট কালো পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার আগে এক নারী ও চার যুবক ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে ॥ ওই ভবনটির নিরাপত্তাকর্মী আবুল কালাম আজাদ জানান, ব্যবসায়ী মনজিলকে হত্যার আগে তার ফ্ল্যাটে চার যুবক ও একজন নারী প্রবেশ করেছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভবনটির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নিরাপত্তাকর্মী আবুল কালাম আজাদ পুলিশকে জানায়, সোমবার বেলা ১১টার পর একজন নারী আসেন। তিনি মনজিল স্যারের বাসায় যেতে চান। এ সময় ওই তরুণী তাকে বলে স্যারের সঙ্গে আলাপ করেই এসেছেন। এরপর গেট খুলে দিলে তিনি মনজিল স্যারের ফ্ল্যাটে চলে যান। পরে চার জন যুবক আসেন। তাদের পরনে কালো জিন্স প্যান্ট ও কালো টি-শার্ট ছিল। কে এই নারী ॥ ঘটনার পর পুলিশ শারমিন আক্তার ওরফে নিশি নামের এক তরুণীকে আটক করে। পরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ডিবি পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়। বাড্ডা থানার ওসি ওয়াজেদ আলী জানান, একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ পড়ছে ওই তরুণী। বাড্ডা বনশ্রী এলাকায় থাকেন। পুলিশ জানায়, এ তরুণীর সঙ্গে মনজিলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রায়ই ওই তরুণী মনজিলের ফ্ল্যাটে যাতায়াত করতেন। এ বিষয়ে ডিবি পুলিশ নিশি নামে তরুণী জিজ্ঞাসাবাদ করছে। জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। কারা সেখানে যাতায়াত করতেন। তবে ঘটনার সঙ্গে ওই তরুণী জড়িত নয় বলে ডিবি পুলিশকে সে জানিয়েছে। ওই তরুণী মনজিলের ফ্ল্যাটে আসার পরই খুনীরা সেই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে। তার সামনেই মনজিলকে খুন করে পালিয়ে যায় খুনীরা। এসব বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি পুলিশ। ডিএমপির গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আশরাফুল করিম জানান, আমরা ওই তরুণীকে হেফাজতে নিয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনটি বিষয় অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রেমের কোনও সম্পর্ক, পারিবারিক শত্রুতা বা ব্যবসায়িক শত্রুতা রয়েছে কিনা। এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে মনজিলের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের চাচা ফারুক হোসেন জানান, মনজিলের বাবার নাম একেএম মইনুল হক। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার ঘাড়মোড়া গ্রামে।
×