ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মিট দ্য প্রেসে বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী

এ বছর রেকর্ডসংখ্যক কর্মীর বিদেশে চাকরি, সবচেয়ে বেশি সৌদিতে

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

এ বছর রেকর্ডসংখ্যক কর্মীর বিদেশে চাকরি, সবচেয়ে বেশি সৌদিতে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এ বছর রেকর্ড সংখ্যক কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশ গেছেন। গত বছরের তুলনায় এ সংখ্য ২৮ শতাংশ বেশি। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মী নিয়োগ পেয়েছে সৌদি আরবে। এরপরেই জর্দান ও ওমানের স্থান। তবে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে শ্রমবাজারে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা ওই সব দেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি অল্প দিনের মধ্যে বাজারগুলো ঠিক হয়ে যাবে। অবশ্য সমস্যার কারণও রয়েছে। তেল প্রধান দেশগুলোতে তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় কর্মী নিয়োগও কমিয়ে দিয়েছে তারা। তেলের দাম একটু ভাল হলেই বাজার গুলো আবার চাঙ্গা হবে। মঙ্গলবার ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশী মাইগ্রেন্টস (আরবিএম) আয়োজিত ‘মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান শ্রমবাজার’ শীর্ষক মিট দ্য প্রেসে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি এসব কথা বলেন। অভিবাসন বিষয়ক রিপোর্টারদের সংগঠন রিপোর্টাস ফর বাংলাদেশী মাইগ্রেন্টসের (আরবিএম) সভাপতি ফিরোজ মান্নার সভাপতিত্বে আয়োজিত মিট দ্য প্রেসে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার, অতিরিক্ত সচিব আমিনুল ইসলাম, বিএমইটির মহাপরিচালক সেলিম রেজা, বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরণ কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আরবিএম’র সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, বাংলাদেশের জন্য অভিবাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এ দেশের মানুষই দেশের সম্পদ। তারা বিশ্বের ১৬৫টি দেশে শ্রম ঘাম দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশে পাঠাচ্ছেন। তাদের টাকায় দেশের অর্থনীতি প্রতিনিয়ত সুসংহত হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হবার পর এদেশের নাগরিকদের অভিবাসনের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় আমরা অভিবাসন খাতকে দেশের অন্যতম প্রধান খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এ বছরের জানুয়ারি থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোট ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৩ শত ৫৪ জন কর্মী চাকরি নিয়ে গেছেন। এ যাবত কালের মধ্যে এবারই প্রথম সর্বোচ্চসংখ্যক কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশ গেলেন। ডিসেম্বরের বাকি সময়ে আরও প্রায় ১০ থেকে ২০ লাখ কর্মী বিদেশে চাকরি নিতে যাবেন। নবেম্বরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। সৌদিতে এ বছর ৫ লাখ ১৩ হাজার ৮ শত ৬২ জনের কর্মীর কর্মসংস্থান হয়। এরপরেই ওমানের স্থান। দেশটিতে ৮৩ হাজার ১৬ জন, কাতারে ৭৭ হাজার একশ’ ৪৫ জন এবং কুয়েতে ৪৬ হাজার ১ শত ৭৪ জন চাকরি পেয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতকে সরকার ‘থ্রাস্ট সেক্টর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ খাতের গুরুত্ব অপরিসীম বিবেচনায় সরকার বিদ্যমান শ্রমবাজারকে ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির ওপর জোর দিয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন কর্মী প্রেরণ করেছি। বিদেশে কর্মসংস্থানের বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যমান শ্রমবাজার ধরে রাখাসহ আমরা নতুন নতুন সম্ভাবনাময় শ্রম বাজার অনুসন্ধান করছি। নতুন শ্রমবাজারের সন্ধানে ৫২টি দেশের শ্রম বাজার নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম সমাপ্তির পথে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বিদেশগামী বাংলাদেশী কর্মীদের শতভাগ বীমার আওতায় আনা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমরা এ বছরের ১১ জুন ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০১৭’ গেজেট প্রকাশ করেছি। সম্প্রতি মন্ত্রিসভা বৈঠকে ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড আইন-২০১৭ চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব লাভের পর থেকেই এই সেক্টরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। পরে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
×