ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সাফ অনুর্ধ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ

যে কারণে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

যে কারণে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে বাংলাদেশ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে তাম্রপদক অর্জন। এএফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা চ্যাম্পিয়ন (আঞ্চলিক) আসরে দু’বার চ্যাম্পিয়ন। একবার তৃতীয় হওয়া এবং ফেয়ার প্লে ট্রফি লাভ। এরপর এএফসি অনুর্ধ-১৬ আসরের বাছাইপর্বেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূলপপর্বে উন্নীত। প্রতিটি সাফল্যের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে গোলাম রব্বানী ছোটনের নামটি। বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দলের যিনি গর্বিত কোচ। আলোচিত এই কোচের সামনে নিজ-ভূমে আরেকটি পরীক্ষা, যে পরীক্ষার নাম ‘সাফ অ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে’র প্রথম আসর, যা শুরু হবে আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে ঢাকায়। এ আসরে অংশ নেবে স্বাগতিক বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং ভুটান। লীগ ভিত্তিতে চারটি দল একে অন্যের মুখোমুখি হবে। পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুই দলের মধ্যে হবে ফাইনাল ম্যাচ। শীর্ষ দুটি দল ২৪ ডিসেম্বর লড়বে ফাইনালে। টুর্নামেন্ট চার দল নিয়ে হবে সেটা আগেই ঠিক করা। কারণ পাকিস্তানের ওপর আছে ফিফার নিষেধাজ্ঞা। মালদ্বীপের মহিলা ফুটবলের কোন বয়সভিত্তিক দল নেই। আর অভ্যন্তরীণ সমস্যায় খেলতে পারছে না শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের ম্যাচগুলো হচ্ছে ১৭ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটায়, নেপাল, ১৯ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় ভুটান এবং ২১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় ভারতের বিরুদ্ধে। সাফের ম্যাচগুলো উপভোগ করতে হলে দর্শকদের টিকেট কেটে মাঠে ঢুকতে হবে। মূল্য ৫০ টাকা। এক টিকেটেই গ্রুপপর্বের দুটি করে ম্যাচ দেখতে পারবেন দর্শকরা। ফাইনালেও টিকেটের দাম একই। তবে ফুটবলপ্রেমীরা মনে করছেন এই আসরে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে আরও অন্তত তিনটি কারণ আছে। সেগুলো হলো : ১. স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা। নিজেদের পরিচিত মাঠ, আবহাওয়া, দর্শক ... সবকিছুরই পূর্ণ সুবিধা নিয়ে মাঠে নামবে ছোটনের শিষ্যারা। ২. টিম কম্বিনেশন। কোচ ছোটনের অধীনে এই দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই দীর্ঘ চার বছর ধরে জাতীয় দলসহ বিভিন্ন জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে খেলেছে। একসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে খেলার সুবাদে ছোটন যেমন তার খেলোয়াড়দের খেলা সম্পর্কে ভালভাবে অবগত, তেমনি ফুটবলাররাও পরস্পরের সঙ্গে খেলার সুবাদে পারস্পরিক জানাশোনা ও বোঝাপড়া খুবই ভাল। মাঠে এর সুপ্রভাব পড়েছে তিনবার (দু’বার অ-১৪ এবং একবার অ-১৬ আসরের শিরোপা জয়)। এবারও পড়ার সম্ভাবনা খুবই প্রবল। ৩. ফিটনেস, কৌশল ও আত্মবিশ্বাসের অভাবনীয় উন্নতি। একটা সময় ছিল যখন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগেই মানসিকভাবে হেরে যেত বাংলাদেশের মেয়েরা। আর ম্যাচে খেলতো ডিফেন্সিভ স্টাইলে। কিন্তু এখন সময়ের পরিক্রমায় এর উল্টোটাই ঘটছে অহরহ। কৌশল ও ফিটনেসের জায়গাটিতে ছোটনের দলের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। কোন সন্দেহ নেই, এই আসরে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিপক্ষ হবে ভারতই। তবে এ নিয়ে মোটেও ভাবিত নন ছোটন, ‘ভারতকে এখন আমরা আর ভয় পাই না। সেইদিন আর নেই। বরং ওরাই আমাদের ভয় পায় এবং সমীহ করে। অ-১৪ আসরে ওদের আমরা দু’বার হারিয়েছি সিনিয়র পর্যায়ে একবার ড্র করেছি। গত কয়েক বছরে একই দল নিয়ে খেলায় আমরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। এবার খেলতে গিয়ে প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা বুঝে ফর্মেশন ঠিক করবেন ছোটন। অনুর্ধ-১৪ লেভেলে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেলে দুটো আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ দল। তাছাড়া ৪-৪-২ এবং ৫-৩-২ এই দুটো ফর্মেশন নিয়েও কাজ করছেন ছোটন, দলও এতে অভ্যস্ত। প্রতিপক্ষ বুঝে এই তিনটি ফর্মেশনের কোন একটি খেলায় প্রয়োগ করবেন তিনি। তাছাড়া ম্যাচের গতি-প্রকৃতি অনুযায়ী ফর্মেশন বদলও হতে পারে। খেলায় আগে গোল হজম করলে বা আগে গোল করলে গেমের সিচুয়েশন বুঝে সেই অনুযায়ী দলকে খেলানোর চেষ্টা করবেন ছোটন। এখন দেখার বিষয় মেয়েদের বয়সভিত্তিক ফুটবলে চতুর্থ সাফল্য অর্জন করে দ্রোণাচার্য ছোটন আরেকবার মেতে উঠতে পারেন কি না বিজয়ের উল্লাসে।
×