ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাঙ্গুনিয়ায় পাউবোর জমিতে ভূমিদস্যুদের থাবা

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

রাঙ্গুনিয়ায় পাউবোর জমিতে ভূমিদস্যুদের থাবা

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গুনিয়া, ১২ ডিসেম্বর ॥ চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান বাণিজ্যিক এলাকায় চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়ক এবং চন্দ্রঘোনা ফেরি সড়ক পরিবেষ্টিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩০ একর জমি ও জলাশয় বেদখল হয়ে যাচ্ছে। সরকার হারাচ্ছে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব। আর পরিবেশ দূষিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। সড়কের পাশে জলাশয়ের পাশ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ৩০/৩৫টি দোকান, ঝুপড়িঘর ও অবৈধ স্থাপনা। ভূমিদস্যুদের দখল প্রক্রিয়া ক্রমেই বিস্তার লাভ করছে। জানা গেছে, ওয়ান ইলেভেনের সময়ে সরকারী এই জলাশয় এবং তীরের বিস্তীর্ণ বেদখলী জমি উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হেফাজতে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ রক্ষণাবেক্ষণ করেননি। ভূমিদস্যুরা নির্বিঘ্নে পুনরায় দখল করে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসব মূল্যবান জায়গা। বর্তমানে দখলে দখলে শ্রেণী পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। জলাশয় হয়ে উঠছে বাণিজ্যিক কেন্দ্র। সম্প্রতি দেখা গেছে ফেরি রোডের পাশে সারিবদ্ধ দোকানের পেছনে এ জলাশয়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় ড্রেজারের পাইপ লাইনে কর্ণফুলি নদীর বালিতে ভরাট করা হয়েছে। জানা গেছে, এখানে রাইস মিল স্থাপন করা হবে। কোদালা বনাঞ্চলের পাহাড় কেটে মাটি এনেও রাতারাতি জলাশয় ভরাট করে জবর দখলের তৎপরতা দেখা যায়। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, লিচুবাগানের পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলাশয়ে অভিযান চালিয়ে স্থাপনা নির্মাণে বাধা দেয়া হয়েছে। কিছু নির্মাণ সমাগ্রীও জব্দ করা হয়েছে। এখানে কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে দেয়া হবে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হক জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাপ্তাই সেকশন অফিস সংলগ্ন এসব সম্পদ লুটপাট হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে অফিস ভবনও বেদখল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপরিকল্পিত স্থাপনায় চন্দ্রঘোনা ফেরি সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। লিচুবাগানের পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসের সহকারী ইকবাল হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম ডিভিশন-১-এর অধীনে জলাশয় এবং ব্রিক ফিল্ডের জায়গা। দেখভালের দায়িত্ব থাকলেও আমাদের কথা কেউ শোনে না। অফিসে যাতায়াতের রাস্তা জবর দখল করে গোয়াল ঘর বানানো হয়েছে। আমাদের আপত্তির তোয়াক্কা করে না জবর দখলকারীরা। কাপ্তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বপন কুমার বড়ুয়া বলেন, প্রশাসন আমাদের সহায়তা করে আবার জবর দখলকারীদেরও সহায়তা দিয়ে থাকে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারী জায়গা সংরক্ষণ করা কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। লিচুবাগানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্পত্তির পরিমাণ সংক্রান্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস নিয়ন্ত্রণ করে। চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়নের প্রাক্তন সদস্য নুরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, ডাক্তার সাধন রায়সহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চন্দ্রঘোনা লিচুবাগানের পতিত জলাশয় ও জমি সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা না হলে জবর দখলে দ্রুত বিলুপ্তি ঘটবে।
×