ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, বীমা কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার ২

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭

রাজশাহীতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, বীমা কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার ২

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী নগরীর অলকার মোড়ে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আঞ্চলিক অফিসে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরা হলো জয়পুরহাট জেলার সতিঘাটা এলাকার আব্দুর রহিম মোল্লার ছেলে সোহেল রানা ওরফে একরাম (২৫) ও রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর এলাকার মানু কাজির ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩৬)। এদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের রাজশাহী রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর ও ইসলামী তাকাফুল বীমা ডিভিশনের রাজশাহীর ইনচার্জ পদে কর্মরত। জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকায় একরাম নগরীর অলকার মোড়ের প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের রাজশাহী রিজিওনাল অফিসের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করত। পুলিশ জানায়, একরামের সঙ্গে ওই কলেজছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি কলেজছাত্রীর পরিবারের লোকজন জানতে পেরে একরামকে নানাভাবে বুঝিয়ে সতর্ক করে দেয়। তারপরেও একরাম কলেজছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের কথা অমান্য করে তার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যায়। পরে এ বিষয়ে স্থানীয় এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে মেয়ের পরিবারের লোকজন অভিযোগ করে। এ প্রেক্ষিতে গত আগস্ট মাসের ১০ তারিখে একরামকে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসে ডাকা হলে সে ভবিষ্যতে ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগ রাখবেনা বলে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে। আর অঙ্গীকারনামায় সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেন ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন। এরপর থেকে একরাম ওই কলেজছাত্রীকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে ইন্স্যুরেন্স অফিসে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে এবং মোবাইল ফোনে তার ভিডিও ধারণ করে। ধর্ষণের ভিডিও একরাম তার বন্ধু ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনকে দেখায় এবং তার মোবাইলে কপি করে রাখে। এর আগেও একরাম ও জয়নাল শহরের বিভিন্ন মেয়েকে নানা প্রলোভন দিয়ে অফিসে নিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপ করত বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে ওই কলেজছাত্রীর ভিডিও’র বিষয়টি গত শনিবার পরিবারের লোকজন জানতে পেরে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগটি তদন্ত করতে গিয়ে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাছির আহম্মেদ ঘটনার সত্যতা পান এবং গোপনে সেই ভিডিও ক্লিপটিও সংগ্রহ করেন। পরে রবিবার রাতে অভিযুক্ত একরাম ও ধর্ষণে সহায়তাকারী ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনকে গ্রেফতার করে। নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি আমান উল্লাহ জানান, কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ ও তার ভিডিও ধারণের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলেজ ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে, তাদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম।
×