ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ধামইরহাটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট

প্রকাশিত: ০০:২৩, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

ধামইরহাটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকল প্রকার অস্ত্রোপচার দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে এলাকার অসহায় গরীব রোগীদেরকে অনেক অর্থ খরচ করে পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলা সদর অথবা পতœীতলা উপজেলায় গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে। অথচ অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি ও পর্যাপ্ত নার্স থাকার পরও শুধু চিকিৎসকের কারণে এর সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। জানা গেছে, বিপুল সংখ্যক আদিবাসীসহ প্রায় ২ থেকে আড়াই লাখ মানুষ বর্তমানে এই ধামইরহাট উপজেলায় বসবাস করে। সীমান্তবর্তী ও গরীব এলাকা হিসেবে এ অঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্য সেবা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলো ভিড় করে। কিন্তু এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে রোগিদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হলেও কোন প্রকার অস্ত্রোপচার করা হয় না। বিশেষ করে গর্ভবর্তী মা’দের কে সিজারিয়ান করতে বাইরে যেতে হয়। এতে সময় ও খরচ বেশি পড়ে। উপজেলার মহিলা কলেজ এলাকার অধিবাসী ব্যবসায়ী মো.সাখাওয়াৎ হোসেন সাগর বলেন, তার স্ত্রীর সমস্যার কারণে সিজার করতে জয়পুরহাট জেলা সদরে যেতে হয়েছে। এতে তিনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। অথচ সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে অবকাঠামো নির্মাণ করলেও চিকিৎসক সংকটের কারণে এর সুফল আমরা পাচ্ছি না। আমাইতাড়া এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে চিকিৎসক সংকটের কারণে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। অবশেষে চিকিৎসকের দেখা মিললেও অধিকাংশ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। ফলে রোগিদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা গেছে, জনবল কাঠামো অনুযায়ী ৫১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ জন এবং আটটি ইউনিয়নে ৮জন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু বর্তমান এখানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৬ জন। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে কোন চিকিৎসক নেই। বর্তমানে ৬জন চিকিৎসক দিয়ে উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা চলছে জোড়াতালি দিয়ে । ৬ জনের মধ্যে ১জনকে সার্বক্ষনিক প্রশাসনিক কাজ করতে হয়। তাছাড়া গ্রামীণ এলাকা হওয়ায় এই কমপ্লেক্সে অনেক চিকিৎসক যোগদানের পরই তদবির করে অন্যত্র বদলী হয়ে যান। বর্তমানে প্রতিদিন বর্হিবিভাগে ২শ’ থেকে আড়াই শ’ রোগি চিকিৎসা নিতে আসেন। তবে চিকিৎসক সংকট থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমানে নার্স রয়েছে। বর্তমানে ২০ জনের মধ্যে ১৮ জন নার্স, ৯৯ জনের মধ্যে ৭০ জন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী এবং ২০ জনের মধ্যে ১০ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী রয়েছে এখানে। এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মোঃ রাশেদুল হাসান মাহমুদ বলেন, সবেমাত্র আমি এ কমপ্লেক্সে বদলী হয়ে এসেছি। বর্তমানে এখানে ২৩ জন চিকিৎসকের পদ শুন্য রয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশাকরি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।
×