স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনিশ্চয়তার ধুম্রজাল ছিন্ন করে এ মাসের ২৬ তারিখ শুরু হচ্ছে ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব ২০১৭’। স্থান বরাদ্দ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে উৎসবের ষষ্ঠ অধিবেশন হবে কিনা এই নিয়ে নানান প্রশ্ন ছিল অনেকের মনে। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে উৎসবের চুড়ান্ত ঘোষনা দিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু। রাজধানীর আবাহনী মাঠে আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা, সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস, আবাহনী লিমিটেডের সভাপতি সালমান এফ রহমান ও স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী। এবারে উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে গবেষক, চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামানকে।
উৎসব উপলক্ষে রাজধানীর এক হোটেলে বরিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী ও ব্র্যাক ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব কমিউনিকেশনস জারা জাবীন মাহবুব।
শুরুতে উৎসব সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে পরদিন ভোর ৫টা পর্যন্ত উৎসব চলবে। রাত ১২টায় গেট বন্ধ হয়ে যাবে, বের হওয়া গেলেও আর প্রবেশ করা যাবে না। আবাহনী মাঠের পাশে আবাসিক এলাকা হওয়ায় নলেজ ক্যাল নামে বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে শব্দ ছড়ানো নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
থাকছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতিবছরের মতো অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে উৎসবে প্রবেশ পাস। আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রম। বিনামূল্যে এই নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে সীমিত সময়ের জন্য। অনলাইনের বাইরে ধানমণ্ডির ৭/এ সড়কের ৬০ নম্বর বাড়ির জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাক বিদ্যাপীঠ ও এয়ারপোর্ট রোডের খিলক্ষেতের বেঙ্গল সেন্টারে সরাসরি নিবন্ধন করা যাবে।
আবুল খায়ের লিটু বলেন, ভেন্যু সমস্যায় শংকায় ছিলো এবারের উৎসবটি। অবশেষে সবার সমর্থন ও প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত উৎসব হতে যাচ্ছে। আমরা খুব আনন্দিত। আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারকে অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি এবার আরও বেশি জমজমাট হবে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব।
এবারের উৎসবে যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন পদ্মবিভূষণ পণ্ডিত যশরাজ, গ্রামি বিজয়ী পণ্ডিত বিশ্বমোহন ভট্ট, বিদুষী কালা রামনাথ, গ্রামি জয়ন্তী পদ্মভূষণ বিদ্বান ভিক্কু বিনায়করাম, বিশিষ্ট ওডিশি নৃত্যশিল্পী সুজাতা মহাপাত্র, সেতার বাদক পণ্ডিত বুধাদিত্য মুখার্জি, সাসকিয়া রাও, বিদূষী পদ্মা তলওয়ালকার, পণ্ডিত রনু মজুমদারসহ বিশ্ব বিখ্যাত বহু শিল্পী। আয়োজনে মধ্যমণি হিসেবে উপস্থিত হবেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, ওস্তাদ রশিদ খান, ওস্তাদ শাহিদ পারভেজ খান প্রমুখ। বিদেশি শিল্পীদের পাশাপাশি থাকছে বাংলাদেশি শিল্পীদেরও পরিবেশনা। এছাড়াও থাকবে কাজাখস্তান থেকে আসা ৫৮ সদস্যের আস্তানা সিম্ফনি ফিলহারমানিক অর্কেস্ট্রার সঙ্গে ভারতের বিখ্যাত বেহালা শিল্পী এল সুব্রামনিয়ামের যুগল বাদন।
নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিবারের ন্যায় এবারেও থাকবে কিছু বিধি-নিষেধ। মাঠে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের আনা যাবে না। মাঠে গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা থাকবে না। মাঠে একাধিকবার প্রবেশ ও প্রস্থান করা যাবে না।