ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি’র অধ্যাপক বরিশালের কালামের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ

প্রকাশিত: ২১:১০, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

ঢাবি’র অধ্যাপক বরিশালের কালামের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জেলার বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত সর্বহারাপার্টির সাথে কানেকশনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া তার অতীত এবং বর্তমানের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও র্যাবের ডিজি বেনজির আহম্মেদের কাছে আজ রবিবার সকালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বানারীপাড়া উপজেলার ইলুহার, মলুহার, উদয়কাঠি, বাইশারী ও পার্শ্ববর্তী স্বরূপকাঠি উপজেলার নান্দুহার, শান্তিহার এবং কুনিয়ারী এলাকাবাসীর পক্ষে শাহ্নেওয়াজ নামের এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার অনুলিপি স্বরাষ্ট্র সচিবসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত আরব আলী হাওলাদারের পুত্র ড. আবুল কালাম আজাদ ওরফে ড্যাবরা কালাম ২০০৫ সালে র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত কামরুল গ্রুপের আঞ্চলিক নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন রিপন ও ২০০৪ সালে পুলিশ হেফাজতে নিহত অপর শীর্ষ সর্বহারা নেতা পরিমল সিকদারের একসময় ঘনিষ্ট সহযোগী ছিলেন। ওই দুই শীর্ষ সর্বহারা নেতার মৃত্যুর পরে ড্যাবরা কালাম দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করে ঢাবির শিক্ষাকতার মুখোশের আড়ালে হত্যা ও চাঁদাবাজীসহ এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজী, অস্ত্রের মুখে অন্যের জমি জবরদখলসহ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ঈদ-উল ফিতরের পূর্বের দিন আলাল নামের ষষ্ট শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রকে বিদ্যুতের শক দিয়ে হত্যার অভিযোগে তার (কালাম) বিরুদ্ধে বরিশাল চীফ জুডিশিয়াল আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার বাদী ও তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকিসহ অপহরন করে অনেক মামলা ধামাচাঁপা দিয়ে রাখারও অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে সর্বহারা নেতা পরিমলের মৃত্যুর পর শিক্ষক কালামের বিরুদ্ধে পুরো দলকে সংগঠিত করে সহযোগীদের নিয়ে এক মাসে মলুহার, শান্তিহার ও কুনিয়ারী এলাকায় ১৫ ব্যাক্তির কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায়, দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় আটটি বাড়িতে লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। ওইসময় তাদের বিরুদ্ধে আটটি হত্যা মামলা ও আটটি সিআর মামলা চলমান ছিলো। যা পরবর্তীতে অব্যাহত চাঁপের মুখে ধামাচাঁপা দেয়া হয়। সে সময় কালাম ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকায় ব্যাপক পোষ্টারিংও করা হয়েছিলো। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, উচ্চ শিক্ষিত ও মেধাবী কালামের দূরদর্শিতার কারণে সে আজও ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়ে গেছেন। সম্প্রতি তিনি স্বরূপকাঠির নান্দুহার গ্রামে জঙ্গলার্কীণ ভূমিতে একটি অত্যাধুনিক বাড়ি নির্মাণ করেছেন। চারপাশে প্রাচীর ঘেরা ওই বাড়িতে ছয়টি গেট ও বাড়ির ভিতরে গোপন সুরঙ্গ রয়েছে। তিনি (কালাম) বাড়িতে আসলে তার কাছে অপরিচিত লোকসহ সর্বহারা পার্টির নতুন ও পুরাতন সদস্যরা আসা যাওয়া করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ভিতির সৃষ্টি হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও র্যাবের ডিজির কাছে দায়ের করা লিখিত অভিযোগে, ১৫ জনের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের চাঁদা নেয়ার তালিকা, সর্বহারাদের হাতে বিভিন্ন সময় হত্যাকান্ডের শিকার হওয়া নয় জনের নামের তালিকা, লুটপাটসহ ১০টি জিআর ও সিআর মামলা এবং জিডির তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এছাড়াও কালাম ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় প্রকাশিত গণমাধ্যম গুলোর কপি সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রবিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উল্লেখিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে।
×