ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কয়লাবাহী ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী ব্রীজ

প্রকাশিত: ০০:৫৬, ৯ ডিসেম্বর ২০১৭

কয়লাবাহী ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী ব্রীজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ দীর্ঘদিন আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত শহরের উত্তর পাশে ৩০ বছর বয়সী সেনুয়া বেইলী ব্রিজটি অবশেষে মালবাহী একটি ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়েছে। এতে ট্রাকের চালক ও হেলপারসহ তিন জন আহত হয়েছে। ব্রীজটি হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ায় জেলা শহরের সাথে ১০টি ইউনিয়নের পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন । প্রত্যক্ষদর্শীগন জানান, শুক্রবার রাতে শহরের বিশিষ্ট ব্যবসীয় রাম বাবুর ভাটার জন্য প্রায় ৪০ টন কয়লা নিয়ে ১০ চাকার একটি ট্রাক ঝুঁকিপূর্ণ ওই সেনুয়া বেইলী ব্রীজটি পার হতে গিয়ে ব্রীজের উত্তরের অংশটি ভেঙ্গে ট্রাকসহ নদীর চড়ে পড়ে যায়। এসময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয়রা আহত এক পথচারিকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে আহত অবস্থাতেই ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। ব্রীজটি ভেঙ্গে পরায় শনিবার স্থানীয় প্রশাসন মানুষের চলাচলের জন্য বাশঁ-কাঠ দিয়ে ছোট একটি সেতু বানিয়ে দেয়। এতে শত শত লোকজন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। তবে এলাকার কিছু সুবিধাবাদি ব্রীজ পারাপারে পথচারীদের কাছে টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে সেনুয়া নদীর ওপর সড়ক ও জনপদ (সওজ) লোহার বেইলি ব্রীজটি নির্মাণ করে। ওই সময় বলা হয় খুব শীঘ্রই ব্রীজটি বড় আকারে ঢালাই ব্রীজ করা হবে কিন্তু এলাকাবাসীর অনেক আবেদন নিবেদেনের পরেও ৩০ বছরের মধ্যে ব্রীজটি আর নির্মাণ করা হয়নি। ব্রীজ দিয়ে ইটভাটার ভারি যানবাহনসহ মালবোঝাই যান চলাচলের কারণে কিছুদিনের মধ্যে ব্রীজের পাটাতনের লোহার পাতগুলো বেঁকে ও খুঁটিগুলো নড়বড়ে হয়ে যায়। ২০১১ সালে ব্রীজটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে একই বছরের জুলাই মাসে এলজিইডি সেতুর ভাঙা অংশে লোহার নতুন পাটাতন বসিয়ে দেয়। ব্রীজের দুই পাশে লিখে দেয়া হয় সাবধানবাণী কিন্তু ওই সাবধানবাণী কোনো কাজেই আসছিল না। প্রতিনিয়ত ওই ব্রীজের ওপর দিয়ে চলাচল করছিল মালবোঝাই ভারি যানবাহন। কিন্তু বিকল্প পথ না থাকায় ভারী যানবাহনও ব্রীজের ওপর দিয়েই চলতে থাকে। মেরামত করা পাটাতনগুলো আলগা হয়ে যায়। ব্রীজের অনেক জায়গায় তৈরি হয় গর্ত। ভারী যানবাহনই শুধু নয়, হালকা যানবাহন উঠলেই ব্রীজটি কেঁপে উঠতো। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ জানার পরও চালকেরা বাধ্য হয়েই ব্রীজ দিয়ে চলাচল করতো। ঠাকুরগাঁও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহানুর বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজটির কথা কর্তৃপক্ষকে পূর্বেই অনেকবার জানানো হয়েছিল। এছাড়াও সেখানে একটি নতুন ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে অসংখ্যবার পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে। তবে ভেঙে যাওয়া ব্রীজটি কবে মেরামত করা হবে এ বিষয়ে তিনি কোন সম্ভাবনার কথা জানাতে পারেননি।
×