ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দুইদিনের শিশুসাহিত্যসম্মেলন শুরু

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ৯ ডিসেম্বর ২০১৭

দুইদিনের শিশুসাহিত্যসম্মেলন শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিশুদের নিয়ে চমৎকার এক আয়োজন। সোনামণিদের মনন উপযোগী আলোচনার সঙ্গে প্রবন্ধপাঠ এবং ছড়া ও কবিতাপাঠের অনন্য সম্মিলন। অংশ নিয়েছেন সারাদেশ থেকে আসা তিন শতাধিক শিশুসাহিত্যিক। আসা শিশুসাহিত্যের রূপরেখা তুলে ধরে শুরু হলো দুই দিনব্যাপী চন্দ্রাবতী শিশুসাহিত্য সম্মেলন। চন্দ্রাবতী একাডেমি আয়োজিত এ সম্মেলনের সূচনা হয় শুক্রবার। শুক্রবার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সম্মেলনের উদ্বোধন হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, শিশু সংগঠক আবুল মোমেন ও এবি ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মসিউর রহমান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন চন্দ্রাবতী একাডেমির পরিচালক কামরুজ্জামান কাজল। অনুষ্ঠানে চন্দ্রাবতী একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত তিন বরেণ্য ব্যক্তিত্বকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন শিশুসাহিত্যিক রফিকুল হক এবং শিশুতোষ গ্রন্থের দুই অঙ্কনশিল্পী ও শিশুসাহিত্যিক হাশেম খান ও রফিকুন নবী। পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের প্রত্যেককে সম্মাননা স্মারক ও পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন অতিথিরা। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চন্দ্রাবতী একাডেমির ছোটদের আনন্দবার্ষিকী ২০১৭ তেপান্তরের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। উদ্বোধনী বক্তব্যে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, শিশুরাই আগামীর নাগরিক ও ভবিষ্যত। তাদের সুষ্ঠু ও সৃজনশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দেশে শিশু আন্দোলন বা সংগঠনের বিকল্প নেই। আমাদের একটি সংগঠন রয়েছে শিশু একাডেমি। এ ছাড়াও আরও সংগঠন দরকার। আশা করছি, আগামী বছরের মধ্যে দেশের নানা জায়গায় শিশুসংগঠন গড়ে তোলার কাজটি শুরু হয়ে যাবে। সভাপতির বক্তব্যে আনিসুজ্জামান বলেন, চন্দ্রবতী একাডেমি শুধু একটি প্রকাশনা সংস্থা নয়। এটি নানা রকম সাংগঠনিক কাজ করে। শিশুদের জন্য চমৎকার পত্রিকা প্রকাশ করে। শিশুসাহিত্যের বিকাশে সংগঠনটির ভূমিকা অত্যন্ত প্রশসংনীয়। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে অনুষ্ঠিত হয় নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মা স্মরণে একটি অধিবেশন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন দুই শিশুসাহিত্যিক রাশেদ রউফ ও মিহির মুসাকী। সভাপতিত্ব শিশু একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন। কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের বক্তৃতা ॥ ‘এসো মিলি প্রাণের টানে, স্মৃতিতে মনিহার’ প্রতিপাদ্যে সকাল থেকেই শুরু হয় আয়োজন। অংশ নেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সংস্কৃতিকর্মীরা। তবে অনুষ্ঠানের মূল আর্কষণ ছিল সন্ধ্যায়। এ পর্বে বক্তৃতা দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও বরেণ্য কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। ঘণ্টাব্যাপী বক্তৃতায় তিনি শুনিয়েছেন জীবনের অভিজ্ঞতা ও ভাবনার কথা। সেই কথনে উঠে আসে লেখকের স্মৃতিচারণ, বাংলাদেশের জন্ম এবং সংস্কৃতির নানা সঙ্কট ও সম্ভাবনার কথা। সে সঙ্গে তিনি জানালেন, তরুণদের উপরেই তিনি ভরসা রাখছেন, তারাই এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশ ও পৃথিবীকে। শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে ছিল এ আয়োজন। ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন সাংস্কৃতিক কর্মী সম্মিলন ও কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হকের বক্তৃতা’ শিরোনামের অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি সাংস্কৃতিক সংগঠন। সংগঠনগুলো হলো অনুশীলন, অর্নিবান, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার, রাবি, গণশিল্পী সংস্থা, লেখক শিবির, মৃদঙ্গ, নন্দন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ, রুডা, স্বকণ্ঠ, শীলন, শব্দায়ন, স্বনন, সমকাল নাট্যচক্র, তীর্যক নাটক এবং উদীচী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বক্তৃতার শুরুতেই হাসান আজিজুল হক বলেন, এখানে আমার নতুন করে বলার কিছু নেই। যারা আছেন, তাদের কেউ আমার বন্ধু, কেউ সহকর্মী, বাকিরা শিক্ষার্থী। আমি ‘হাঁ’ করলেই, তারা বুঝতে পারবেন কী বলতে চাচ্ছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সময়টা স্বর্ণযুগ। যদিও যতই অনুজ্জ্বল, অপরিষ্কার হোক না কেন, আমরা সবাই নিজেদের যুগকে স্বর্ণযুগ বলেই দাবি করি। তিনি বলেন, বাঙালীর হাজার বছরের নিজস্ব সংস্কৃতিÑ এই শব্দটি বারবার উচ্চারিত হয়। কিন্তু নিজস্ব সংস্কৃতি কী, সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। সবকিছুকেই নিজস্ব সংস্কৃতিতে প্রবেশ করানো হয়েছে। কাল থেকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সপ্তাহব্যাপী বিজয় উৎসব ॥ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বরাবরের মতো এবারও সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এবারই প্রথমবারের মতো রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিজস্ব ভবনে কাল রবিবার থেকে ‘মানবাধিকার দিবস থেকে বিজয় দিবস’ শীর্ষক এ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন, উন্মুক্ত মঞ্চ, সবুজ চত্বর ও ভাস্কর্য অঙ্গণে প্রতিদিন বিকেল তিনটায় শুরু হবে এ আয়োজন। কাঙ্গাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘরের দ্বার খুলছে আজ ॥ এই ভূখ-ে গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ছিলেন সাংবাদিক কাঙ্গাল হরিনাথ। কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এম এন প্রিন্টিং প্রেস। ফকির লালন সাঁই ও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সময় থেকেই তার সাংবাদিকতার যাত্রা শুরু হয়। ‘গ্রাম বার্তা প্রকাশিকা’ নামের পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে সাংবাদিকতার জগতে হয়ে আছেন উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার ওই প্রেস থেকেই প্রকাশিত হয়েছিল মীর মশাররফ হোসেনের বিখ্যাত কাব্য ‘বিষাদ সিন্ধু’। নতুন প্রজন্মের কাছে কাঙ্গাল হরিনাথকে তুলে ধরতে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ‘সাংবাদিক কাঙ্গাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের শাখা হিসেবে নতুন এই জাদুঘরটি আজ শনিবার থেকে খুলে দেয়া হচ্ছে দর্শনার্থীদের জন্য। পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া জাদুঘরটি শনিবার থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা এবং শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকবে। নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের আনুষ্ঠানিকভাবে এ জাদুঘর উদ্বোধনের কথা রয়েছে। নেত্রকোনা ট্র্যাজেডির যুগপূর্তিতে উদীচীর আয়োজন ॥ ২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কার্যালয়ে বোমা হামলা করে উগ্রবাদীরা। সে হামলায় প্রাণ হারান উদীচীর তৎকালীন সহ-সাধারণ সম্পাদক খাজা হায়দার হোসেন, সংগঠনবিষয়ক সম্পাদক সুদীপ্তা পাল শেলীসহ আটজন। সেই ট্র্যাজেডি যুগপূর্তি হলো শুক্রবার। এ উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক, জঙ্গী, মৌলবাদী গোষ্ঠীকে সমূলে বিনাশের প্রত্যয় ঘোষণা এবং বাংলার মাটিতে তাদের সব ধরনের কর্মকান্ড নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এ প্রত্যয়, গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় নেত্রকোনা বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণ করেছে সংগঠনটি। জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানের শুরুতে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। এরপর ছিল আলোচনা সভা। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি হাবিবুল আলমের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি প্রবীর সরদার, সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম এবং কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য আজিজুল মালিক। ফাদার বেঞ্জামিন কস্তার প্রবন্ধসমগ্রের প্রকাশনা ॥ বহুমাত্রিক পরিচয়ের এক ব্যক্তিত্ব ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা। সম্প্রতি মানুষটি ছিলেন একইসঙ্গে মানবতাবাদী, ধর্মযাজক, শিক্ষাবিদ ও লেখক। শুক্রবার বিকেলে এই লেখকের প্রবন্ধসমগ্রের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন প্রকাশনা সংস্থা লেখাপ্রকাশ ও ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা স্মৃতি পরিষদ। প্রশান্ত কর্মকারের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ‘শান্তি’ ॥ ক্যানভাসে শান্তির বারতা ছড়ানো এক চিত্রকর প্রশান্ত কর্মকার বুদ্ধ। নিষ্ঠুরতা ও হতাশাকে অতিক্রম করে চিত্রপট রাঙিয়ে তোলেন শান্তিময় কল্পলোকের কথা। সেসব ছবি নিয়ে মহাখালীর গ্যালারি কসমসে শুক্রবার থেকে শুরু হলো শান্তি শীর্ষক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদ জামিল উদ্দিন আহমদ (বীর উত্তম) এবং ফারাজ আয়াজ হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশে নিবেদিত।
×