ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাবির ভর্তি পরীক্ষায় সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন ॥ দুই শিক্ষককে দশ বছরের অব্যাহতি

প্রকাশিত: ০০:২৪, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭

রাবির ভর্তি পরীক্ষায় সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন ॥ দুই শিক্ষককে দশ বছরের অব্যাহতি

রাবি সংবাদদাতা ॥ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করার দায়ে অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানসহ দুই শিক্ষককে দশ বছরের জন্য সব ধরনের পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৪৭৪তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বহিষ্কৃত অপর শিক্ষক হলেন চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমান। প্রশ্ন প্রণয়নকারী হিসেবে জিল্লুর রহমানের পদোন্নতি পাঁচ বছর বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২৫ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় দুইটি প্রশ্নে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ ওঠে। প্রশ্ন দুটি ছিল, পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের নাম কি? উত্তরের জন্য দেয়া চারটি অপশন ছিল- (ক) পবিত্র কুরআন শরীফ (খ) পবিত্র বাইবেল (গ) পবিত্র ইঞ্জিল (ঘ) গীতা। গীতার আগে ‘পবিত্র’ ছিল না। অন্য প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয় মুসলমান রোহিঙ্গাদের উপর মায়েনমারের সেনাবাহিনী ও বোদ্ধ ধর্মালম্বীরা সশস্ত্র হামলা চালায় কত তারিখে? এ ঘটনায় সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ এনে প্রশ্নকারী শিক্ষকদের শাস্তি দাবি করে বিভিন্ন সংগঠন এবং চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তিন সিন্ডিকেট সদস্য বলেন, সাম্প্রদায়িক প্রশ্নপত্র প্রণয়নের বিষয়টি তদন্তের জন্য গত ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে ওই কমিটি সুপারিশসহ সিন্ডিকেটে বিষয়টি উত্থাপন করে। তার ওপর ভিত্তি করে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন হয়। তারা বলেন, আইনগত বাধা না থাকলে ডিন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। আর চারুকলার প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটির অন্য সদস্যদের সতর্কমূলক চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তারা। এদিকে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) শিক্ষক অধ্যাপক হাছানাত আলীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নাহিদ হায়দারকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। নাহিদ আইবিএ’র সান্ধ্যকালীন এমবিএ নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলো। রাবি রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী বলেন, ওই শিক্ষার্থীর শাস্তির পাশাপাশি শিক্ষক হাছানাত আলীকেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সদ্যবহার এবং যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে সতর্ক করে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইন্টার্নশিপ পেপারে স্বাক্ষর দেয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষক হাছানাত আলীকে মারধর করে তার অধীনে ইন্টার্নশিপ করা শিক্ষার্থী নাহিদ হায়দার। ঘটনা পরপরই নাহিদকে আটক করে পুলিশ। ঘটনার দিন রাতেই শিক্ষক হাছানাত মামলা দায়ের করেন।
×