ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস পালন করলো জেলা প্রশাসন

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭

হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস পালন করলো জেলা প্রশাসন

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে জেলা শহর সহ আশপাশ এলাকা নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ সদর মুক্ত করেছিল বর্তমান আব্দুস শহীদ, এডভোকেট তোরাব আলী সহ আরও কয়েজনের নের্তৃত্বে সংশ্লিস্ট অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আর এই দিনটিকেই চির অম্লান করে রাখতে বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা এখনও বদ্ধ পরিকর। শুধু তাই নয়, ৭১’সালের সেই ঘটনাবহুল বহু স্মৃতি স্মরন করানো এবং রাজাকার-আলবদর ও আলশাস মুক্ত বিশ্বমানের নতুন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ৬ ডিসেম্বর দিনটি তরুন প্রজন্মকে উৎর্সগ করতেই হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ বুধবার দিনভর প্রানবন্ত নানান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের সভাপতি মনীষ চাকমার নের্তৃত্বে সকাল সোয়া ৯ টার দিকে শহরে কালচারাল অফিসার অসিত বরন দাশ গুপ্তের সার্বিক তত্বাবধানে কন্ঠ শিল্পী সিদ্ধার্থ বিশ্বাস, কন্ঠ শিল্পী মানিক শাহ, কন্ঠ শিল্পী জাহিদ সহ আরও কয়েক উদিয়মান শিল্পীদের নিয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ট্রাক সঙ্গীত পরিবেশন, মুক্তিযোদ্ধাদের বৈঠা হাতে নৃত্য সহ আরও নানা মনমুগ্ধকর আইটেম উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বের করা হয় এক বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা। এতে মুক্তিযোদ্ধারা ৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী ও রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের পরাজিত করে জয় বাংলা শ্লোগানের মাধ্যমে হবিগঞ্জ সদর মুক্ত করেছিলেন, এমন একটি বাস্তব চিত্র রাজপথে প্রদর্শন করে এগিয়ে চলা এই শোভাযাত্রায় পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা, এডিশনাল এসপি মোঃ হায়াতুন্নবী, সংশ্লিস্ট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের সাবেক কমান্ডার এডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠান, ডেপুটি কমান্ডার এডভোকেট গৌর প্রসাদ রায়, সংশ্লিস্ট এলাকা মুক্ত করার নায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট তোরাব আলী, এডিসি (সার্বিক) মোঃ ফজলুর রহমান পাবেল, সদও ইউএনও এটিএম আজহারুল ইসলাম, আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থা কর্তৃক গঠিত জেলা স্বাক্ষী ও ভিকটিম সুরক্ষা এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি জেলা শাখার আহবায়ক সাংবাদিক রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম সন্তান কমান্ড ইউনিটের নেতা মোঃ গাউছ সহ অন্তত ১৫ সহস্রাধিক নারী-পুরুষ অংশ গ্রহনে গোটা শহর যেন এক অভুতপূর্ব স্মরনকালের এক নান্দিক রূপ ধারন করে। ধর্ষিতা এক মায়ের কুলে পাকিবাহিনীর গুলিতে নিহত শিশু সন্তান, হাত উচিয়ে পাকিবাহিনীর সদস্য আর একাধিক রাজাকারের আত্মসর্মপন এবং সেই সাথে আস্ত্র হাতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উৎফুল্লতার মতো দৃষ্টি নন্দন ওই বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তোলায় রাস্তার উভয় পাশে দাড়িঁয়ে থাকা শত শত মানুষ এসময় করতালি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করে। পরবর্তীতে ডিসি মনীষ চাকমার সভাপতিত্বে এবং মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠানের সঞ্চালনায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এক বিশাল আনন্দ সমাবেশ। এসময় ডিসি মনীষ চাকমা মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সন্তান সহ মুক্তি চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল সাধারন মানুষের পক্ষে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। তার আগে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের পক্ষে সভাপতি ডিসি মনীষ চাকমা, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে এসপি বিধান ত্রিপুরা ও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে এডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। এছাড়াও জেলা বিভিন্ন স্থানের মাটিতে ঘুমিয়ে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরে পুস্প স্তবকও অর্পন করা হয়।
×