অনলাইন রিপোর্টার ॥ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে তা ১৯৯২ সালে দেশ দুটির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির অনুসরণেই হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী।
মিয়ানমার সফর করে দেশটির সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে একটি সম্মতিপত্র সই করে এসে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে গত বৃহস্পতিবার সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, এবারের সমঝোতা অনুযায়ী গত বছরের অক্টোবর এবং এ বছরের ২৫ আগস্টের পর যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে, মিয়ানমার শুধু তাদেরই ফিরিয়ে নেবে।
এছাড়া রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফেরার পর সীমিত সময়ের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে থাকবে বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'মিয়ানমার ওই চুক্তি [১৯৯২ সালের চুক্তি] অনুসরণ করতে চায় বলে সেভাবেই করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। এর ত্রুটি–বিচ্যুতি, এটা নেই কেন, ওটা নেই কেন— এসব বলে তো কোনো লাভ নেই। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রোহিঙ্গাদের তারা ফেরত নিতে চেয়েছেন।'
মিয়ানমারের সঙ্গে নতুন করে সই হওয়া সমঝোতায় দেশের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে কি-না জানতে চাইলে মাহমুদ আলী বলেন, 'যে চুক্তি হয়েছে তাতে আমি সন্তুষ্ট। আমরা স্বার্থ ঠিক রেখেছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো।'
এছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মাঠপর্যায়ে আরেকটি চুক্তি সই হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করবে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। মূল বিষয়টি হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো এবং যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।'
এছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয় দেশই জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতা নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।