ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রংপুরকে হারিয়ে শীর্ষে খুলনা

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

রংপুরকে হারিয়ে শীর্ষে খুলনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সবাইকে টপকে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থানে চলে গেছে খুলনা টাইটান্স। শুক্রবার দিনের প্রথম ম্যাচে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর রংপুর রাইডার্সকে ৯ রানে হারিয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠেছে খুলনা। জিতলেই পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে চলে যাওয়ার ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং প্রদর্শন করেছে খুলনা টাইটান্স। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাট করে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের (৫৯) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান করে খুলনা। বল হাতে রুবেল হোসেনও চমৎকার বোলিং করে ৩ উইকেট নিয়েছেন। জবাব দিতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৪৯ রানের বেশি করতে পারেনি রংপুর। দুই হাফ সেঞ্চুরিয়ান রবি বোপারা (৫৯) ও নাহিদুল ইসলাম (৫৮) মিলে দলকে জেতানোর কাছাকাছিও নিয়ে যান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি। রংপুর তাই ৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্টেই থেকেছে। শুরুতে খুলনার অবস্থা খারাপ ছিল। পরে তা উতরে গেছে। কিন্তু রংপুর শুরুতেই মহাবিপত্তিতে পড়ে যায়। ২০ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে বসে। সেই ২ উইকেট আবার দলেরই সেরা দুই ব্যাটসম্যান। একজন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। আরেকজন ক্রিস গেইল। এ দুই ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় রংপুর। ৪৫ রানে যখন আরও ২টি উইকেট পড়ে যায় তখন হারের সম্ভাবনাতেই পড়ে যায় রংপুর। সেখান থেকে রবি বোপারা ও নাহিদুল ইসলাম মিলে দুর্দান্তভাবে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। দুইজন দলকে ১০০ রানের ওপরেও নিয়ে যান। দুইজন সমানতালে ব্যাটিং করতে থাকেন। বাউন্ডারি হাঁকাতে দলের রানের চাকায় গতি এনে দেন। একটা সময় গিয়ে দুইজনই দলকে ১৪৫ রানেও নিয়ে যান। ১০০ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন। এমন সময় রান আউট হয়ে যান নাহিদুল। ৫ বলে জিততে যখন ১৪ রান দরকার। এমন সময়েই নাহিদুল আউট হয়ে যান। ওয়াইড বলে রান নিতে গিয়ে আউট হয়ে যান। তখন হারের সম্ভাবনা খুব ভালভাবেই উঁকি দেয়। তবুও আশা থাকে। বোপারা যে উইকেটে আছেন। কিন্তু ৫ বলে জিততে যখন ১৪ রান লাগে তখন পরের দুই বলে ৩ রান নিতে পারেন বোপারা। সেখানেই খেলা রংপুরের হারের দিকেই গড়িয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১ বলে জিততে ১০ রানের প্রয়োজন পড়ে। বোপারা আউটই হয়ে যান। শেষ বলে ক্যাচ আউট হতেই রংপুরের হারও নিশ্চিত হয়ে যায়। দুর্দান্ত ব্যাটিং করার পরও রংপুরকে জেতাতে পারেননি বোপারা ও নাহিদুল। তাতে পয়েন্ট তালিকাতেও অবস্থান খারাপই থাকে রংপুরের। খুলনা শুরুতেই অবশ্য চাপে পড়েছে। ৪৯ রান হতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছে। সেখান থেকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দলকে টেনে নিয়ে যান। তারসঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান ও আরিফুল হক ভাল সঙ্গ দেন। তাই তো চতুর্থ উইকেটে পুরানের সঙ্গে ৪৩ রানের ও পঞ্চম উইকেটে আরিফুলের সঙ্গে ৩৮ রানের জুটি গড়েন। এ দুটি জুটিই মূলত দলের স্কোরবোর্ড মজবুত করে তোলে। ৯২ রানে পুরান (১৬) আউটের পর ১৩০ রানে গিয়ে ৩৬ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৫৯ রান করে মাহমুদুল্লাহও আউট হয়ে যান। তখন ১৭ ওভার চলছিল। হাতে উইকেট ছিল ৫টি। কিন্তু আরিফুল ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যান উইকেটে ছিল না। ৪ রান যোগ হতেই যখন আরিফুলও (১৬) সাজঘরে ফেরেন তখন খুলনার রানের চাকা দুর্বল হয়ে পড়ে। ব্যাটসম্যান যে সে রকম কেউ ছিলেন না। এরপরও শেষদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোফরা আরচার যে অপরাজিত ১০ রান করেন সেটি অনেক কাজে দেয়। দল শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারায় এবং পুরো ২০ ওভারই খেলতে পারে। তাতে দল ১৫৮ রানেও যায়। যা জয়ের জন্য মজবুত স্কোরই। জয়ও মিলে। ৮ ম্যাচে ৫ জয় ও দুই ম্যাচ হেরে ১১ পয়েন্ট পায় খুলনা। একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিল। চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করে খুলনা। স্কোর ॥ খুলনা-রংপুর ম্যাচ চট্টগ্রাম খুলনা টাইটান্স ইনিংস ১৫৮/৮; ২০ ওভার (মাহমুদুল্লাহ ৫৯, শান্ত ২০, আরিফুল ১৬, পুরান ১৬, আরচার ১০*; রুবেল ৩/৩৫, মালিঙ্গা ২/২৭)। রংপুর রাইডার্স ইনিংস ১৪৯/৬; ২০ ওভার (বোপারা ৫৯, নাহিদুল ৫৮, গেইল ১৬; আফিফ ২/৪)। ফল ॥ খুলনা টাইটান্স ৯ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (খুলনা টাইটান্স)।
×