ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনাকে শীর্ষে তুললেন মাহমুদউল্লাহ

প্রকাশিত: ০১:৩৮, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

খুলনাকে শীর্ষে তুললেন মাহমুদউল্লাহ

অনলাইন ডেস্ক ॥ লক্ষ্যটা আহামরি বড় ছিল না। কিন্তু রংপুর রাইডার্স তা পাহাড় সমান বানিয়ে নিল। কৃতিত্ব দিতে হবে খুলনা টাইটান্সকে। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রংপুরকে হাতখুলে খেলতে দিল না। পাশাপাশি দুর্দান্ত ফিল্ডিং। দুইয়ের মিশেলে ৯ রানের অসাধারণ এক জয় পেয়েছে তারা। যে জয়ে খুলনা টাইটান্স এখন বিপিএলের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। আর রংপুর রাইডার্স রয়ে গেল পাঁচেই। রংপুরের লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৫৯। গেইল-ম্যাককালাম জুটি ১০ ওভার থাকলেই হতো! কিন্তু হলো না। ম্যাককালাম গেইলকে একা রেখে ফিরে যান দ্বিতীয় ওভারেই। আফিফ হোসেনের বলে ম্যাককালাম লং অনে ক্যাচ দেন। তৃতীয় ওভারে খুলনাকে সবথেকে বড় উইকেটের স্বাদ দেন পেসার রাহী। ওই ওভারে ১৮ রান খরচ করলেও রাহী তুলে নেন গেইলের উইকেট। গেইল ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৬ রান করে ফিরেন শুরুতেই। এরপর ৪৫ রান পর্যন্ত যেতেই আরও ২ উইকেট হারায় রংপুর। রান রেটও ধারাবাহিকহারে বাড়তে থাকে। ৫.১ ওভার থেকে ১০.১ ওভার পর্যন্ত রংপুর পায়নি কোনো বাউন্ডারির স্বাদ। ১০ ওভারে তাদের রান মাত্র ৫৬। শেষ ৬০ বলে প্রয়োজন ১০৩ রান। রাহীর করা ১১তম ওভারে পরপর দুই চার মারেন রংপুরের জার্সিতে প্রথমবারের মতো বিপিএল খেলতে নামা নাহিদুল। ওই ওভারে ১৩ রান আসলেও ১৩তম ওভারে রান রেট ১৩ তে উঠে যায়। ১৫ ও ১৬তম ওভারে যথাক্রমে ১৩ ও ১৪ রান জমা করে রংপুর। বোপারাকে একপাশে রেখে নাহিদুল ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়াতে থাকেন। কিন্তু রান রেট কোনোভাবেই ১১ এর নিচে নামাতে পারেননি বোপারা ও নাহিদুল। ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নাহিদুল।কিন্তু তার মাইলফলকের ম্যাচটি ভেস্তে যায় খুলনার দারুণ ও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। রান আউটে শেষ ওভারে ফিরে যাওয়ার আগে ৪৩ বলে নাহিদুল করেন ৫৮ রান। আর বোপারা শেষ বলে আউট হওয়ার আগে করেন ৫৯ রান। পঞ্চম উইকেটে বোপারা ও নাহিদুল ১০০ রানের জুটি গড়লেও তা কোনো কাজে আসেনি। দুজনই পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির স্বাদ। কিন্তু পারেননি দলকে জেতাতে। স্পিনার আফিফ ২ ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট পান জুনায়েদ ও রাহী। এর আগে মাশরাফির করা প্রথম ওভারে এক চার ও এক ছক্কায় বড় ইনিংসের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন খুলনার রাইলি রুশো। কিন্তু পরের ওভারেই নিভে যায় তার ব্যাটিং প্রদ্বীপ। স্পিনার সোহাগ গাজীর বলে সুইপ করতে গিয়ে অফস্ট্যাম্প হারান রুশো। তিনে নামা আফিফ হোসেনের শুরুটাও ছিল দূর্দান্ত। রুবেল হোসেনের করা তৃতীয় ওভারে দুটি চার মারেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এ ব্যাটসম্যান। আফিফকে উত্তর দেওয়ার অস্ত্রটা জানা ছিল রুবেলের। ওভারের পঞ্চম বলে বাউন্সার মেরে রুবেল বিভ্রান্ত করেন আফিফকে। পরের বলে দারুণ এক ইয়র্কার। ব্যাট নামালেও বলের গতি এতটাই বেশি ছিল যে স্ট্যাম্প ভাঙতে তা সময় নেয়নি। ৯ রানে থেমে যায় আফিফের ইনিংস। ২ উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লেতে ৭ করে রান তুলে খুলনা। ৬ ওভারে তাদের রান ৪৭। সপ্তম ওভারে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে নেমে মাশরাফি আঘাত করেন খুলনা শিবিরে। ওপেনিংয়ে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত মাশরাফির স্লোয়ারে ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। ২০ বলে ২০ রান করে শান্ত ফিরেন দলকে চাপে রেখে। কিন্তু ক্রিজে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। চতুর্থ ওভারে ব্যাটিংয়ে নেমে ক্রিজে ছিলেন ১৭তম ওভার পর্যন্ত। দলের দায়িত্ব নিজ কাঁধে নিয়ে এসময় মাহমুদউল্লাহ স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৫৯ রান। ৩৬ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। নবম ওভারে মাশরাফির বলে বাউন্ডারির খাতা খোলা মাহমুদউল্লাহ দশম ওভারের শেষ বলে সোহাগ গাজীকে এগিয়ে এসে দারুণ শটে ছক্কার স্বাদ নেন। ১১ ও ১২তম ওভারে আবার মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে বাউন্ডারি। চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৪৩ রানের জুটি গড়েন নিকোলাস পুরান। ১৩তম ওভারে রংপুরকে ব্রেক থ্রু এনে দেন রুবেল। ২০ বলে ১৬ রান করে পুরান ফিরেন টপ এজ হয়ে। থিসারা পেরেরার করা পরের ওভারে পরপর দুই বলে এক চার ও এক ছয় মেরে রানের চাকা সচল রাখেন খুলনার অধিনায়ক। দ্যুতি ছড়িয়ে ৩২ বলে মাহমুদউল্লাহ তুলে নেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি। আরিফুলকে সাথে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ৩৮ রান যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ। সেট দুই ব্যাটসম্যানকে একই ওভারে ফিরিয়ে রংপুরকে উল্লাসে ভাসান রুবেল। ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে রুবেলর স্লোয়ার বল ঠিকমত পিক করে মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ব্রেন্ডান ম্যাককালামের অসাধারণ এক প্রচেষ্টায় বল বাউন্ডারির বাইরে যেতে পারেনি। ম্যাককালাম শূন্যে ঝাঁপিয়ে বল বাউন্ডারি থেকে ফেরানোর পর নাহিদুল তা মুঠোবন্দী করেন। মাহমুদউল্লাহ ফিরে যাওয়ার পরের বলে বাউন্ডারি মারলেও একবল পরেই আরিফুলকে এলবিডব্লিউ করেন রুবেল হোসেন। এরপর আর বাড়েনি খুলনার রান। ব্রেথওয়েট (১০), আর্চার (১১) স্কোরবোর্ডে লড়াকু পুঁজি এনে দেন। বল হাতে রংপুরের সেরা রুবেল হোসেন ৩৫ রানে নেন ৩ উইকেট। লাসিথ মালিঙ্গা ২৭ রানে ২ উইকেট পকেটে পুরেন।
×