ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু শনিবার

ঢাকায় এশিয়ার সেরা তীরন্দাজদের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

ঢাকায় এশিয়ার সেরা তীরন্দাজদের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্ব আরচ্যারি এশিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত হয় এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপ। ১৯৮০ সালে টুর্নামেন্টের যাত্রা শুরু। এবারের আয়োজক বাংলাদেশ। আগামী ২৫ নবেম্বর থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হবে এই আসরের ২০তম আসর। রিকার্ভ এবং কম্পাউন্ড দুই ইভেন্টে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। অনুশীলনের জন্য রাখা হয়েছে মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়াম। টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে প্রস্তুত আয়োজক বাংলাদেশ। এবারই প্রথম এই আসরটি আয়োজন করছে তারা। এশিয়ান পর্যায়ে আরচারির সবচেয়ে বড় এই আসরে অংশ নেবে ৩৫ দেশ। সবশেষ ২০১৫ সালে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হয় আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপ। টুর্নামেন্ট সামনে রেখে গত ৯ মাস ধরে টঙ্গী নিজস্ব আরচারি গ্রাউন্ডে অনুশীলন করছে বাংলাদেশের তীরন্দাজরা। এই আসরে শুধু এশিয়ার সেরারাই নন, বিশ্বসেরা আরচাররাও অংশ নেবেন। আরচারির এ মিলন মেলায় অংশ নিতে ৩৩টি দেশ বাংলাদেশের পথে রয়েছে। মঙ্গোলিয়া, কুয়েত ইতিমধ্যে ঢাকায় পা রেখে অনুশীলনও করেছে। উজবেকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত টুর্নামেন্টে অংশ নিতে নাম নিবন্ধন করলেও এখনও ফ্লাইট সূচী জানায়নি। টুর্নামেন্ট সামনে রেখে বৃহস্পতিবার ১৮ সদস্যের বাংলাদেশ দল ঘোষণা করা হয়েছে। রিকার্ভ একক ও দ্বৈত, কম্পাউন্ড একক, দ্বৈত ছাড়াও রিকার্ভ এবং কম্পাউন্ডের মিশ্র দ্বৈতে বাংলাদেশের পুরুষ ও মহিলা আরচাররা অংশ নেবেন। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের লক্ষ্য সেরা ১০-এ থাকাÑ বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমন কথাই জানান বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিবউদ্দিন আহমেদ চপল। আর রিকার্ভ ইভেন্টে আগের সেরা সাফল্য কোয়ার্টার ফাইনালকে ছাড়িয়ে এবার সেমিফাইনালে যাওয়ার লক্ষ্য বাংলাদেশের। তবে আয়োজক হয়েও তেমন সুবিধা পাচ্ছে না স্বাগতিক বাংলাদেশের আরচাররা। ম্যাচ ভেন্যু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এখনও অনুশীলন করতে পারেনি তারা। শুক্রবার থেকে টুর্নামেন্ট শুরু হবে। অথচ আরচারি ফেডারেশন মাঠ পেয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে! অনুশীলনের জন্য মাঠ চেয়েও পায়নি ফেডারেশন। এর কারণ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের খেলা। তবে এর বিকল্প পন্থা হিসেবে টঙ্গীতে ফেডারেশনের নিজস্ব মাঠে আরচাররা অনুশীলন করেছেÑ এমনটাই জানান ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক। এই আসরে অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ী তিন আরচার অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। তিনজনই দক্ষিণ কোরিয়ার। যার মধ্যে দু’জন মহিলা এবং একজন পুরুষ আরচার। যেহেতু টুর্নামেন্টে শুধু এশিয়ার সেরা দলগুলোই নয়, সেরা সেরা আরচাররা অংশ নিচ্ছেন সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই দল নির্বাচন করেছে বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশন। বর্তমানে যারা নিজেদের সেরা ফর্মে রয়েছে এবং র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতির ধাপে তাদেরই মূলত সুযোগ দেয়া হয়েছে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে। এটা করতে গিয়ে শ্যামলী রায়ের মতো অলিম্পিয়ানকেও বাদ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সেরা ফর্মে নেই গত ২০১৬ রিও অলিম্পিকে অংশ নেয়া শ্যামলী। টুর্নামেন্ট ও আরচারদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে আরচারি ফেডারেশনের সভাপতি লে. জে. (অব.) মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘দলগুলোকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হবে। এ বিষয়ে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আমাদের কথা রয়েছে। নিরাপত্তার পাশাপাশি যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য বলা হয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে ম্যাচ ভেন্যু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দোকানপাট বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। কারণ দলগুলো ঠিক মতো মাঠে প্রবেশ করতে পারলেই হলো। খাবারসহ মাঠেই দলগুলোর জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা থাকবে।’ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের আশপাশের পরিবেশ নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই আরচারি ফেডারেশনের। মাঠ বুঝে পাওয়ার পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ যাবতীয় কাজ দ্রুতই সেরে ফেলা হবে বলে জানান আরচারি ফেডারেশন সভাপতি। বাংলাদেশ দল ॥ রিকার্ভ ইভেন্ট পুরুষ দল : রুমান সানা, ইব্রাহিম শেখ রেজওয়ান, তামিমুল ইসলাম এবং হাকিম আহমেদ রুবেল; রিকার্ভ ইভেন্ট নারী দল : বিউটি রায়, রাদিকা আক্তার শাপলা, নাসরিন আক্তার এবং রাবেয়া খাতুন; কম্পাউন্ড দল পুরুষ : আবুল কাশেম মামুন, নাজমুল হুদা, মিলন মোল্লা এবং এহসান আহমেদ; কম্পাউন্ড দল নারী : সুস্মিতা বণিক, রোকসানা আক্তার, বন্যা আক্তার এবং বিপাশা আক্তার; যুব অলিম্পিক দল : ইব্রাহিম শেখ রেজওয়ান, রাদিকা আক্তার শাপলা, রাবেয়া খাতুন, সাকিব মোল্লা এবং ইতি খাতুন।
×