ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বি’বাড়িয়ায় আওয়ামী লীগ নেত্রী হত্যা- বিক্ষোভে উত্তাল চারোপাড়া

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

বি’বাড়িয়ায় আওয়ামী লীগ নেত্রী হত্যা- বিক্ষোভে উত্তাল চারোপাড়া

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আওয়ামী লীগ নেত্রী স্বপ্না আকতার খুনের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ভাই আমির হোসেন অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করে নবীনগর থানায় বুধবার গভীর রাতে মামলাটি দায়ের করেন। স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতা ঘটনার পেছনে সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে নিহতের স্বজনরা দাবি করেছেন। নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম শিকদার জানান, তারা কয়েকজনকে সন্দেহ করছেন। নিহতের ভাই বাদী হয়ে মামলাটি দিয়েছেন। মামলায় রাজনৈতিক পূর্ব বিরোধকে হত্যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ হত্যাকা-ের ঘটনায় জাহাঙ্গীর নামে এক সিএনজি চালিত অটোরিক্সাচালককে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে রাজনৈতিক কর্মকা- শেষে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক স্বপ্না আক্তারকে রাতে তার বাড়ি জিনোদপুরের চরপাড়ায় বাড়ি ফেরার সময় পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেত্রী খুনের ঘটনায় নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম, দায়ীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে ক্ষোভে বিক্ষোভ উত্তাল সোহাতা গ্রাম। বৃহস্পতিবার মিছিল করেছে এলাকাবাসী। পুলিশের বিশেষ টিম পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু আলামত জব্দ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিহতের মরদেহ ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। একটি মেডিক্যাল বোর্ড তার ময়নাতদন্ত করে। সূত্র জানায়, নিহতের মাথা থেকে একটি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গুলিটি ব্যালাস্টিক পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হবে। নিহতের ছেলে মোঃ ইফরানউদ্দিন জাহিদ বলেন, গত নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। এর জের ধরেই আমার মাকে হত্যা করা হয়েছে। স্বপ্নার স্বামী গিয়াস উদ্দিন বলেন, সে তো রাজনীতি করতে গিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এ নিয়ে দলের ভেতরেই একটি গ্রুপ তাকে পছন্দ করত না। তাদের নাম থানায় দেয়া আছে। এ নিয়ে মামলা আছে। যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও বিএনপির লোকজন তাতে জড়িত। নিহতের বোন চম্পা এ প্রতিনিধিকে বলেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলা ছিল তারাই আমার বোনকে হত্যা করেছে। ছয় মাস আগেও একবার হত্যার চেষ্টা করেছিল। এ নিয়ে থানায় জিডি হয়। আমার বোনকে হত্যার জন্য খালের মধ্যে পুরুষ নারীর বেশ ধরে (শাড়ি পড়ে) শুয়ে থাকত। কয়েকদিন আগেও টেম্পু থেকে নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করে কিন্তু সেই টেম্পুতে অন্য যাত্রী থাকায় তখন যাত্রীদের বাঁধায় সে সময় স্বপ্না প্রাণে রক্ষা পায়। স্থানীয়দের ধারণা, খুব কাছ থেকেই তাকে হত্যার উদ্দেশেই গুলি করা হয়। প্রশ্ন ওঠেছে খুনীরা কি এক না একাধিক। তারা কি তার সঙ্গেই ছিল? এ প্রশ্ন গ্রামের মানুষের মুখে মুখে। তবে কোথা থেকে তাকে অনুসরণ করা হয়েছে তা এখন নিশ্চিত করতে পারছে না পুলিশ। সূত্র জানায়, পরিকল্পিতভাবে ঠা-া মাথায় স্বপ্নাকে হত্যা করা হয়। সাধারণত সে চলাফেরা করার সময় তার সঙ্গে এক বা একাধিক সহকর্মী থাকত কিন্তু ঘটনার দিন কি কেউ ছিল কি? স্বপ্নার অন্যতম ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মী জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি সম্পাদক এ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস জানান, তার সঙ্গে সে রাতে সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে বাড়ি ফেরার কিছু সময় পর তিনি খবর পান তাকে মেরে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, এমনও হতে পারে হত্যাকারীরা আগে থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল বা যাত্রী বেশে সিএনজির ভেতরেই ছিল। প্রসঙ্গত গত বুধবার রাতে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক স্বপ্না আক্তার দলীয় কর্মকা- শেষে রাতে তার বাড়িতে ফেরার পথে জিনোদপুরের সোহাতা গ্রামে দুর্বৃওরা তাকে হত্যা করে। তার বাড়ি চরপাড়া গ্রামে। এদিকে জানাজা শেষে তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। জানাযায়, স্থানীয় সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদলসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
×