ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ ॥ নৌ-মন্ত্রী

প্রকাশিত: ০২:১০, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ ॥ নৌ-মন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ একটি ব্যয়বহুল প্রকল্প। এত বড় প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন দেশ, দাতা সংস্থা ও আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কক্সবাজার জেলায় একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের প্রকল্প সরকারের ফাস্ট ট্রাক প্রকল্পসমূহের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত আছে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামালের প্রশ্নের জবাবে নৌ-পরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খান এ তথ্য জানান। তিনি জানান, গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে জাপানের প্যাসিফিক কনসালটেন্ট ইন্টারন্যাশনাল সম্ভাব্যতা যাচাই করে একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন দিয়েছে। তাতে কক্সবাজার জেলার সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও জাইকা কর্তৃক মাতারবাড়িতে একটি সমুদ্রবন্দর স্থাপনের সম্ভব্যতা সমীক্ষা পরিচালিত হচ্ছে। এ সমীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়ার পর সার্বিক দিক বিবেচনা করে বন্দর নির্মাণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তিনি জানান, জাইকার সমীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর বন্দর নির্মাণের জন্য অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, দেশের আমদানি-রফতানি বৃদ্ধির ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতি বছর কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পরিস্থিতির বিবেচনায় সাতটি বড় ধরণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালটি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। কাজটি ২০১৭ সালে শুরু হয়ে ২০১৯ সালের মধ্যে সমাপ্ত হবে। উক্ত কাজের আওতায় ৬শ’ মিটার জেটি ও ২২০ মিটার ডলফিন জেটি নির্মাণ করা হবে। মন্ত্রী আরও জানান, লালদিয়া টার্মিনালটি পিপিপি’র আওতায় সমাধা করা হবে। উক্ত কাজের আওতায় ৮২০ মিটার দীর্ঘ জেটি নির্মাণ করা হবে। কাজটি ২০১৮ সালে শুরু হয়ে ২০২০ সালে সম্পন্ন হবে। এছাড়া বে-টার্মিনাল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে। এখানে মোট সাড়ে তিন কিলেমিটার দীর্ঘ জেটি নির্মাণ করা হবে। কাজটি ২০১৮ সালে শুরু হয়ে ২০২১ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তিনি জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৫ মিটার লাইটারেজ জেটি নির্মাণ কাজ শেষ হবে। মাতারবাড়িতে ২ কিলোমিটার জেটি নির্মাণ করা হবে। সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে গত ৮ বছরে ৪৭টি মৃত প্রায় নদ-নদী ড্রেজিং করা হয়েছে। এর মধ্যে মেঘনার হরিণাঘাট, আড়িয়াল খাঁ, গোমতী, কীর্তনখোলা, কুশিয়ারা, ইছামতি, মগরা, কংস, মধুমতি, ডাকাতিয়া, তেতুলিয়া, বড়াল, সুরমা, কালিগঙ্গা, ভৈরব, আত্রাই, লালমোহন, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, শৈলাদহ, কীর্তিনাশা, বিষখালী অন্যতম। সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের প্রশ্নের জবাবে নৌ-মন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাভূক্ত স্থলবন্দরের সংখ্যা ২৩টি। এর মধ্যে ৬টি স্থলবন্দর যথা- বেনাপোল, বুড়িমারী, আখাউড়া, ভোমরা, নাকুগাঁও ও তামাবিল স্থল বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং ৫টি স্থলবন্দর যথা- সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, টেকনাফ, হিলি ও বিবিরবাজার স্থলবন্দর প্রাইভেট অপারেটরের মাধ্যমে বিওটি ভিত্তিতে চালু রয়েছে।
×