ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে বাঁচলেন উওর কোরিয়ার সেনা

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে বাঁচলেন  উওর কোরিয়ার সেনা

অনলাইন ডেস্ক ॥ দিন দশেক আগে উত্তর কোরিয়া থেকে পালাতে গিয়ে মারাত্মক জখম হন সে দেশেরই এক সেনা-কর্মী। সেই নাটকীয় ঘটনার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে বুধবার। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন বাহিনী ইউনাইটেড নেশন্স কম্যান্ড (ইউএনসি) প্রকাশ করেছে সেটি। সে দিন যেমনটা ঘটেছিল, তার সবই ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। তাতে দেখা গিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এক রক্ষী দু’দেশের সীমান্তে যে অসামরিক ক্ষেত্র চিহ্নিত করা আছে (ডিমিলিটারাইজড জোন), কয়েক সেকেন্ডের জন্য সেই অংশে ঢুকে পড়েছেন। তার পরে মুহূর্তে ফিরেও গিয়েছেন। কিন্তু ফুটেজের এই দৃশ্য থেকে তৈরি হয়েছে অন্য বিতর্ক। ১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে সংঘর্ষবিরতির যে চুক্তি হয়েছিল, ওই রক্ষী বিতর্কিত এলাকায় ঢুকে তা ভঙ্গ করেছেন বলে দাবি ইউনাইটেড নেশন্স কম্যান্ডের। এই চুক্তি দেখভালের দায়িত্ব ইউএনসি-র উপরেই রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার পলাতক ওই বছর চব্বিশের সেনা-কর্মী আপাতত দক্ষিণ কোরিয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংজ্ঞা ফিরেছে তাঁর। তিনি এখন দক্ষিণ কোরিয়া এবং পশ্চিমী সঙ্গীত শুনছেন। টিভিও দেখছেন। তবে তাঁর পদমর্যাদা প্রকাশ করা হয়নি। গত ১৩ নভেম্বর পানমুনজম গ্রামে (ওই সেনা-কর্মীর পদবি ওহ্) তাঁর গায়ে অন্তত চারটি গুলি লেগেছিল। যে ডাক্তার ওহ্-এর অস্ত্রোপচার করেছেন, তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘মানসিক চাপে ওই ব্যক্তির কিছুটা হতাশা রয়েছে। সঙ্গে অস্ত্রোপচারের ধাক্কা। আতঙ্কের পরবর্তীকালে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তাই তাঁর আরও শারীরিক পরীক্ষা হবে।’’ তবে চিকিৎসকের সঙ্গে বিস্তারিত কথাবার্তা হয়েছে ওহ্-এর। ওই সেনা-কর্মীর দাবি, স্বেচ্ছায় তিনি সীমান্ত পেরোতে গিয়েছিলেন। ঝাঁকে ঝাঁকে গুলির মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে পেরনোর একটাই উদ্দেশ্য ছিল তাঁর— ভাল ভাবে বাঁচা। কারণ দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা ছিল তাঁর মনে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে কিছু দিনের মধ্যেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা। ওই সেনা-কর্মী সে দিন নিজের দেশ ছেড়ে পালানোর মরিয়া চেষ্টায় ঢুকে পড়েছিলেন পানমুনজম গ্রামে। ওই ‘শান্তি’ গ্রাম পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। সীমান্তে কেবল এই অংশেই দু’দেশের সেনাবাহিনী মুখোমুখি দেখা করতে পারেন। ইউএনসি-র ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, পানমুনজম গ্রামের দিকে ফাঁকা রাস্তা দিয়ে দ্রুত গতিতে ধেয়ে আসছে সেনা-কর্মীর জিপটি। দু’দেশের কাঁটাতারের মাঝে সংরক্ষিত এলাকায় থেমে যায় তাঁর দৌড়। কারণ জিপের চাকা খুলে যায়। দ্রুত নেমে ছুট দেন তিনি। পিছু নেয় উত্তর কোরিয়ার সশস্ত্র সেনা। গুলিও আসতে থাকে বন্যার মতো। তার পরের দৃশ্যে ধরা পড়েছে, গুরুতর জখম ওই লোকটিকে উদ্ধারে বুকে হেঁটে এগিয়ে আসছে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা। ইউএনসি মুখপাত্র কর্নেল চ্যাড ক্যারল বলেছেন, সেনা-কর্মীর পিছনে উত্তর কোরিয়ার ওই রক্ষীর সীমান্ত পেরিয়ে অসামরিক এলাকায় ঢুকে পড়ার খবর তাঁরা পিপলস আর্মিকে জানিয়েছেন। এই নিয়ে তাঁরা আলোচনা করতে চান যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা না ঘটে। ওই সেনা-কর্মীকে সীমান্ত পেরোতে দেখেও ইউএনসি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারা গুলি না চালানোয় তাদের প্রশংসা করেন ক্যারল। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×