ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভোলায় জনতার মুখোমুখি এমপি শাওন

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২২ নভেম্বর ২০১৭

ভোলায় জনতার মুখোমুখি এমপি শাওন

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমোহন ॥ কেউ জানতে চান শিক্ষা নিয়ে,কেউ জানতে চান চিকিৎসা স্বাস্থ্যর উন্নয়ন নিয়ে। এলাকার সমস্যা,উন্নয়ন,আশা আকাংক্ষা আর প্রত্যাশা নিয়ে জানার যেন শেষ ছিলো না। জবাব দিহিতা মূলক বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানে ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন অংশ গ্রহন করেন। গত ৮ বছরে সাংসদ সদস্য হয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর শাওন তার নির্বাচনী এলাকা লালমোহন ও তজমুদ্দিন উপজেলার মানুষের জন্য তিনি কি কাজ করেছেন এবং আগামীতে তিনি কি করবেন তার উত্তর দেন। এলাকার সাধারন মানুষর তাদের নির্বাচিত এমপিকে সরাসরি প্রশ্ন করার সুযোগ পান। বুধবার ভোলা লালমোহন উপজেলার সজিব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল পার্কে সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর উদ্দ্যোগে জনতার মুখোমুখি এমপি’র এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বেলা ১১ টা থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টা ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে কৃষক থেকে শুরু করে,শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী,রাজনৈতিক নেতৃবন্দ,ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশ গ্রহন করে নির্বাচিত সংসদ সদস্যকে প্রশ্ন করা সুযোগ দেওয়া হয়। এতে কলে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক সারা পড়ে। এসময় লালমোহন হাসপাতালে এনেসথেসিয়া ডাক্তার না থাকার সমস্যা ও সারাদেশের মধ্যে লালমোহন হাসপাতালের চিকিৎসার মানে অবস্থান কত তম জানানতে চান লালমোহন প্রেসক্লাবের সম্পাদক জসিম জনি। তা প্রশ্নের জবাবে এমপি শাওন বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে লালমোহন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান ২১তম। অপারেশনের জন্য দ্রুত একজন এনেসথেসিয়া ডাক্তার দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। প্রভাষক এমএ বাসেত এমপি শাওনের উদ্দ্যেশ্যে বলেন, লালমোহন তজুমদ্দিনে মান-সম্মত শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে না। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমাদের ছেলেরা অংশ নিতে পারছে না। এটা সমাধানের উপায় কী? সাংসদ বলেন, মা-সমাবেশ বাড়াতে হবে। শিক্ষকদের আরও আন্তরিক হতে হবে। যুগোপযোগী শিক্ষা বাস্তবায়নে সরকার এগিয়ে এসে সর্বউচ্চ বরাদ্ধ দিয়েছে, নানা সুবিধা দিচ্ছে। মধ্যে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয় করন করা হয়েছে। লালমোহন ও তজুমদ্দিনে তার উদ্দ্যোগে ৩ কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে। যা জাতীয় করন হয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে আপনারাও এগিয়ে আসুন বলে উল্লেখ করেন। প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম প্রশ্ন করে বলেন, গজারিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ভবন না থাকায় পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। এটা নির্মাণের পরিকল্পনা আছে কি? প্রশ্নের জবাবে সাংসদ বলেন, অধিদপ্তর থেকে ১০টি বিদ্যালয়ের তালিকা চেয়েছে। তার মধ্যে গজারিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বদরপুরের চাকরিজীবি মো. শামিম বলেন, বদরপুর ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডটি অবহেলতে। সেখানে রাস্তাঘাট, নলকূপ নেই। সাংসদ শাওন বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ৮০কোটি টাকা বরাদ্দ হচ্ছে। আশাকরি সে প্রকল্পে বদরপুরের ৫নম্বর ওয়ার্ড অন্তভুক্ত করা হবে। ছাত্রী আসমা বেগম, হরিবালা শংকর, রোমানা ইসলাম, ইসরাতজাহান বলেন, আইসিটি প্রশিক্ষণটি সরকারি করা উচিৎ এবং লালমোহনকে পর্যটন এলাকায় রূপান্তর করা জরুরী। আপনার করার ইচ্ছে আছে কী? সাংসদ বলেন, তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিনামূল্যে আইসিটি প্রশিক্ষণ চালু করেছেন। পর্যটন এরাকার অংশ হিসাবে সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল পার্ক নির্মাণ করেছেন। রাস্তা ঘাট নির্মানের প্রশ্নে শাওন বলেন, তার এলাকায় ২৪৯ কিলোমিটার নতুন রাস্তা ও নির্মান ও ৮৪ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। এলজিইডির অর্থায়নে ৫১৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ত্রান মন্ত্রনালয়ের অধিনে ৪৯টি ব্রীজ কালভাট নির্মা করা হয় এছাড়া আরো ৬৫টি ব্রীজ নির্মান করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। লালমোহন উপজেলার তোফায়েলিয়া আলিম মাদ্রাসার সুপার আবু জাফর মাইনুদ্দিন সহ ৫জন মাদ্রাসার শিক্ষক সাংসদের নিকট জানতে চান, মাদ্রাসাগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন কেনো হচ্ছে না। তাঁদের ১০টি শ্রেণির জন্য ১০টি কক্ষ, বেঞ্চ, টেবিল থাকে না। নেই বিদ্যুত। জবাবে শাওন বলেন, এফতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো বেতন পেতো না। এখন বেতন পাবে। ভবনগুলো নির্মাণ হবে। প্রধানমন্ত্রী মাদ্রাসাগুলোর ভবন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সাংসদ আরও বলেন, গণ শিক্ষার আওতায় ইসলামী ফাউন্ডেশন মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা চালু করেছে। ফরাশগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল বাশার সেলিম বলেন, লালমোহন তজুমদ্দিন,চরফ্যাসন-মনপুরা নিয়ে নতুন জেলা করার পরিকল্পনা রয়েছে কিনা। তার উত্তরে তিনি বলেন,বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে। সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মো. বেলায়েত হোসেনের এক প্রশ্নর উত্তরে সাংসদ বলেন, এখন বেশির ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগ করছেন। লালমোহন-তজুমদ্দিনে আওয়ামী লীগ গনমূখী দলে পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন-উত্তর পর্বে সঞ্চালক ছিলেন লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুল আরিফ। আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা, লালমোহন পৌর মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন, উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। প্রশ্ন উত্তর পর্ব শেষে কৃষকদের মাঝে বিনা মূল্যে সার ও বীজ বিতরন করেন সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
×