ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আসার আগেই পোপ শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২২ নভেম্বর ২০১৭

আসার আগেই পোপ শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগমনের আগেই বাংলাদেশের সব মানুষের প্রতি শুভেচ্ছা ও বন্ধুত্বের বার্তা প্রেরণ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। মঙ্গলবার রাজধানীর রমনার বিশপ ভবনে পোপ ফ্রান্সিসের আগমন প্রস্তুতি কমিটি আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ ধরনের ভিডিও বার্তাটি প্রকাশ করা হয়। ভিডিও বার্তায় পোপ ফ্রান্সিস বলেন, আমি বাংলাদেশে যাব মঙ্গলসমাচারের পুনর্মিলন, ক্ষমা ও শান্তির বার্তা ঘোষণা করতে। প্রত্যেক নর-নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা নিশ্চিতকরণ বিশেষ করে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের সঙ্গে আমি সাক্ষাত করতে চাই। শীঘ্রই দেখা হবে। আমরা কিছু সময় একসঙ্গে কাটাব- তারই প্রতীক্ষায় আছি আমি। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের খ্রীস্টান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও, পোপ ফ্রান্সিসের আগমন প্রস্তুতি কমিটির প্রধান কো-অর্ডিনেটর বিশপ ফ্রান্সিস শরৎ গমেজ, সদস্য সচিব ড. বেনেডিক্ট আলো ডি রোজারিও, আহ্বায়ক (মিডিয়া) ফাদার কোমল কোড়াউয়া, বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, ডিবিসি টেলিভিশনের সম্পাদক (নিউজ) প্রণব সাহা, মাই টিভির সিনিয়র সাংবাদিক প্যাট্রিক ডি কস্তা, ডেইলি স্টারের সিনিয়র রিপোর্টার পরিমল পালমা, দৈনিক জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নিখিল মানখিন প্রমুখ। পোপের আগমনকে বিরাট ঘটনা উল্লেখ করে কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও বলেন, পোপের আগমনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিরাট ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। সম্প্রতি ও শান্তির বাহক হিসেবে আসবেন তিনি এবং ভালবাসা দিয়ে মানুষকে সেবা করার আহ্বান জানাবেন। এই সম্প্রতি ও শান্তির মুহূর্তটি আমরা উৎসব ও মিলনমেলায় রূপ দিতে চাই। অনুপ্রাণিত করতে চাই সবাইকে। তার আগমনে সংলাপ হবে সংস্কৃতির এবং প্রবাহিত হবে বিভিন্ন ধর্মের সংলাপ। বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকান সিটির মধ্যে বিরাজমান সুসম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে জানিয়ে কার্ডিনাল বলেন, স্বাধীন হওয়ার এক বছরের মধ্যে ভ্যাটিকান সিটি ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। এই সম্পর্ক কোন কিছুর বিনিময়ে গড়ে উঠেনি। পোপের আগমনে রোহিঙ্গা ইস্যু প্রাধান্য পাবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও বলেন, বাংলাদেশে তার আগমন রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে নয়। তবে তিনি মিয়ানমার যাবেন। তাছাড়া তিনি ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে কথা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য হৃদয় দুয়ার খুলে দিয়েছেন। তার হস্তক্ষেপের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আরও যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে সেই বিষয়টি আমরাও অবশ্যই প্রত্যাশা করব। প্রস্তুতি কমিটির প্রধান কো-অর্ডিনেটর বিশপ ফ্রান্সিস শরৎ গমেজ বলেন, আমাদের নানা ধর্ম ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাজে শান্তির দূত হিসেবে পোপের আগমন ঘটবে। আমাদের দরিদ্রতা ও নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দীন-দরিদ্রদের সঙ্গে আমাদের ঐশ্বর্য্য সহভাগিতা করতে উৎসাহ দানের জন্য তিনি আসবেন। পোপের আগমনকে রাষ্ট্রীয় ও পালকীয় সফর উল্লেখ করে বিশপ বলেন, পোপ ফ্রান্সিস হলেন ভ্যাটিকান রাষ্ট্রের প্রধান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ ক্যাথলিক বিশপ সম্মিলনীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশে আসছেন পোপ ফ্রান্সিস। পাশাপাশি তিনি আসছেন পালক হিসেবে বাংলাদেশে অবস্থানরত খ্রীস্টবিশ্বাসী ভক্ত জনগণের সঙ্গে পালকীয় সাক্ষাত করতে। তার সফর বাংলাদেশের দরিদ্র ও নিপীড়িত মানুষের প্রতি ভালবাসা ও সহানুভূতির প্রকাশ।
×