ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুধ উৎপাদনে সয়ংসম্পূর্ণতা চায় বাংলাদেশ ॥ প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৩:২৪, ২০ নভেম্বর ২০১৭

দুধ উৎপাদনে সয়ংসম্পূর্ণতা চায় বাংলাদেশ ॥ প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ দুধ উৎপাদনে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে চায় বাংলাদেশ। দেশের সব মানুষের প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণে বাড়াতে চায় মাছ-মাংস উৎপাদনও। সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরপর্বে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক এ তথ্য জানান। একইসঙ্গে মন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের গত আট বছরে মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির চিত্রও তুলে ধরেছেন। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশে একটি ডেইরি বোর্ড প্রতিষ্ঠাসহ নীতি সহায়তা বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এ লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি আরো জানান, সর্বোচ্চ চারটি পর্যন্ত গরু কেনার জন্য জনপ্রতি দুই লাখ টাকা করে মোট ১৭৫ কোটি ৫৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতাধীন ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গত ২১ মাসে, অর্থাৎ বিগত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই ঋণ দেয়া হয়। একই দলের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, মৎস সম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরে মৎস অধিদপ্তরের আওতায় ১৮টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৩৯৭ কোটি এক লাখ টাকা। একইসঙ্গে মৎস গবেষণা ইনিস্টিটিউটের আওতায় দুটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর মধ্যে সামুদ্রিক মৎস গবেষণা জোরদার ও অবকাঠামো উন্নয়নে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ ৭১ হাজার টাকা এবং ঝিনুক ও শামুক চাষ বাড়াতে ১১ কোটি ৩০ লাখ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মাছ উৎপাদন বাড়াতে চার বছর (২০১৫-১৯) মেয়াদী প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর আওতায় ইতোমধ্যে ৪৩ জেলার ১৭৫টি পুকুর/দিঘী, ৩২টি খাল/বিল পুনঃখনন করে চাষের উপযোগী করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ পেয়েছে তিন হাজার ২৭৫ সুফলভোগী। এছাড়া সংস্কারকৃত জলাশয়ে দুইশ পাইপ কালভার্ট স্থাপন করা হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে সরকারি পর্যায়ের ৮৪টি হ্যাচারির সুবিধাসহ ১৩৬টি মৎসবীজ উৎপাদন খামার এবং বেসরকারি পর্যায়ের ৯৫২টি মৎস হ্যাচারি রয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় পোল্ট্রিখামারের সংখ্যা ৪৫টি এবং বেসরকারি রেজিষ্টার্ড পোল্ট্রিখামারের সংখ্যা ৮০ হাজার ৬২৭টি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ডেইরি খামারের সংখ্যা আটটি এবং বেসরকারি রেজিষ্টার্ড ডেইরি খামারের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৪৪৯টি। মন্ত্রী জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছরের মাংসের প্রাপ্যতা ছিলো জনপ্রতি বছরে ৩২ দশমিক ৪৫টি, বিগত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে জনপ্রতি বছরে ৯২ দশমিক ৭৫ গ্রাম। মাংসের চাহিদা পূরণে মুরগির পাশাপাশি হাঁস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রকল্পের কাজ চলছে। দেশের সকল মানুষের প্রাণীজ আমিষের ঘাটতি পূরণ ও মৎস উৎপাদন বৃদ্ধির উল্লেখ করে বলেন, প্রাণিজ আমিষের সরবরাহ বেড়েছে। এ সময় তিনি চিংড়ির ও ইলিশ উৎপাদনের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।
×