ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

*নিজেরা নিজেদের প্রতিপক্ষ হিসাবে মাঠে অবস্থান নিয়েছ্;###;*স্বার্থানেষী গোষ্টি ফায়দা হাসিল করতে পারে এমন আশংকা সাধারন হিন্দুদের

ফেনীতে হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ কমিটি নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে

প্রকাশিত: ২১:০৯, ২০ নভেম্বর ২০১৭

ফেনীতে হিন্দু বৌদ্ধ  খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ কমিটি নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফেনী ॥ ফেনীতে হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ জেলা কমিটি বিলুপ্তির পর আহব্বায়ক কমিটি নিয়ে দুই গ্রুপের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। দুই পক্ষ নিজনিজ অবস্থানের ব্যখ্যা নিয়ে পৃথক ভাবে গনসংযোগ করছেন এবং স্থানিয় সংসদ সদ্যসের কাছে অভিযোগ করেছে। এক পক্ষ কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক রানা দাস গুপ্তের নাম ব্যবহার করে আহব্বয়ক কমিটি করেছে বলে প্রচার করছে। অপর পক্ষ হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছে এমন লোকদের বাদ দিয়ে আহব্বায়ক কমিটি করেছে বলে দাবী করেছে। খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের। জানা যায়- হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা কমিটির মেয়াদ পার হয়ে গেছে ৬ মাস আগে । গত এক বছর আগে কেন্দ্রীয় কমিটি ঐক্য পরিষদের গঠনতন্ত্রে সংশোধন করেছে। এতে বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি কেন্দ্রীয় কমিটির কোন গুরুত্ব পদে থাকলে জেলা কমিটির সভাপতি /সাধারন সম্পাদক পদে থাকতে পাবেননা। গঠনতন্ত্র হিসাবে জেলা কমিটির সভাপতি এডভোকেট প্রিয় রঞ্জন দত্ত জেলা কমিটি ছেড়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মন্ডলীর সদস্য পদে থাকতে সন্মতি দিয়ে জেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ করার বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করেন। এরিই মধ্যে সভাপতির শুন্য পদে সহ- সভপতিকে দাযিত্ব না দিয়ে জেলা কমিটি ৬ মাস কোন সভা করেনি বলে অভিযোগ উঠে। এ অবস্থায় জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে আহব্বায়ক কমিটি করে সম্মেললন করার সীধান্ত দেয় কেন্দ্রিয় কমিটি। বিলুপ্ত কিমিটির সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি হিরালাল চক্রবর্তী জানান- জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক শুকদেব নাথ কোন সহ-সভাপতিকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বা কার্যকরী সভাপতি করার জন্য কোন সভা করেননি। এমন কি গত ৬ মাসও জেলা কমিটির কোন সভা করেননি। তিনি নিজে ্একক সিধান্তে কউকে না জানিয়ে মনগড়া ভাবে ২১ সদস্যের আহব্বায়ক কমিটি গঠন করে কেন্দ্রের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছেন বলে প্রচার করেন।এতে সংখ্যগরিষ্ট হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ অসন্তোশ প্রকাশ করেন। রানা দাস গুপ্তের সাথে শুকদেবের ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকায় ফেনীর হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের আড়ালে রেখে রানা দাস গুপ্তের কাছে ভূল তথ্য দিয়ে শুকদেব এ কাজটি করেছেন বলে তাদের অভিযোগ।। শুকদেব নাথ যাদেরকে না জানিয়ে আহব্বায়ক কমিটিতে নাম দিয়েছেন তাদের মধ্যে ১০ জন ইতোমধ্যে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বলে দাবী করেন হীরালালা চক্রবত্তী। এ অবস্থায়তে শুকদেব নাথ বিভিন্ন শাখার পক্ষ থেকে আহব্বায়ক কমিটি নির্বাচিত হওয়ায় ফুল নিয়ে তা পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছেন। বিষয়টি হিন্দু ম্প্রদায়ের তথা সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও আত্ব কলহ সৃষ্টি হওয়ার আশংকা রয়েছে। বয়োজেষ্ট এ হিন্দু নেতা আশংকা করে বলেন- দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের উপার নির্যতান হচ্ছে। আমাদের অভ্যন্তরিন বিরোধকে কাজে লাগিয়ে স্বর্থেনেষী কোন গোষ্টি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালাতে পারে । বিলুপ্ত কমিটির সদ্য সাবেক সভাপতি এডভোকেট প্রিয় রঞ্জন দত্ত জানান- তিনি কেন্দ্রয় কমিটির পদে থাকাতে চেয়ে ফেনীর কমিটির পদ থেকে সরে যাওয়ার সিধান্ত নিয়েছিলেন। জেলা কমিটিতে পদত্যাগ পত্র জমা দেয়ার আগেই কেন্দ্র থেকে কমিটি ভেঙ্গ দিয়ে আহব্বায়ক কমিটি করেছে। ঐক্য পরিষদ কমিটি নিয়ে বিরোধের মুল কারন প্রসঙ্গে প্রিয় রঞ্জন দত্ত বলেন- জেলা পুজা কমিটির সম্মেলনে এসে কেন্দ্রীয় নেতারা সভাপতি ও সম্পাদক ঘোষনা দিয়ে বাকী পদগুলাতে সাবজেক্ট কমিটি বসে আলোচনা করে পুর্ন কমিটি করে কেন্দ্রে পাঠানো জন্য। পুজা উদযাপন পরিষদ তা না করে একটি কমিটি করে কেন্দ্র পাঠিয়েছে। যদিও এ কমিটিতে ঐক্য পরিষদের সভাপতি সাধারন সম্পাদক সহ অনেকে রয়েছে। তথাপিও বিষয়টি জানতে পেরে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের এ কমিটি অনুমোদন না দেয়ার জন্য কেন্দ্রে আপত্তি দিয়েছে। সে আপত্তি অনুসারে আজও জেলা পুজা উদযাপন কমিটি অনুমোদ নিতে পারেনি কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে। পুজা উদযাপন কমিটি গঠনের জের ধরে কতেক ব্যক্তি কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের আর্শিবাদ নিয়ে বর্তমান ঐক্য পরিষদ আব্বায়ক কমিটি করেছে । দুটি ঘটন্ াই হিন্দু সমাজের জন্য বিব্রতকর। অপর দিকে বর্তমান নবগঠিতর আহব্বয়ক কমিটির আহব্বায়ক শুকদেব নাথ তপন জানান- কেন্দ্রীয় নেতা রানা দাস গুপ্তের সন্মতিতে এ আহব্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাদেরকে কমিটিতে রাখা হয়নি তাদের মধ্য থেকে সাংসদ নিজাম হাজারীর আর্শিবাদ পুষ্ট শুশেন চন্দ্র শীল আহব্বায়ক কমিটির ১০ জনকে জোর পূর্বক আটকে রেখে এবং এক মহিলা সদস্যকে পিকআপে করে তুলে নিয়ে নিয়ে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নিয়েছে। বিষয়টি তিনি রানা দাস গুপ্তকে সহ অন্যনেতাদের জানিয়েছে। বিষয়টি সংসদসদস্য নিজাম হাজারীতে জানিযেছেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা পুজা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক শুশেন চন্দ্র শীল জানন- তিনি আহব্বয়ক কমিটি গঠন করার বিষয় জানেননা। আর কাউকে পদত্যাগ করারর জন আটক করা তো দুরেরকথা বলেনও নি। তিনি আরো দাবী করে বলেন যারা পদত্যাগ করেছে তরা স্বইচ্ছায় পদত্যাগ করেছে॥ পদত্যাগ করেছে অনেকে জানিয়েছেন তাদের না জানিয়ে আহব্বায়ক কমিটিতে নাম দিয়েছে। তাই তারা পদত্যাগ করেছেন। ফেনী -২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য গত সাপ্তাহে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই গ্রুপের নেতারা দেখা করেছেন। এক অংশের দাবী বর্তমান আহব্বায়ক কমিটিতে অনেক প্রকৃত হিন্দু নেতাকে বাদ দেয়া হয়েছে। তাই বর্তমান বির্তকিত আহব্বায়ক কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সর্ব্বজন গ্রহনযোগ্য হিন্দু নেতাদের সমন্নয়ে নুতন আব্বায়ক কমিটি গঠন কারার । অপর অংশের দাবী কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক রানা দাস গুপ্ত আহব্বায়ক কমিটি করে অনুমোদন দিয়েছেন। আহবাবায়ক কমিটিতে কয়েকজনকে কপ করার সুযোগ রয়েছে। সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী উভয় গ্রুপকে মিলে মিশে সোহাদ্দপুর্ন পরিবেশ বজায় রেখে সাংগঠনিক কাজ চালানোর অনুরোধ করেন। তিনি সংখ্যালঘু নেতাদের উদ্যেশ্যে বলেন- সরকার সংখ্যালঘুলুদর অধিকার ও নিরাপত্তার দেয়ার ব্যপারে বদ্ধপরিকর। তাই নিজেরা নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন।
×