ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ফের হার মোহামেডানের

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৯ নভেম্বর ২০১৭

চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ফের হার মোহামেডানের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগের লেগে যা হয়েছিল, পরের লেগেও হলো তাই। স্কোর লাইনটা যেন একেবারে কার্বন কপি। বদলা নিতে গিয়ে উল্টো তেতো হারের স্বাদ পেল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে শনিবার তাদের ১-০ গোলে হারিয়েছে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বপ্নে বিভোর থাকা চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের এই প্রথম ম্যাচের প্রথমার্ধেই জয়সূচক গোলটি করে বন্দরনগরীর দল। গোলটি করেন জয়ী দলের তারকা মিডফিল্ডার জাহিদ হোসেন। আর গোলটি হজম করেন বিজিত দলের গোলরক্ষক মামুন খান। মজার ব্যাপার হচ্ছে দু’জনেই হচ্ছেন নিজ দলের অধিনায়ক। তার মানে এক অধিনায়ক গোল করলেন আরেক অধিনায়কের বিরুদ্ধে। নিজেদের ত্রয়োদশ ম্যাচে এটা চট্টগ্রাম আবাহনীর দশম জয়। ৩২ পয়েন্ট নিয়ে আগের মতোই ধরে রেখেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটি। পক্ষান্তরে ‘ব্ল্যাক এ্যান্ড হোয়াইট’ খ্যাত মোহামেডানের এটা সমান ম্যাচে ষষ্ঠ হার। ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তারাও আছে আগের মতোই ষষ্ঠ স্থানে (১২ দলের মধ্যে)। খেলার শুরুতে দুই দল দুই রকম ফর্মেশনে খেলে। চট্টগ্রাম আবাহনী ৪-৩-৩, মোহামেডান ৪-৪-২। ম্যাচের প্রথম থেকেই দ্রুতগতিতে খেলার চেষ্টা করে চট্টলার দলটি। তবে ম্যাচে গোলের প্রথম সুযোগ সৃষ্টি করে মোহামেডানই। ম্যাচের বয়স তখন ৫ মিনিট। বল নিয়ে বাঁপ্রান্ত দিয়ে পাস দেন নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এনকোচা কিংসলে। নাসিরুল শট নিলেও বক্সে বল বিপদমুক্ত করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডাররা। ১০ মিনিটে বল নিয়ে তৌহিদুল আলম সবুজ বক্সে ঢুকে পড়লেও মোহামেডানের ডিভেন্স ভেঙ্গে গোল করতে পারেননি (প্রথম লেগে এই সবুজের একমাত্র গোলেই চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ১-০তে হেরেছিল সাদা-কালোরা)। ১১ মিনিটে মামুনুল ইসলামের দুর্দান্ত এক ফ্রি কিক ছিল প্রায় গোল, বক্সে লাফিয়ে উঠে হেড নেন জাহিদ হোসেন। কিন্তু গোলরক্ষক মামুন খান বল ক্লিয়ার করায় গোলবঞ্চিত হয় আবাহনী। তবে পরের মিনিটেই ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় তাদের। ১২ মিনিটে মাঝমাঠে বল পান চট্টগ্রাম আবাহনীর এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম। তিনি বাঁ দিকের উইংয়ে বল বাড়ান আগুয়ান হাইতিয়ান মিডফিল্ডার লিওনেল সেইন্ট প্রিয়ক্সের উদ্দেশে। প্রিয়ক্স বল ধরে ডি-বক্সের ভেতরে ঢুকে গড়ানো ক্রস দেন। সেই ক্রসে হাঁটু গেড়ে বসে শট নেন অধিনায়ক-মিডফিল্ডার জাহিদ হোসেন। মোহামেডানের গোলরক্ষক-অধিনায়ক মামুন খানকে ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় জালে (১-০)। উল্লাসে ফেটে পড়ে বন্দরনগরীর দলটি। লিড নেয়ার পর কৌশলে পরিবর্তন আনেন আবাহনীর কোচ সাইফুল বারী টিটু। ছোট ছোট ব্লক তৈরি করে দলকে খেলাতে থাকেন। এর ফলে তাদের বিপক্ষে গোল করাটা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে রাশেদ পাপ্পুর শিষ্যদের। ৪১ মিনিটে জাহিদের ফ্রি কিক লাফিয়ে উঠে হেডে ক্লিয়ার করেন নাসিরুল। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে আরও একটি সুযোগ হাতছাড়া হয় আবাহনীর। জাহিদের কর্নার হাত উঁচিয়ে বল সরিয়ে দেন মামুন খান, ফলে লাফিয়ে উঠেও শেষ পর্যন্ত বলের নাগাল পাননি নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডার এলিসন উদোকা। ৬৫ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে হাসানের বাড়িয়ে দেয়া বল ফয়সাল মাহমুদ ডান পায়ে শট নিলেও দক্ষতার সঙ্গেই বল ক্লিয়ার করে আবাহনীর রক্ষণভাগ। ৬৬ মিনিটে বেশ সুবিধাজনক স্থানে বল পেয়েও জুতসই হেড নিতে ব্যর্থ হন এনকোচা কিংসলে। ৮২ মিনিটে প্রায় মাঝমাঠ থেকে এলিসনের বাড়িয়ে দেয়া বল বক্সে পান লিওনেল। গোলরক্ষককে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনেও পান। তবে তাকে পেছন থেকে ট্যাকল করেন ডিফেন্ডার মঞ্জুরুর রহমান। তাই স্বাভাবিক শট করতে ব্যর্থ হন লিওনেল। নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে বেঁচে যায় মোহামেডান। ইনজুরি টাইমে অগাস্টিন ওয়ালসনের শট ছিল নিশ্চিত গোল। লাফিয়ে উঠে বল সরিয়ে দেন চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। রেফারি জালালউদ্দিন শেষ বাঁশি বাজালে প্রথম লেগেরই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম আবাহনী।
×