ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাতুরার সঙ্গে আলোচনা পরবর্তী নতুন কোচ নিয়োগে সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৯ নভেম্বর ২০১৭

হাতুরার সঙ্গে আলোচনা পরবর্তী নতুন কোচ নিয়োগে সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষ করে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তখন দলের সঙ্গে আসেননি প্রধান কোচ চান্দ্রিকা হাতুরাসিংহে। কারণ তিনি পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে। এরপর বিসিবির পক্ষ থেকে তার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হয়েছে। জোর গুঞ্জন শোনা গেছে তিনি শ্রীলঙ্কার প্রধান কোচ হিসেবে যোগ দেবেন। কিন্তু বিসিবি নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি। এমনকি এখনও হাতুরাসিংহের ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছে বিসিবি। তবে হাতুরাসিংহে কবে আসবেন, কি করবেন সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি। বিসিবির পরিচালক আকরাম খান জানালেন এখনও হাতুরাসিংহেকে নিয়ে আছে অনিশ্চয়তা। পরবর্তী কোচ নিয়োগের ক্ষেত্রেও পদক্ষেপ নেয়া হবে হাতুরাসিংহের সঙ্গে আলোচনার পরই এমন কথাই জানালেন তিনি। হাতুরাসিংহে আর কোচ হিসেবে থাকতে না চাইলেও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে দায়িত্বে থাকার অনুরোধ জানানো হবে বলেও জানান আকরাম। সেটাতেও রাজি না হলে দেশীয় কোন কোচ দিয়ে আপাতত কিছুদিন জাতীয় দল পরিচালনা করা হবে। এক্ষেত্রে খালেদ মাহমুদ সুজনের নাম বেশ কয়েকবার শোনা গেছে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে। তিনি শনিবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রস্তাব পেলে কোচ হিসেবে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে সেটা জাতীয় দলের জন্য খুশি মনেই প্রয়োগের চেষ্টা করবেন। হাতুরাসিংহে কোচ হিসেবে বাংলাদেশ দলের অভূতপূর্ব উন্নতি এনেছিলেন। ২০১৪ সালের মে মাসে জাতীয় দলের কোচ হওয়ার পর থেকেই দারুণ কিছু সাফল্য এনে দিয়েছেন। সেটা ধারাবাহিকভাবেই ছিল। হঠাৎ করে তার পদত্যাগের বিষয়টি দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন হাতুরাসিংহের সঙ্গে। তখন ২/১ দিনের মধ্যেই হাতুরাসিংহে দেশে আসবেন এমনটাও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আসেননি তিনি। এ বিষয়ে আকরাম শনিবার আবারও বললেন, ‘আসলে আমরা এখনও অনিশ্চয়তায় আছি। এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না এখনও। ২-১ দিনের মধ্যে হাতুরাসিংহের আসার কথা। যদি ও আসে, তারপর ও’র সঙ্গে বসে বিষয়টা চূড়ান্ত হবে।’ তবে হাতুরাসিংহে এই মুহূর্তে কি করছেন এবং কিসের সঙ্গে যুক্ত আছেন সেটা সম্পর্কেও বিসিবি নিশ্চিত করে কিছু জানে না। দেশের জনপ্রিয় টি২০ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) চলছে এবং জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা ছাড়াও খেলছেন উদীয়মান কয়েকজন। কিন্তু সেটা পর্যবেক্ষণের জন্য নেই কোচ! এ বিষয়ে আকরাম বলেন, ‘এই মুহূর্তে অনেক ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে। কেউ বলছে শ্রীলঙ্কায় যাবে, কেউ বলছে অস্ট্রেলিয়াতে থাকবে। পারিবারিক সমস্যার জন্য চাকরিটা করতে চাচ্ছে না। অনেক কিছুই শোনা যাচ্ছে। আমরা ও’র কাছ থেকে যেটা জানব, সেটাই আসলে চূড়ান্ত কথা। এজন্য আমরা ও’র আসার অপেক্ষায় আছি।’ হাতুরাসিংহে পদত্যাগ পত্র দেয়ার পরও বিসিবি কিসের অপেক্ষায় আছে সেটাও পরিষ্কার হয়নি এখন পর্যন্ত। আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকেই ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এর আগে কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু করছে না বিসিবি। অপেক্ষায় আছে হাতুরাসিংহেরই। এ বিষয়ে গত পরিচালনা পর্ষদে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আকরাম বলেন, ‘ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে এই ধরনের ঘটনাগুলোই ঘটে। হাতুরাসিংহে কিন্তু অনেকদিন ছিল। এর আগে কেউ এক/দেড় বছর থেকে আবার চলে গেছে। ওকে যদি আমরা না পাই তাহলে হয়তো আমাদের কিছুটা সময় লাগবে। তারপরও আমরা ভাল কোচ নিয়ে আসব। আমরা এখনও কোন আলাপ-আলোচনাতেই যাইনি। আমরা হাতুরাসিংহের আসার অপেক্ষায় আছি। ওর সঙ্গে কথাবার্তা বলার পর এই বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করব।’ বিসিবি চাইছে আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য হলেও অন্তত দায়িত্বে থাকতে। এ বিষয়ে আকরাম বলেন, ‘তাকে অনুরোধ করা হবে এই সিরিজটার জন্য। কিংবা যতদিন ওকে রাখতে পারি। এটা নির্ভর করে ওর সঙ্গে আলোচনাটা কেমন হয় তার ওপর। আমাদের সিইও’র সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি যদি না থাকেন তাহলে আমাদের হাতে তো সময় নেই। ভাল কোচ খুঁজতে হলে তো আমাদের সময় লাগবে। যতদিন পর্যন্ত না পাব, স্থানীয় কোচরাই কাজ চালাবে।’ অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দেশের কাউকে নিয়োগ দেয়ার গুঞ্জনটাও বেশ কিছুদিন ধরে ক্রিকেট অঙ্গনে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছিল। সে সময় অনেকের সঙ্গে নাম উঠে এসেছিল সাবেক অধিনায়ক, বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দলের ম্যানেজার এবং ঘরোয়া আসরে বেশ কয়েকটি দলের কোচ হিসেবে দায়িত্বে থাকা বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনের কথা। এ বিষয়ে শনিবার বিপিএলের দল ঢাকা ডায়নামাইটসের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন কোচের ব্যাপারটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত। বোর্ডের ব্যাপারটা বলি, প্রথমত লক্ষ্য বিদেশী কোচ আনা, তার জন্য কাজও শুরু হয়েছে। কথা বলা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। যদি এমন কিছু হয় যে, প্রয়োজনে আমার কাজ করতে হবে। আমি তো বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনে অনেক কাজই করেছি অনেক সময়। আবার করতে হলে আমি খুশি মনেই করব। কারণ এটা আমার নেশা আর কোচ হিসেবেও আমার এখন অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে।’
×