ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

গোমতী ও ডাকাতিয়ায় ড্রেজিং করে নৌ চলাচল যোগ্য করার দাবি

প্রকাশিত: ০২:১২, ১৮ নভেম্বর ২০১৭

গোমতী ও ডাকাতিয়ায় ড্রেজিং করে নৌ চলাচল যোগ্য করার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃহত্তর কুমিল্লাকে সম্ভাব্য পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য অবিলম্বে গোমতী ও ডাকাতিয়া নদীকে দূষণ ও দখলমুক্ত করে পুনক্ষননের মাধ্যমে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে বেসরকারি সংগঠন ‘নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর)’। সেই সঙ্গে নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নিয়মিত প্রয়োজনীয় ড্রেজিং করে (পলি অপসারণ) এ দুই নদীতে সারা বছর নৌযান চলাচলের উপযোগী নাব্যতা সৃষ্টি এবং ফতুল্লা থেকে মেঘনায় একটি রেল সেতু নির্মাণ করে কুমিল্লার লালমাই পর্যন্ত বিকল্প রেল লাইন স্থাপনের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন ও ডাকাতিয়া অববাহিকায় শহরের বর্জ্যদূষণ পরিদর্শন করে শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় পরিবেশকর্মীদের সমন্বয় গঠিত জাতীয় কমিটির একটি প্রতিনিধিদল ১৭ নভেম্বর শুμবার দিনভর কুমিল্লার গোমতী ও ডাকাতিয়া নদীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে। সংগঠনের সভাপতি হাজী মো. শহীদ মিয়ার নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদলে পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, বিআইডব্লিউটিএর সাবেক পরিচালক এমদাদুল হক বাদশা, কুমিল্লার পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ডা. এ বি এম খোরশেদ আলম এবং জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে ছিলেন। পরিদর্শনকালে তাঁরা গোমতী ও ডাকাতিয়া নদী রক্ষায় বৃহত্তর কুমিল্লাবাসীর দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে টিক্কারচরে গোমতী সেতুর ওপর মানববন্ধন করেন। অন্যান্যদের মধ্যে প্রতিনিধিদলে ছিলেন জাতীয় কমিটির জেষ্ঠ সহ-সভাপতি সঞ্জীব বিশ্বাস, সহ-সভাপতি ইফমা হুসেইন, বাংলাদেশ ইনল্যান্ড মাস্টার্স এসোসিয়েশনের (বিমা) সভাপতি কাজী আবদুল হক, জসি সিকদার, কাজী হুমায়ুন কবির মিঠু, হীরক পাশা, বাবুল হোসেন, দৈনিক মানব জমিন পত্রিকার ফটোসাংবাদিক এম ডি নাসিরউদ্দিন, মো. সুলতান মিয়া প্রমুখ। পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা শহরের উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গোমতী নদী থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এবং এই অবৈধ কাজে একটি শক্তিশালী দুর্নীতিবাজচμ জড়িত। জাতীয় কমিটি মেঘনা নদীর বাম তীরে গোমতী সেতুর আশে পাশে এরুপ বালুরস্তুপ দেখতে পায়। এভাবে বালু উত্তোলন উদ্বেগজনক উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উজানের পলি ব্যাপকহারে উত্তোলন করে জমি ভরাট কাজে ব্যবহার হলে মাটির উপরিভাগের উর্বর অংশ ঢাকা পড়ে যাবে ও উজানের পলি বঙ্গোপসাগরে না যেতে পারলে সাগরে ভূমি পরিবৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাবে। এর ফলে সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির বিপরীতে প্রাকৃতিক নিয়মে প্রতিরোধ হ্রাস পাবে। জাতীয় কমিটি পর্যবেক্ষণে বলা হয়, গঙ্গাজুরি নদীর মাধ্যমে ডাকাতিয়া অববাহিকায় কুমিল্লা শহরের অপরিশোধিত শিল্পবর্জ্য নিষ্কাশিত হয়ে গিয়ে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। এখনই সময় থাকতে পরিশোধন ব্যবস্থা চালু করা না গেলে নিকট ভবিষ্যতে কৃষিসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যস্থ হবে। এসব কারণে অবিলম্বে গোমতী ও ডাকাতিয়া নদীকে দূষণ ও দখলমুক্ত করে পুনর্খনন করে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ নিশ্চিত এবং প্রয়োজনীয় ড্রেজিংয়ের (পলি অপসারণ) মাধ্যমে দুই নদীতে সারা বছর নৌযান চলাচলের উপযোগী নাব্যতা সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মেঘনা সেতু ও দাউদকান্দি সেতুর ক্ষমতা কম থাকায় সেতুতে ওঠার আগে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে। এতে মুল্যবান সময় ও জ্বালানি অপচয় হচ্ছেছ। দুই সেতুর পাশে দুটি অতিরিক্ত সেতু নির্মাণকাজ চলছে। কিন্তু তাতে যানজট নিরসন হবে না। সেজন্য আমাদের রেলের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে দুই লাইনের কাজ চলছে। তারপরও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে মেঘনায় একটি রেলসেতু নির্মাণ করে কুমিল্লার লালমাই বা চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ পর্যন্ত বিকল্প রেললাইন স্থাপনের উদোগ নেয়া দরকার।
×