ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কথিত পীর আলতাপ হোসেন ওরফে শাহ সিদ্দিকী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ১৮ নভেম্বর ২০১৭

কথিত পীর আলতাপ হোসেন ওরফে শাহ সিদ্দিকী গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া ॥ কথিত পীর মোঃ আলতাপ হোসেন ওরফে মিন্টু ওরফে শাহ সিদ্দিকী হুজুরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। চতুর্থ স্ত্রী আছমা বেগমকে বেধড়ক মারধর করে চার সন্তানকে রেখে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার ঘটনার দায়ে আলতাপকে গ্রেফতার করা হয়। কলাপাড়া থানার এসআই জিয়া আলতাপকে দীঘর বালিয়াতলী গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। পাঁচটি বিয়ে করা আলতাপকে গ্রেফতার করে জানা গেছে নাটকীয় কাহিনী। বের হয়েছে তার কথিত পীর বনে যাওয়ার গল্প। কলাপাড়া থানার ওসি মোঃ আলাউদ্দিন জানান, আছমা বেগমকে কতোটা নির্দয় এবং নির্মমভাবে মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছে তা তিনি মহিলা পুলিশের মাধ্যমে অবগত হয়েছেন। আছমা জানায়, আলতাপ হোসেন কৌশলে মারধর নির্যাতন করে এক এক করে আরও চারজন স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি নিজে কাউকে তালাক দেননি। স্ত্রীরা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সন্তান-সন্ততি নিয়ে বাড়ি ছেড়েছে। পাঁচ স্ত্রীর সংসারে মোট নয় সন্তান রয়েছে। চতুর্থ স্ত্রী ছাড়া অন্য কোন সন্তানেরও খোঁজ-খবর রাখেননি। শুক্রবার দৈনিক জনকন্ঠের অনলাইন সংস্করণে প্রথম এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হলে পুলিশ এ্যাকশনে নামে। আছমার ভাষায়, ‘তার স্বামী পীর সাহেব। হাজার হাজার মুরিদান বানায়। যার মধ্যে মহিলাও রয়েছে। অনৈতিক কাজের অভিযোগ করেন আছমা।আছমার লিখিত অভিযোগ, তার স্বামী বেদাইতি কায়দায় ধর্মকে বিক্রি করে নিজেকে পীর সাহেব সেজে মহিলা-পুরুষকে মুরিদ করেন। মহিলা মুরিদগণ তাকে রাতে আপত্তিকর কায়দায় খেদমত করে। এসব কাজে বাধা দেয়ার কারনে কৌশলে যৌতুক বাবদ নগদ টাকা, গরু, জিনিস (স্বর্ণালঙ্কার) চায়। না দেয়ায় তার ওপর এমন নির্দয় নির্যাতন বহুবার হয়েছে। আলতাপ হোসেন জানান, তার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। ১২ বছর বয়সে আশির দশকের প্রথমে ঢাকায় গিয়ে ফার্মগেট এলাকায় খাবার হোটেলে বয়সহ বিভিন্ন কাজ করেন। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত এসব কাজ করেন। এরপরে নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় একটি মসজিদের মোয়াজ্জিন ছিলেন। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সেখানে থেকে নিজেই ওয়াজ-নসিহত-মাহফিল সম্পর্কিত জ্ঞ্যান অর্জন করেছেন। এরপর থেকে ওয়াজ-মাহফিল করতে করতে নিজেকে পীর হিসেবে আবিষ্কার করেন। কলাপাড়া থানার ওসি মোঃ আলাউদ্দিন জানান, গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া বাদিনীও সময় চেয়ে ফয়সালার কথা বলেছে।
×