ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রাণের স্পন্দনে মুখর ঢাকা লিট ফেস্ট- উৎসবের আমেজ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৮ নভেম্বর ২০১৭

প্রাণের স্পন্দনে মুখর ঢাকা লিট ফেস্ট- উৎসবের আমেজ

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ উন্মুক্ত আঙ্গিনায় চলছে লাঠিখেলা। আত্মরক্ষা ও আক্রমণের কৌশল প্রদর্শন করছে নারী-পুরুষ লাঠিয়ালের দল। চারপাশ ঘিরে বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী খেলাটি উপভোগ করছেন অসংখ্য দর্শক। সেই দৃশ্য পেরিয়ে সামনে এলে চোখে পড়ে বই বিতানে পাঠকের ভিড়। বাংলাদেশসহ বিশ্ব সাহিত্যের আলোড়ন তোলা বইগুলো সংগ্রহ করছেন বইপ্রেমীরা। এমন সুন্দরের দৃশ্যের মাঝে আবির্ভূত হয়ে মা ও মেয়ে বিষয়ে ভারতীয় লেখিকা ও অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীর চলে মুক্ত আলোচনা। এভাবেই শুক্রবার ছুটির দিনে জমাট রূপে ধরা দেয় ঢাকা লিট ফেস্ট। উৎসব আঙ্গিনা বাংলা একাডেমির নানা প্রান্তে ছড়িয়েছে প্রাণের স্পন্দন। সাহিত্য ও শিল্পপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে আন্তর্জাতিক এ সাহিত্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনটি। সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয়ে রাত আটটা পর্যন্ত চলেছে আলোচনাসহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সাহিত্যের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে সমাজ, রাজনীতি, ধর্ম, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, ইতিহাসসহ নানা বিষয়। শ্রোতা-দর্শককে আনন্দ দিয়েছে সিরীয় বংশোদ্ভূত কবি আদোনিসের কবিতাপাঠ, অস্কারজয়ী অভিনেত্রী টিন্ডা সুইন্টনের আলোচনা, ম্যান বুকারজয়ী নাইজিরিয়ার বেন ওকরির সাহিত্যবিষয়ক আলোচনা, ছিল হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্রজীবনের গল্প। সব মিলিয়ে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩৮ অধিবেশন। শুক্রবার সকালে কীর্তনের সুরে শুরু হয় ঢাকা লিট ফেস্ট। একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে পরিবেশিত হয়েছে রায়েরবাজার মন্দিরের মহাপ্রভু সংঘের ভক্তিমূলক কীর্তন। কীর্তনের সুর থামতেই শুরু বিষয়ভিত্তিক আলোচনাপর্ব। আজ শনিবার উৎসবের শেষ দিনে ব্রিটিশ সাহিত্য জার্নাল ‘গ্রান্টা’র মোড়ক উন্মোচন হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার সম্মানজনক সাহিত্য পুরস্কার ‘ডিএসসি পুরস্কার’ প্রদান ছাড়াও থাকবে ৩৭ অধিবেশন। আলাপচারিতায় টিল্ডা সুইন্টন ‘পারফরমেন্স এজ অথরশিপ’ শিরোনামের অধিবেশনে অংশ নিয়েছিলেন অস্কারজয়ী ব্রিটিশ অভিনেত্রী টিল্ডা সুইন্টন। এই অভিনেত্রীর আরেক পরিচয় হচ্ছে লেখক। শিল্পীর চেয়ে লেখিকার পরিচয়কে বেশি আপন করে নিয়েছেন তিনি। তাই তো দুই সত্তাকে এক করে টিল্ডা বলেন, আমি মঞ্চ থেকে উঠে এসেছি, সিনেমাতেও অভিনয় করেছি। কিন্তু লেখালেখির ভুবনে আমি নিজেকে খুঁজে পেয়েছি। নিজেকে লেখক হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি ভালোবাসি। অভিনয় জীবন সম্পর্কে টিল্ডা বলেন, আমি পারফর্ম করতে ভালবাসি, আর এটাই আমার অভিনয় জীবনের আসল কথা। মঞ্চে বলুন বা সিনেমাতে, আমি যেকোন চরিত্রের ভেতরে এতই ডুবে থাকতে ভালবাসি, বাস্তব সত্তাই ভুলে বসি। সত্যি বলি, আমি এখন অবধি যেসব সিনেমাতে অভিনয় করেছি, তৃপ্ত হইনি। আমি এখনও মনের মতো চরিত্র খুঁজে ফিরি। চরিত্রের মধ্য দিয়ে আমি মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চাই। তরুণ লেখকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কখনও লেখালেখি বন্ধ করো না। লেখালেখির মাঝেই নিজেকে খুঁজে পেয়েছি, পেয়েছি জীবনের ছন্দ। আমার জীবনের লক্ষ্যই লেখালেখি করব। লেখালেখির মতো আর কিছুতেই এত আনন্দ পাই না। আলাপের এক পর্যায়ে রসিকতা করে টিল্ডা জানান, জার্মানিতে স্থায়ী হলে তিনি নাকি পেশাদার ডাকাত হতেন! অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন উৎসব পরিচালক আহসান আকবর। নন্দনা সেনের মা ও মেয়ে বিষয়ক কথন এদিন সকালে একাডেমির বর্ধমান হাউসসংলগ্ন লনে অনুষ্ঠিত হয় মা ও মেয়ে শীর্ষক অধিবেশন। এ বিষয়ে কথা বলেছেন ভারতের খ্যাতনামা অভিনেত্রী, লেখক ও শিশু অধিকারকর্মী নন্দনা সেন। তার আরেক পরিচয় হচ্ছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মেয়ে। মা ভারতীয় কবি ও লেখক নবনীতা দেবসেন। প্রাণবন্ত এ আলোচনাপর্বের সঞ্চালনা করেন দেশের নামী অভিনয়শিল্পী সারা যাকের। নিজের লেখক হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে নন্দনা সেন বলেন, আমার পরিবারের সবাই লেখক। বাবা-মা দু’জনই লেখালেখি করেন। বিশেষ করে আমার মা নবনীতা দেবসেন ও নানী রাধা-রাণী দেবীর মধ্যে লেখালেখির বিষয়টি জড়িয়ে আছে তাদের অস্থিমজ্জায়। সেই ধারাবাহিকতায় শিল্পের পথ পেরিয়ে আমিও প্রবেশ করেছি সাহিত্যের আঙ্গিনায়। কথা বলার এক পর্যায়ে মা নবনীতা দেবসেনের কবিতাকে কণ্ঠে তুলে নেন মেয়ে নন্দনা সেন। উপস্থিত শ্রোতা-দর্শককে মুগ্ধ করা ‘জিওল’ নামে পঠিত কবিতার লাইনগুলো ছিল এরকমÑ মনে হয় টুকরো ফেলি/কৈ মাছের মতো লাফায় জিওল জীবন। মায়ের সঙ্গে নিজের ভবিষ্যত কর্মসূচী প্রসঙ্গে নন্দনা সেন বলেন, আমরা দুজন মিলে ‘মাদার টাং’ নামের একটি বই লিখছি। আমাদের পারিবারিক ইতিহাস উঠে আসবে এ বইয়ে। এক মলাটের ভেতর পাঠক খুঁজে পাবে তিন প্রজন্মের বৃত্তান্ত। মেয়ের সঙ্গে থাকবে তার মা ও নানির জীবনের নানা বিষয়। মায়ের সঙ্গে নিজের বোঝাপড়া প্রসঙ্গে নন্দনা সেন বলেন, আমাদের দুজনার সম্পর্কটা বন্ধুর মতো। তাই জীবনের যে কোন অভিজ্ঞতার কথা বিনিময় করতে পারি মায়ের সঙ্গে। শিশু অধিকারকর্মী হিসেবে নিজের কর্মকা- তুলে ধরে বলেন, শিশু যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে কাজ করছি। এ পর্যন্ত আমি ভারতের ৪০০ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদী হওয়ার কথা বলেছি। আর শিশুদের ওপর এ ধরনের নির্যাতন বন্ধ করতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করা । চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদ দুপুরে লিট ফেস্টের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ছিল ‘চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন’ শিরোনামে আলোচনা পর্ব। চিত্রনায়ক রিয়াজের সঞ্চালনায় হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, চলচ্চিত্র পরিচালক মতিন রহমান ও চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান আলোচনা করেন। রিয়াজ বলেন, হুমায়ূন আহমেদের গল্পকে চমৎকার সুতায় গাঁথার ক্ষমতা ছিল। তার লেখায় বৃষ্টি, চাঁদ, জোছনার উপস্থিতিই বলে দেয়, এগুলোর সঙ্গে তার প্রেমের কথা। ভবিষ্যতে হয়তো কেউ হুমায়ূন আহমেদকে পাঠ করবেন, তাকে নিয়ে গবেষণা করবেন, একেকজন একেকভাবে তাকে ব্যাখ্যা করবেন। তার অপেক্ষায় থাকলাম। মেহের আফরোজ শাওন বলেন, তার আটটি চলচ্চিত্রের পাঁচটিতে আমি প্রধান চরিত্রে কাজ করেছি। তার গল্পগুলো এমন ছিল যে, তার পাঠকরা চরিত্রগুলোর মধ্যে নিজেদের তুলে ধরতেন। আমি প্রথমে ছিলাম হুমায়ূন পাঠক, পরে হয়েছি হুমায়ূন চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী। তিনি যখন চলচ্চিত্র বানিয়েছেন তিনি সহজভাবে গল্প বলে গিয়েছেন। সবসময় গল্প লিখেছেন দর্শকের চোখে। আমরা সেটাকে সচরাচর ধারা কিংবা ব্যতিক্রম ধারা বলতে পারি না। আমরা বলতে পারি, এটা হুমায়ূন আহমেদের নিজস্ব ধারা। দ্বিতীয় দিনের অন্যান্য অধিবেশন আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘ফ্রম জানাদু টু নাইন লাইফস’ শীর্ষক অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের লেখক সাজিয়া ওমরের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডালরিম্পল। কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে ‘অক্ষর ও অঙ্ক’ শীর্ষক অধিবেশনে ভারতীয় সাহিত্যিক গার্গি চট্টোপাধ্যায়ের সঞ্চালনায় অংশ নেন মৌসুমী ব্যানার্জি। ভাস্কর নভেরা প্রদর্শনীলয়ে ‘ক্রিটিকাল মুসলিম : লঞ্চ অব বাংলাদেশ ইস্যু’ শীর্ষক অধিবেশনে পাকিস্তানের আমির হুসাইনের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন কবি কায়সার হক, মারিয়া চৌধুরী, রাজিব রহমান ও সর্বরী আহমেদ। কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে ‘এন এ্যান্ড দ্যা বিগ হুম’ শীর্ষক অধিবেশনে সাহাদাত জাহানের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন পেঙ্গুইন ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা জেরি পিন্টো। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ‘মাদার এ্যান্ড ডটার’ শীর্ষক অধিবেশনে সারা যাকেরের সঞ্চালনায় ভারতীয় অভিনেত্রী নন্দনা সেন। দুপুর সাড়ে বারোটায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘পারফরমেন্স এস অথারশিপ’ শীর্ষক অধিবেশনে আলোচনা করেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী টিল্ডা সুইন্টন। এ অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন উৎসব পরিচালক কবি আহসান আকবার। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ছিল ‘চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন’ শীর্ষক অধিবেশন। যাতে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র নিয়ে কথা বলেন চলচ্চিত্র পরিচালক মতিন রহমান, হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন এবং চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান। সঞ্চালনায় ছিলেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। ভাস্কর নভেরা প্রদর্শনীলয়ে ‘প্রকাশনা-একাল সেকাল’ শীর্ষক অধিবেশনে ফিরোজ আহমেদের সঞ্চালনায় অংশ নেন দিপঙ্কর দাস, রাজীব চে ও সৈয়দ জাকির হোসাইন। দুপুর দুইটায় কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে ‘মেমোরিস অব এ পাবলিশার্স’ শীর্ষক অধিবেশনে ইউপিএলের পরিচালক মাহ্্রুখ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন বিশে^র সবচেয়ে বড় প্রকাশনা পেঙ্গুইন র‌্যান্ডম হাউসের সদ্য সাবেক প্রধান জন ম্যাকিনসন। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ‘# মিটু’ শীর্ষক অধিবেশনে জ্যোতি মালহোত্রার সঞ্চালনায় আলোচনা করেন সাবিনা ফয়েজ রশিদ, সামিয়া জামান, সোফি ওয়াকার ও বাচি কাকারিয়া। ভাস্কর নভেরা প্রদর্শনীলয়ে ‘সম্পর্কের এপার ওপার’ শীর্ষক অধিবেশনে আহমেদ রেজার সঞ্চালনায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যিক জহুর সেন মজুমদার, কথাসাহিত্যিক শাহিন আখতার ও কবি সাজ্জাদ শরীফ। বিকেল সোয়া তিনটায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘দ্য ফেমিসেড রোড’ শীর্ষক অধিবেশনে জেরি পিন্টোর সঞ্চালনায় আলোচনা করেন ম্যান বুকারজয়ী নাইজেরীয় কথাসাহিত্যিক বেন ওকরি। বিকেল সাড়ে চারটায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ছিল ‘হারস্টোরিজ : হোমগ্রো সুপারগার্লস শীর্ষক অধিবেশনে সেতু সবুরের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন মাবিয়া আক্তার, মাদিয়া মোরশেদ, নাঈমা হক, এভারেস্টজয়ী প্রথম বাংলাদেশী নারী নিশাত মজুমদার ও তামান্না-ই-লুৎফি। এ সময় ‘হারস্টোরিজ : হোমগ্রো সুপারগার্লস’ শিরোনামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে ‘ইনট্যানজিবল’ শীর্ষক অধিবেশনে সুপ্রভা তাসনিমের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদ ও অনন্যা কবির। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ছিল সিরিয়ান বংশোদ্ভূত কবি আদোনিসের একক আবৃত্তি। ঢাকা লিট ফেস্টের পরিচালক সাদাফ সায্্ের সঞ্চালনায় আদোনিস তার প্রিয় কবিতাগুলো পাঠ করে শোনান। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ছিল ‘স্যাডো ওয়ার্ল্ড’ প্রামাণ্যচিত্রের দক্ষিণ এশিয়া প্রিমিয়ার। আন্ড্রু ফেইনস্টেনের আলোচিত গ্রন্থ ‘দ্যা স্যাডো ওয়ার্ল্ড : ইনসাইড গ্লোবাল আর্মস ট্রেড’ অবলম্বনে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রটির ওপরে শুরুতেই আলোচনা করেন আনাদিল হোসেন। পরে আলোচনা করেন বইটির লেখক আন্ড্রু ফেইনস্টেইন ও ডোমিনিক জেইগলার। কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে ‘টেস্পোরারি পিপল’ শীর্ষক অধিবেশনে রিফাত মুনীমের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন দীপক উন্নিকৃষ্ণাণ ও আন্ড্রে নাফিস-সাহলি। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ছিল কবিতার পাঠের আয়োজন- ‘বাংলার মুখ ২’। যাতে কবিতা আবৃত্তি করেন জাহিদুল হক, মুহম্মদ সাদিক প্রমুখ। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা লিট ফেস্টের দ্বিতীয় দিনে ছিল বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সকালে কসমিক টেন্টে শিশুদের ‘তোতন মামার ম্যাজিক খেলা’ গল্প শুনিয়েছেন নাজিয়া জেবিন । বিকেলে একই স্থানে আট বছরের ছোট বাচ্চাদের ‘মাম্বি এ্যান্ড নট ইয়েট!’ শীর্ষক এ অধিবেশনে বাচ্চাদের সঙ্গে আলাপ আর খেলায় মেতে উঠেন ভারতীয় অভিনেত্রী নন্দনা সেন। নজরুল মঞ্চে ছিল সকালে ছিল বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ লাঠিয়াল দল অংশ নেন মেয়েদের লাঠি খেলা। নাট্যদল বটতলা পরিবেশন করে সুকুমার রায়ের নাটক। কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বাচ্চাদের শোনান ‘সাত ভাই চম্পা ও অন্যান্য গল্প’। আরও ছিল নজরুল মঞ্চে মুস্তফা মনোয়ারের পরিচালনায় পুতুল নাচ এবং অজিত রায় সরকার এবং নির্মল চন্দ্র রায় সরকার ও দলের কবিগান। এবারের উৎসবে প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে থাকছে এনার্জিস, গোল্ড স্পন্সর মীনা বাজার, প্রিমিয়ার পার্টনার ইন্ডিয়ান হাই কমিশন, স্ট্রাটেজিক পার্টনার ব্রিটিশ কাউন্সিল। আজকের আয়োজন ॥ আজ শনিবার উৎসবের শেষ দিন। এদিন ব্রিটিশ সাহিত্য জার্নাল ‘গ্রান্টা’র মোড়ক উন্মোচন হবে। এর বাইরে দক্ষিণ এশিয়ার সম্মানজনক সাহিত্য পুরস্কার ‘ডিএসসি পুরস্কার’ প্রদান ছাড়াও থাকছে নানা বিষয়ভিত্তিক ৩৭টি অধিবেশন। উৎসব আয়োজকনের তথ্য ॥ সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ঢাকা লিট ফেস্টের আয়োজক যাত্রিক। উৎসব পরিচালনা করছেন কথাসাহিত্যিক কাজী আনিস আহমেদ, কবি সাদাফ সায্্ সিদ্দিকী ও কবি আহসান আকবার। এবারের উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে থাকছে ঢাকা ট্রিবিউন ও বাংলা ট্রিবিউন, সহ-পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
×