ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে মাকে মেয়ে ধরা প্রচার করে গণধোলাই

প্রকাশিত: ০১:৫১, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

বরিশালে মাকে মেয়ে ধরা প্রচার করে গণধোলাই

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ দাম্পত্য কলহের জেরধরে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছ থেকে তার দুইবছরের একমাত্র কন্যা সন্তানকে ছিনিয়ে এনেছিলো শ্বাশুড়ি। শুক্রবার সকালে মেয়েকে নিতে এসে গণধোলাইর শিকার হয়েছেন মাসহ চারজন। মসজিদের মাইকে মেয়ে ধরা প্রচার করে গ্রামবাসীকে জড়োকরে এ হামলা চালানো হয়। হামলার সময় প্রবাসীর স্ত্রীর চুল কেটে দিয়েছে তার শ্বাশুড়ি সালেহা বেগম। পরবর্তীতে গণধোলাইর শিকার ওই চারজনকে থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হয়। বর্তমানে পুলিশ পাহারায় আহত চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত মেদাকুল গ্রামের। জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত সাদেক মাতুব্বরের পুত্র কুয়েত প্রবাসী টিটন মাতুব্বরের সাথে তিনবছর পূর্বে পাশ্ববর্তী কালকিনি উপজেলার চরফতে গ্রামের কুয়েত প্রবাসী চুন্নু বেপারীর কন্যা হাসি বেগমের সাথে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে তাহিরা নামের দুইবছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। হাসি বেগম জানান, বিয়ের পর তার স্বামী কর্মস্থল কুয়েতে যাওয়ার পর তার (স্বামী) পরামর্শেই তিনি তার বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। অতিসম্প্রতি তাদের দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়ায় গত পাঁচদিন পূর্বে তার শাশুড়ি সালেহা বেগম কৌশলে শিশু তাহিরাকে নিয়ে পালিয়ে আসে। হাসি বেগম আরও জানান, শুক্রবার সকালে তিনি তার ফুফাতো ভাই ইসমাইল হোসেনসহ তাদের নিকট আত্মীয় তানভির আহমেদ, সাকিল হোসেন ও সোহেলকে নিয়ে একটি মাহেন্দ্রাযোগে স্বামীর বাড়িতে এসে মেয়ে তাহিরাকে দেখতে চান। এসময় বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বাড়ির পাশ্ববর্তী মসজিদের মাইকে মেয়ে ধরা প্রচার করে গ্রামবাসীকে জড়ো করে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় তিনি (হাসি বেগম) সহ তার ফুফাতো ভাই ইসমাইল হোসেন, তানভির আহমেদ, সাকিল হোসেন ও সোহেল গুরুতর আহত হন। একপর্যায়ে তাদের আটক করে গৌরনদী থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। প্রবাসীর স্ত্রী হাসি বেগম বলেন, এ সুযোগে আমার শ্বাশুড়ি সালেহা বেগম জোরকরে আমার মাথার চুল কেটে দেয়। হামলায় আহত ইসমাইল হোসেন বলেন, হামলাকারীরা আমাদের চারজনের সাথে থাকা চারটি দামি মোবাইল ফোন, ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার ও নগদ ১৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়েছে। এছাড়াও আমাদের বহনকারী মাহেন্দ্রটি ব্যাপক ভাংচুর করেছে। গৌরনদী মডেল থানার এএসআই মোঃ মিরাজ হোসেন জানান, খবর পেয়ে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আটককৃত হাসি বেগমসহ ইসমাইল হোসেন, তানভির আহমেদ, সাকিল হোসেন ও সোহেলকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। থানার বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি ধামাচাঁপা দেয়ার জন্য স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় ব্যক্তি মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত (শুক্রবার সন্ধ্যা পাঁচটা) হামলায় আহত চারজন পুলিশ পাহারায় গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
×