ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএল আইকনদের বেহাল দশা!

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

বিপিএল আইকনদের বেহাল দশা!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ব্যর্থতা তাহলে ক্রিকেটারদের গায়ে ভালভাবেই লেগেছে। বিশেষ করে আইকনদের গায়ে। তা না হলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) পঞ্চম আসরে এবার সাত দলে সাত আইকন ক্রিকেটার আছেন, কিন্তু তাদের অবস্থা এত বেহাল কেন? নৈপুণ্য বলতে একেবারেই নেই। ঢাকা ডায়নামাইটসের আইকন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের আইকন ওপেনার তামিম ইকবাল। খুলনা টাইটান্সের আইকন অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। রাজশাহী কিংসের আইকন মুশফিকুর রহীম। রংপুর রাইডার্সের আইকন মাশরাফি বিন মর্তুজা। চিটাগং ভাইকিংসের আইকন সৌম্য সরকার। সিলেট সিক্সার্সের আইকন সাব্বির রহমান। এ আইকনদের মধ্যে সৌম্য ও সাব্বির পঞ্চাশ লাখ টাকার নিচে দাম পাচ্ছেন। বাকি আইকনরা ৫০ লাখ টাকার উর্ধে পাচ্ছেন। কিন্তু কারও কাছ থেকেই এখন পর্যন্ত বিশেষ কোন নৈপুণ্যের দেখা মিলেনি। সাকিবকে বলা হয় টি২০ ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা। দেশের একমাত্র ক্রিকেটার যিনি বিশ্বের সব দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ লীগে খেলেন। নৈপুণ্যও দেখান। কিন্তু নিজ দেশের বিপিএলে এবার নিষ্প্রভ হয়ে আছেন সাকিব। ঢাকার হয়ে চার ম্যাচ এরই মধ্যে খেলে ফেলেছেন। কিন্তু ব্যাট হাতে সেরা বিশে তো নেই-ই (২০.৬৬ গড়ে ৬২ রান), বল হাতেও একই দুর্দশা (৩ উইকেট)। অথচ প্রথম দুই আসরের লীগ সেরা ছিলেন সাকিবই। এই ক্রিকেটার এবার নিজেকে মেলেই ধরতে পারছেন না। সাকিব সবসময়ই বিশ্বের সব টি২০ লীগগুলোতে খেলার সুযোগ পান। সেই সুযোগ এখন পাচ্ছেন তামিম ইকবালও। কিন্তু বিপিএলে তামিমও নীরব। এর পেছনে অবশ্য কারণও আছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে ইনজুরি নিয়ে ফিরেছেন। এরপর সর্বশেষ একটি ম্যাচই খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তাতে ৪ রানের বেশি করতেও পারেননি। তামিম ইনজুরির জন্য খেলতে পারেননি। বাকি আইকনরা কিন্তু ঠিকই প্রতিটি ম্যাচই খেলছেন। দল যে কয়টা ম্যাচ খেলেছে, আইকনরাও সেই কয়টা ম্যাচই খেলেছেন। কিন্তু ব্যর্থতা সঙ্গী হচ্ছে। খুুুলনার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদই এর মধ্যে একটু ব্যতিক্রম। আইকনদের মধ্যে ব্যাটিংয়ে তিনিই সবার শীর্ষে আছেন। তাও খুব ভাল অবস্থা নয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত লীগের ১৪ ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সিলেট সিক্সার্সের উপুল থারাঙ্গা যেখানে ৫ ম্যাচ খেলে ১৯৭ রান করে শীর্ষে আছেন, সেখানে মাহমুদুল্লাহ ৪ ম্যাচে ৮৫ রানের বেশি করতে পারেননি। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অবস্থানও ১৬ নম্বরে! আর বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে অবস্থান ১৯ নম্বরে। রাজশাহীর মুশফিককে দেশের সেরা ব্যাটসম্যান ভাবা হয়। কিন্তু তিনি ব্যাট হাতে হতাশই করছেন। এমনই বেহাল দশা তার সেরা ৪০ ব্যাটসম্যানের মধ্যেও জায়গা হয়নি! ৪ ম্যাচ খেলে যে মাত্র ৩৮ রান করতে পেরেছেন। তাতে কি আর সামনের দিকে জায়গা হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকছে। কোনভাবেই নয়। সামনের ম্যাচগুলোতে এখন মুশফিক কি করেন তাই দেখার অপেক্ষায় থাকতে হবে। রংপুরের মাশরাফির অবস্থা তো আরও বেহাল। যদি উইকেট শিকারির দিক দিয়ে হিসেব করা হয় তাহলে মাশরাফির অবস্থান তলানিতে (২ উইকেট)। তবে ১২ ওভার করে যে ৭৩ রান দিয়েছেন সেটি প্রশংসা পেতে পারে। তবে যেখানে ঢাকার আবু হায়দার রনি সর্বোচ্চ ৭ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছেন, সেখানে অভিজ্ঞ মাশরাফির মাত্র ২ উইকেট পাওয়াটা একটু দুর্বল নৈপুণ্যেরই প্রমাণ দিচ্ছে। দলও কিন্তু ৩ ম্যাচের মধ্যে ১টির বেশি ম্যাচ জিততে পারেনি। চিটাগংয়ের সৌম্য ও সিলেটের সাব্বিরও কিন্তু ব্যর্থতার মাঝেই আছে। সৌম্য ৪ ম্যাচে ৭৫ রান ও সাব্বির ৫ ম্যাচে মাত্র ২২ রান করেছেন। কী বেহাল দশা! সৌম্য ও সাব্বিরকে টি২০ স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানই ধরা হয়। কারণ তারা শট খেলতে পছন্দ করেন। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি২০ যে কোন ফরমেটের খেলাতেই তারা শট খেলেই রান নেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ব্যর্থতার পর বিপিএলেও সেই ধারা থেকে যাচ্ছে। শুধু সৌম্য, সাব্বিরের বেলাতেই নয়, সব আইকনই ব্যর্থতার মধ্যেই আছেন। বেহাল দশা যাচ্ছে আইকনদের।
×