ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৫২ বছর পর খুলনা কলকাতা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

৫২ বছর পর খুলনা কলকাতা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর ও খুলনা অফিস ॥ দীর্ঘ ৫২ বছর পর বহুল প্রতীক্ষিত ও আকাক্সিক্ষত খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলো। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেন দুপুর সাড়ে ১২টায় ৫৩ জন যাত্রী নিয়ে খুলনা স্টেশনে পৌঁছায়। এর পর ট্রেনটি দুপুর পৌনে ২টায় ২৫৩ জন যাত্রী নিয়ে খুলনা স্টেশন থেকে কলকাতার উদ্দেশে ফিরে যায়। এ সময় খুলনা রেলস্টেশনে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এ ট্রেনের যাত্রী হয়ে খুলনা রেলস্টেশন থেকে বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেন। এ ট্রেনে তিনি যশোর স্টেশন পর্যন্ত যান। যাত্রার শুরুতে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ট্রেন চালুর মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটবে। রোগী ও বৃদ্ধদের যাতায়াতে সুবিধা হবে। অসুস্থ ও বৃদ্ধদের ভিসা সহজ করা হবে। সরাসরি ট্রেন চালুর ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগও অনেকটা কমবে। এর আগে ভারতীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে) কলকাতা থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে আসে বন্ধন এক্সপ্রেস। ৫৩ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি খুলনায় এসেছে বলে খুলনা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার (গ্রেড-১) মানিক চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন। খুলনা রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান টিকেট বুকিং সহকারী মোঃ মেহেদী হাসান সোহাগ বলেন, যাত্রীদের অগ্রিম টিকেটসহ তিন শতাধিক টিকেট বিক্রি হয়। বৃহস্পতিবার ২৫৩ জন টিকেটধারী যাত্রী বন্ধন এক্সপ্রেসে খুলনা থেকে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তিনি বলেন, এক মাস আগে ভারত গমনেচ্ছু যাত্রীরা টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। টিকেট গ্রহণকালে যাত্রীদের ভারতে যাওয়ার ভিসাসংবলিত পাসর্পোট দেখাতে হবে। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, খুলনা-কলকাতা ১৭৫ কিলোমিটার এ রেলপথের বন্ধন এক্সপ্রেসে মোট ১০টি কোচ রয়েছে। এর মধ্যে ইঞ্জিন ও পাওয়ারকার দুটি। বাকি ৮টি কোচ যাত্রীদের জন্য, যেখানে ৪৫৬টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আসনের ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে এসি (কেবিন) ১৪৪ এবং ৩১২টি এসি চেয়ার। যাত্রী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি সিট দুই হাজার টাকা আর এসি চেয়ার কোচের ভাড়া ধরা হয়েছে দেড় হাজার টাকা। খুলনা থেকে কলকাতায় যেতে কাস্টমস-ইমিগ্রেশনসহ প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা সময় লাগবে বন্ধনের যাত্রীদের। আপাতত সপ্তাহে একদিন (বৃহস্পতিবার) বন্ধন ট্রেনটি কলকাতা-খুলনা যাতায়াত করবে। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনামল থেকে খুলনা ও কলকাতার মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এ রেল যোগাযোগ। এর পর গত ৯ নবেম্বর ঢাকা থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দিল্লী থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কলকাতা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুইচ টিপে বন্ধন এক্সপ্রেসের পরীক্ষামূলক যাত্রার সূচনা করেন।
×