ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্যমূল্য দাবিতে মানববন্ধনে হামলা ॥ আহত ১০

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্যমূল্য দাবিতে মানববন্ধনে হামলা ॥ আহত ১০

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম, ১৬ নবেম্বর ॥ মীরসরাইয়ে দেশের সর্ববৃহৎ শিল্প জোনের জন্য সম্প্রতি নতুন করে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে নতুন এই অধিগ্রহণের কার্যক্রমের ক্ষতির সম্মুখীন কয়েক হাজার কৃষক ও জমির মালিক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এদিকে মানববন্ধনকারীদের ওপর স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মীরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তফার কর্মী- সমর্থকরা মারধর করে বলে অভিযোগ করে হামলায় আহতরা। এসময় মানববন্ধনকারীদের ৪টি ব্যানার ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা । বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় ইছাখালী ইউনিয়নের শিল্প জোন এলাকায় সড়কের ধারে মানববন্ধন পালন করা হয়। এসময় স্থানীয় জমির মালিক কৃষকসহ শতাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও মীরসরাইয়ের এমপি গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন স্পষ্ট বলেছেন কৃষিজমিতে কোন প্রকার শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হবে না। দেশের বৃহত্তম এই শিল্প জোনের জন্য ৩ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। ইতোপূর্বে ৫ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বাকি জমি অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত আরও জমি রয়েছে। কিন্তু সেখানে অধিগ্রহণ না করে পার্শ¦বর্তী পূর্ব ইছাখালী এবং পশ্চিম ইছাখালী মৌজার প্রায় ১২ হাজার একর সম্পূর্ণ ধানী এবং মৎস্য উৎপাদিত জমি অধিগ্রহণের জন্য স্থানীয় জমির মালিকদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। এতে জমি অধিগ্রহণের যে সরকারী মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে কৃষকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অভিযোগ করেন। স্থানীয় জমির মালিক জয়নাল আবেদীন সেলিম, নুরুল আমিন ডিপটি, আবুল কাশেম, ফয়েজ আহম্মদ, রেজা মিয়া, বামন সুন্দর কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মজিবুল হক বলেন, সরকারী মৌজাপ্রতি মূল্যের চেয়ে স্থানীয়ভাবে ক্রয়-বিক্রয়কৃত জমির মূল্যে অনেক ব্যবধান। সরকারী মূল্যে প্রতি শতাংশ জমি ১১ হাজার ৫শ’ টাকা। কিন্তু স্থানীয় মূল্য প্রতি শতাংশ এখন প্রায় ১ লাখ টাকা। যা সরকারী মূল্যের চাইতে অনেক কম। এছাড়াও তারা অভিযোগ করে বলেন, সরকার ঢালাওভাবে জমির শ্রেণীবিন্যাস না করে গড়হারে মনগড়া এবং নামমাত্র মূল্য নির্ধারণ করেছে। সরকার ১৯৮২ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী জমির মূল্য নির্ধারণ করেছে। আমাদের দাবি, বর্তমানে ২০১৭ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিবে হবে। এছাড়া সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগণ সরেজমিনে জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে প্রত্যেকটা জমির শ্রেণীবিন্যাস করে (নাল, খাই, পুকুর, দোকান এবং অন্যান্য স্থাপনার) নির্ধারণ করে জমির শ্রেণি অনুযায়ী সরকারী এবং স্থানীয় মূল্যের সমহারে নির্ধারণ করলে আমরা জমি দিতে আগ্রহী। অন্যথায় আমরা একখ- জমিও দেব না। এ বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কায়সার খসরু বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদনের বিষয়টি আমরা বেজা চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করব। এ বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল কবির বলেন, জমির মালিকরা আমাদের কাছে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তাদের দাবি উপস্থাপন করলে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করব।
×